কক্সবাজারে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। জেলার সব বাজারের ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের পলিথিন ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। পলিথিনের সহজলভ্যতা, সচেতনতার অভাব ও আইন প্রয়োগে দুর্বলতার কারণে এর ব্যবহার দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ীরা পলিথিন ব্যবহারের কারণ হিসেবে বলছেন, পলিথিন ব্যাগ অত্যন্ত সহজলভ্য। অন্যদিকে বিকল্প ব্যাগের সরবরাহ কম ও দাম বেশি। ক্রেতারা বলছেন, অন্য ব্যাগের চেয়ে পলিথিনে পণ্য পরিবহন করা সহজ। বিশেষজ্ঞরা পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও এ বিষয়ে সংশ্ল্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
কাঁচাবাজারে দেখা গেছে, এখানে মাছ-মাংস, আটা-ময়দা,শাক-সবজিসহ প্রতিটি পণ্য বহনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার করছেন। বামন্দী বাজার অন্য একাধিক বাজার ঘুরেও পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের একই চিত্র দেখা গেছে।
পলিথিন ব্যহারকারী বাজারের কাচা মাল ব্যবসায়ী বলেন, ঝাল বা পিয়াজ পলিথিন ছাড়া পরিবহন করা কষ্টকর। আবার প্রচলিত চট বা নেটের ব্যাগ এ ধরণের পণ্য নেয়ার জন্য উপযুক্তও নয়। অন্যদিকে একটি চটের ব্যাগের দাম প্রায় দশ টাকা। কিছুদিন পর আবার এ ব্যাগ পচে যায়। তাই ক্রেতারা পলিথিন ব্যাগেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। উল্লেখ্য, সরকার ২০০২ সালে ১০০ মাইক্রোনের কম পুরুত্বের পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। বিভিন্ন রকম খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ শিল্পসহ মোট ১৪টি পণ্যে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাজারের বেশ কিছু এলাকাতে বর্তমানে অনেকগুলো অবৈধ পলিথিন ব্যাগ বিক্রির দোকান রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানের মালিক জানান, প্রতি সপ্তাহে পলিথিন ক্রয়করে এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে খুচরা মূল্য বিক্রয় করে । প্রায় প্রতিটি দোকানে পলিথিনের প্রচুর মজুদ দেখা গেছে। এসব এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন।
পলিথিন ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্ন সাইজের ১ হাজারের পলিথিন ব্যাগের পাইকারি দাম ৪৫-৯০ টাকা। পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতি সপ্তাহেই নিষিদ্ধ পলিথিন আটক ও কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান (মোবাইল কোর্ট) পরিচালিত হচ্ছে। গত এক বছরে পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা ও তাৎক্ষণিক জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু তাতে অবস্থার উন্নতি হয়নি। পলিথিন উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, মজুদ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য
প্রদর্শন, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন করলে জরিমানা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা এবং অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদানের নিয়ম আছে বলে তিনি জানান।