বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনকে কে না চেনে? কিন্তু আরও অনেক মানুষের মত এই বিখ্যাত মানুষটির জীবনেও রয়েছে এমন অনেক ব্যাপার যেগুলো জানেন না বেশিরভাগ মানুষই। নিজের নানারকম তত্ত্ব আর আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত চমকে দিয়েছেন আইনস্টাইন পৃথিবীর মানুষকে। কিন্তু তার জীবনের গভীরে গেলে খুঁজে পাওয়া যায় এরকম আরও চমক। আসুন জেনে নিই এই বিখ্যাত মানুষটির জীবনের এমন কিছু অজানা কথা।
আপেক্ষিক তত্ত্ব চুরি:
আইনস্টাইনের নাম উচ্চারণ করলেই যে ব্যাপারটি মাথায় আসে সেটি হল আপেক্ষিক তত্ত্ব। কিন্তু আপনি কি জানেন এ তত্ত্বের মালিকানা নিয়ে বেশ কাঁদা ছোড়াছুড়ি হয়েছিল আইনস্টাইন আর ডেভিড হিলবার্টের মধ্যে। সত্যি বলতে গেলে ডেভিড হিলবার্ট আইনস্টাইনের পাঁচদিন আগে এই তত্ত্বটি জমা দেন। কিন্তু সেখানে কিছু ত্রুটি থাকায় সেটা ঠিকঠাক করতে সময় লেগে যায় তার। এই ফাঁকে আপেক্ষিক তত্বের পুরো কৃতিত্ব চলে যায় আইনস্টাইনের ঝুলিতে। যদিও অনেকে মনে করেন দুই বিজ্ঞানীই নিজেদের মতো করে একই সময়ে কাজ শুরু করেছিলেন তত্ত্বটি নিয়ে। সে ক্ষেত্রে কাউকেই ঠিক চুরির দায়ে দায়ী করা ঠিক নয়।
ফেল করেননি আইনস্টাইন:
বিখ্যাতরা পরীক্ষায় ভালো না ফল করেননি এমন যাদের নাম আমরা সামনে নিয়ে আসি তাদের মধ্যে অন্যতম আইনস্টাইন। কিন্তু বাস্তবতা হলো কখনোই স্কুলে ফেল করেননি এই বিজ্ঞানী। বলতে গেলে অত্যন্ত ভালো ছাত্র ছিলেন তিনি। আইনস্টাইনের জীবনে এই ফেল করার গল্পটি মূলত চালু হয় সুইস আর জার্মান বিদ্যালয়ের ভেতরকার নম্বরের পার্থক্যের জন্য। ১-৬ মার্কসের ভেতর ‘১’ কে জার্মান স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর ধরা হত। কিন্তু সুইস বিদ্যালয়ে সেটা হয়ে দাড়ায় ‘৬’ এবং ‘১’কে ধরা হয় সর্বনিন্ম নাম্বার।
রাশিয়ার গুপ্তচর:
শুনলে অবাক হবেন যে আইনস্টাইনকে গুয়েন্দা সংস্থা এফবিআই রাশিয়ার গুপ্তচর বলে মনে করত। ১৯৩৩ সালে আমেরিকায় ঢোকার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এফবিআই’র নজরে ছিলেন আইনস্টাইন। তার চলাফেরা, কথা-বার্তা সবকিছুর উপরই ছিল কড়া নজরদারি। প্রায়ই ফোন ঘাঁটা হত এই বিজ্ঞানীর। প্রবেশের পর থেকে এমন ব্যবহার পেয়ে একটা সময় রেগে যান আইনস্টাইন। সাফ জানিয়ে দেন যে এমনটা তিনি মোটেই সহ্য করবেন না। এরপর তিনি আমেরিকার নাগরিকত্বও পান।
আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক:
আইনস্টাইন মারা যাওয়ার পর প্রিন্সটন হাসপাতালের প্যাথলজিস্ট থমাস হার্ভে তার মস্তিষ্ক বের করে নেন। পরে নিজের কাছেই রেখে দেন এটি। তাকে এই কাজের জন্য হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হলেও তিনি এই বিখ্যাত বিজ্ঞানীর মস্তিষ্ক হাতছাড়া করেননি। সেটিকে নিয়েই তিনি দেশের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ান। প্রায় ২০০টি খণ্ড করেছিলেন তিনি আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের। যার এক টুকরো দান করেছিলেন। আর অন্যগুলো পরে ফেরত দিয়েছিলেন প্রিন্সটন হাসপাতালে।
তথ্যসূত্র- Things You Probably Didn’t Know About Albert Einstein