উখিয়ার পাথুরে বীচ ইনানী এখন অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে। উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও অভিযান শেষ করে আসতে না আসতে আবার রাতারাতি অস্থায়ী স্থাপনা নিমার্ণ করে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সৈকতে অবাধে চলাফেরায় মারাতœক বাধাঁ সৃষ্টি করছে। এ ব্যবসাকে পুঁজি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ফলে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকার রাজস্ব।
সরেজমিন, দেখা যায় ইনানী সৈকতের প্রধান পয়েন্ট দিয়ে প্রায় শতাধিক অবৈধ ঝুঁপড়ি স্থাপন করে বীচ কর্মী বেলাল ও তার তিন সহযোগী মিলে প্রতি ঝুঁপড়ি থেকে দৈনিক ২শ’ টাকা হারে ভাড়া আদায় করে। ইনানী বীচ ঘুরে এসে কোথাও ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও বীচ কর্মীদের দেখা মিলেনি। ফলে দেশিবিদেশী পর্যটকরা নিরাপত্তা নিয়ে সংকিত রয়েছে। ঢাকা মতিঝিল থেকে আগত নব দম্পতি সোহাগ ও নাজমা বলেন, নিরাপত্তা ও গাড়ী পার্কিংয়ের সু-ব্যবস্থা না থাকায় বীচ ও আশাপাশে চলাফেরা চরম ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা।
ইনানী বীচের পান ব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম বলেন, আমার কাছে দৈনিক ২০০ টাকা চাঁদা দাবী করে বীচকর্মী বেলাল। নিজেকে উপস্থাপন করে আমি এই বীচের ডিসি এসপি। আমাকে যে ব্যবসায়ীরা টাকা দিবে না তাকে বীচ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে উঠে যেতে হবে। এভাবে নিজ দায়িত্ব পালন না করে হাকাঁবকা করে চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত থাকে বেলাল।
ইনানী বীচের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কাসেম, আবুল বশর , মহিউদ্দিন, আলম, নুরুল আমিন, আজিজুল হক, খায়রুল আমিন, বাবুলসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বড় ইনানী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে বেলাল জেলা প্রশাসনের নিয়োগপ্রাপ্ত সাধারণ একজন বীচকর্মী। ইনানী সমুদ্র সৈকত এলাকায় পর্যটকদের সেবার জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার মতো আরো দুইজন বীচকর্মী সেখানে কর্মরত রয়েছে। কিন্তু বেলাল নিজ দায়িত্ব পালন না করে জড়িয়ে গেছে চাঁদাবাজিতে। প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে প্রতিদিন আদায় করছে গণহারে চাঁদা। বেলালের চাঁদাবাজী ও নির্যাতনে অতীষ্ট স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকেরা। তাছাড়া ইনানী বীচ এলাকায় তার নিজের অধীনে রয়েছে বেশ কয়েকটি দোকান। তৎমধ্যে একটি দোকান বন বিভাগের জমিতে নির্মিত বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। জানা গেছে, তার সাথে স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তার সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক। তবে বন বিভাগের ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর আহমদ জানান, তিনি বেলালের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এদিকে বীচের পশ্চিম পার্শ্বে গায়ের জোরে ঝুঁঁপড়ি দোকান বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিক পরিচয় নামধারী জাহাঙ্গীর নামের অসাধু ব্যবসায়ী।
সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের উখিয়া উপজেলা সভাপতি ও কবি আদিল উদ্দিন চৌধূরী বলেন, ইনানী বীচের সৌর্ন্দয্য রক্ষা করা প্রতিটি সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব। ইনানী বীচকে পুঁজি করে যারা সৈকতের সৌর্ন্দয্য নষ্ট করছে এবং রাষ্ট্রের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, যারা অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে অবাধে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যাপারে শীঘ্রই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।