জলদস্যুদের কাছে আটক ফিশিংবোট মাঝি-চালকরা তিনদিনেও ছাড়া পায়নি। জিম্মিদশা থেকে তাদেরকে উদ্ধারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কোন সহায়তা পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ ওঠেছে। বন্দি মাঝি-চালকদের আহার না দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব নির্যাতনের শব্দ মোবাইলে স্বজনদের শুনিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণের দরকষাকষি করছে জলদস্যুবাহিনী।
তীরে ফিরে আসা মৎস্য শিকারী ও বোটমালিকেরা জানিয়েছেন খুলনার সুন্দরবনের পশ্চিম হাঁড়িতে গত মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র জলদস্যুরা কুতুবদিয়ার ১২টিসহ অন্যান্য এলাকার প্রায় ৩০টি ফিশিংবোটের শতাধিক মাঝি ও ড্রাইভারকে ধরে নিয়ে গেছে। তৎমধ্যে কুতুবদিয়ার ১৮জন রয়েছে বলে শেষ খবরে জানা গেছে।
ঘটনার সাথে জড়িত জলদস্যুরা ‘রামপাল’ এলাকার মাস্টার ও হালিম বাহিনীর বলে জানা যায়। তারা মালামাল লুটের চেয়ে মাঝি-মাল্লা ধরে নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের পথ বেছে নিয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের সাথে কুতুবদিয়াসহ উপকূলীয় এলাকার বহু জলদস্যুদের ঘনিষ্ট যোগসূত্র রয়েছে।
অপরদিকে গভীর সমুদ্র এলাকায় ঘটনার অজুহাত দেখিয়ে আইন প্রয়োগকারী এজেন্সীগুলো কোন সহায়তা করছে না। জলদস্যুরা অজ্ঞাতস্থান থেকে মোবাইল ফোনে জনপ্রতি ২০ লাখ থেকে সরে এসে বর্তমানে ১০/১২ লাখ মুক্তিপণের দাবীতে অনড় বলে মৎস্যজীবিরা জানিয়েছেন। ‘নির্ধারিত অঙ্কের চাঁদা না দিলে কোন বোট সাগরে নামতে পারবেনা বলে হুমকি দিচ্ছে জলদস্যুবাহিনী। সমুদ্ররক্ষীদের আসকারা ও জলদস্যুদের মোটা অঙ্কের চাঁদার ভয়ে অনেক মৎস্যজীবি পিক্ আওয়ারে সাগরে যেতে ভীত-সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে।
বন্দী মাঝি-মাল্লারা হলেন কুতুবদিয়ার বড়ঘোপের হাজী ছাবের কোম্পানীর ২টি বোটের আফজল ও মাহবুবুল হক। একই এলাকার আবদুর রশীদ বইল্যা কোম্পানীর ১টি বোটের জিয়াউল হক ও গিয়াস উদ্দিন। সত্য বহদ্দারের ২টি বোটের আজলা দাশ ও আনন্দ দাশ। দিদার কোম্পানীর ১টি বোটের মাঝি কালা সোনা। বিবিসেন কোম্পানীর একটি বোটের মাঝি আদিনাথ দাশ প্রকাশ গুরা বুইজ্যা। ইসমাঈল কোম্পানীর একটি বোটের মাঝি কালু, ইউনুছ ও মনসুর। আলী আকবর ডেইল কুমিরার ছড়ার রতœসেন কোম্পানীর ২টি বোটের নুর হুছাইন, সুজন, সাজু, সুভাষ ও ওসমান। একই এলাকার শেখ কামালের ১টি বোটের নাসির ও লেডু। আলমগীর কোম্পানীর ১টি বোটের রহিম ও মিন্টু জলদাশ। একই এলাকার ফরিদ কোম্পানীর বোটকে ধাওয়া করলেও ধরতে পারেনি বলে জানান বোটের মাঝি-মাল্লা আবুল কালাম। সাগরে মৎস্য আহরণ পেশায় কোটি কোটি টাকার পূঁজি বিনিয়োগ করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় বলে অভিযোগ করেন ফিশিংবোট মালিক সমিতির অন্যতম নেতা হাজী ছাবের আহমদ কোম্পানী ও জয়নাল আবেদীন কোম্পানীসহ অনেকে।
ঘটনা সম্পর্কে অবগত হলেও তাদের উদ্ধারের বিষয়ে তিনি কিছুই করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন থানা ওসি এ.এস.থোয়াই।