1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
আপনার প্রতিবেশীকে কতটা চেনেন? - Daily Cox's Bazar News
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

আপনার প্রতিবেশীকে কতটা চেনেন?

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬
  • ২০৭ বার পড়া হয়েছে

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনিস পারভেজ থাকেন রাজধানীর ধানমন্ডির ১৪ নম্বর সড়কে। প্রায় সাত বছর ধরে তিনি একই বাসায় থাকলেও পুরো অ্যাপার্টমেন্টের একটি বাসাতেই কেবল তাঁর যাওয়া-আসা আছে। অথচ ভবনটিতে মোট ৪৮টি পরিবারের বসবাস। গুটি কয়েক লোকের সঙ্গেই পরিচয়, জানালেন আনিস পারভেজ। ভবনের বেশির ভাগ লোককে তিনি চেনেন না। এমনকি তাদের সঙ্গে ভবনের বাইরে দেখা হলে তিনি তাদের চিনতে পারবেন না।
কেবল আনিস পারভেজ নন, নগরের বেশির ভাগ মানুষই তাঁদের প্রতিবেশীকে চেনেন না। রিনা আলম (ছদ্মনাম) সিদ্ধেশ্বরীতে থাকেন। কয়েক দিন আগে বাসায় একটি বিয়ের আমন্ত্রণপত্র আসে। ঠিকানা দেওয়া আছে তাঁরই ভবনের, সঙ্গে ফ্ল্যাট নম্বরও আছে। জেনেছেন প্রতিবেশীর কাছ থেকে এসেছে। কিন্তু তিনি তাঁদের চেনেন না। কখনো নাকি আলাপই হয়নি। এমনকি দেখা হয়েছে কি না, তা-ও মনে করতে পারেননি। এ কারণে তিনি সেই বিয়েতেই যাননি। রিনা আলম বলেন, ‘যেহেতু আমি তাদের চিনি না, তাই বিয়েতে গিয়ে কোনো বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চাইনি।’ সঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘বাড়িওয়ালা তাঁর ভাড়াটেদের চিনলেও আমরা প্রতিবেশীরা একে অন্যকে চিনি না।’
এই যুগে ক্যারিয়ার, পরিবার আর নিজের উন্নতি নিয়ে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন প্রতিবেশীর খোঁজ রাখাটা একটু কঠিনই বটে। এমনকি প্রতিবেশীর সঙ্গে যোগাযোগের ধরনও বদলে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে যোগাযোগ হয়ই না, চেনাজানা তো দূরের কথা। তবে এখন নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থেই প্রতিবেশীকে জানতে হবে। নিতে হবে কিছু ব্যক্তিগত উদ্যোগ। না হয় পড়তে পারেন কোনো বিপদে অথবা জড়িয়ে যেতে পারেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলায়।
.চায়ের দোকান থেকে অফিসের মিটিং—সবখানেই এখন এক আলোচনা। গুলশান-শোলাকিয়ার সন্ত্রাসী হামলা আর জঙ্গিবাদ। সারা দেশের মানুষই একধরনের আতঙ্কে আছেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আপনি হয়তো হঠাৎ জানলেন আপনার পাশেই এতদিন থাকতেন একজন সন্ত্রাসী—সে আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো আপনার সব প্রতিবেশীকে চেনেন কি না, কিংবা তাদের সম্পর্কে জানেনই বা কতটুকু। এই যে বিচ্ছিন্নতা, তা থেকেই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। কেউ কারও খোঁজ রাখে না বলে তাঁরা নির্বিঘ্নে প্রতিবেশী হয়ে থেকে যায়।
একটা সময় ছিল, যখন প্রতিবেশীদের সঙ্গে সবার সুসম্পর্কই ছিল। বিপদে-আপদে একে অন্যকে জড়িয়ে থাকত। শুধু বিয়ে বা জন্মদিন নয়, প্রতিবেশীদের বাদ দিয়ে বিকেলটাও যেন কাটত না। আর ছাদ থেকে কাপড় তুলতে গিয়ে আড্ডাটা ছিল নির্ধারিত। খাবার বিনিময় ছিল অলিখিত প্রথা। এমনকি রান্না করতে গিয়ে কিছু দরকার হলেও প্রতিবেশীর বাসা থেকেই পেঁয়াজ, মরিচ বা তেলটা আনা–নেওয়া করা হতো। একক বা নিউক্লিয়ার পরিবারের এই সময়ে সে সব ফুরিয়েছে। তাই দরকার বাড়তি উদ্যোগ।
অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা যাতে নিজেদের চিনতে পারেন সে জন্য অনেক অ্যাপার্টমেন্টের পরিচালনা কমিটি নানা আয়োজন করে থকে। ধানমন্ডি ৭ নম্বর সড়কের ওরিয়েন্টাল নিরালা হাউসের অ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য আতাম হোসাইন চৌধুরী বললেন, ‘অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা যাতে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে সে জন্য পয়লা বৈশাখ, ঈদের পরে—এ রকম বছরে দুই-তিনবার পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য থাকে সবার মধ্যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য বাড়ানো।’
আবার এর উল্টোটাও দেখা যায়। ধানমন্ডি ১৪ নম্বর সড়কের পিস ভ্যালির ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য আরকান আলী খান বলেন, তাঁদের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে ভাড়াটেদের জন্য কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় না। তবে প্রয়োজনে সদস্যরা সভা করেন। মিরপুরের পল্লবী এলাকার এক বাড়ির মালিক মজিদ সরদার বলেন, রোজার মাসে তিনি সবার বাসায় ইফতারি পাঠিয়ে থাকেন।
ভার্চ্যুয়াল জগতে যোগাযোগ বাড়লেও বাস্তবে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যাচ্ছে। জীবনযাপন ব্যক্তিকেন্দ্রিক। গ্রামে কিছুটা থাকলেও নগরে প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক দূরের কথা, সামাজিক সম্পর্ক নেই বললেই চলে। রিয়াজ হোসেন দুই বছর হলো থাকেন মিরপুরের শেওড়াপাড়ার এক বাড়িতে। তিনি তাঁর পাশের ফ্ল্যাটেও কখনো যাননি। তবে সিঁড়িতে মাঝেমধ্যে তাদের সঙ্গে দেখা হয়। বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারে থাকেন রেশমা আহমেদ। তিনি কেবল তাঁর পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীদেরই চেনেন। রেশমা বলেন, ‘সবাই এত ব্যস্ত থাকে যে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ করা হয়ে ওঠে না।’ একেবারে উল্টো অভিজ্ঞতা মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনির বাসিন্দা শিউলি আক্তারের। তিনি তাঁর ভবনের সবাইকে তো চেনেনই। কলোনির অনেকের সঙ্গেই তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। উদ্ধার করা হচ্ছে জঙ্গিবাদ সম্পর্কে বিভিন্ন বই, বোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি, চাপাতিসহ নানা অস্ত্রশস্ত্র। জঙ্গি বা সন্ত্রাসী সন্দেহে আটক করা হচ্ছে বাড়ির মালিক, পাশের বাসার বাসিন্দাদেরও। তাই প্রতিবেশী সম্পর্কে সতর্ক না হয়ে উপায় নেই। কারণ, এতে যে কেবল সন্ত্রাসী বা জঙ্গি আটক হচ্ছে তা-ই নয়, সন্দেহভাজন হিসেবে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিও আটক হচ্ছে।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় জড়িত নিবরাস ইসলাম প্রায় মাস চারেক ঝিনাইদহ শহরে ছিলেন। অথচ তাঁর সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তিনি যে বাড়িতে বসবাস করতেন, সেই বাড়ির মালিকের স্ত্রী। তিনি বলেন, ভাড়াটেদের সঙ্গে তাঁদের তেমন যোগাযোগ ছিল না। এমনকি প্রতিবেশীরাও তেমন কিছু জানতেন না নিবরাস সম্পর্কে। অথচ এই হামলাকে কেন্দ্র করেই ওই বাড়ির মালিকসহ তাঁর দুই ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। (সূত্র: প্রথম আলো)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ এহসান হাবিব বলেন, ‘বর্তমান সময়ের যান্ত্রিক জীবনব্যবস্থায় আমরা সকালে বের হই, রাতে ফিরে আসি। এ কারণে প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের তেমন কোনো সম্পর্ক গড়ে উঠছে না। সম্পর্কের গভীরতাও কমে যাচ্ছে। দৃষ্টি বিনিময় বা মুচকি হাসির মধ্যেই যোগাযোগ সীমাবদ্ধ। আমাদের সামাজিক কাঠামো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রতিবেশীর সঙ্গে একটি ভালো সম্পর্ক থাকা উচিত। তাদের ভালো করে জানা প্রয়োজন।’
জঙ্গিবাদকে একটি ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করেন শাহ এহসান হাবিব। তিনি বলেন, ‘নতুন প্রতিবেশী এলে তার সঙ্গে পরিচিত হওয়া, প্রতিবেশীদের সঙ্গে একটি সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তবে সে অপরাধী কি না, অথবা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত কি না, এ বিষয়কে মাথায় রেখে আলাপ করা উচিত নয়। তাতে সম্পর্ক গড়ে উঠবে না।’
আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু আলাপের সময় প্রতিবেশী যেন বুঝতে না পারে আপনি তার কাছ থেকে তথ্য বের করার জন্য আলাপ করছেন। এতে সে বিব্রত হতে পারে। এমনটাই বললেন শাহ এহসান হাবিব। যোগ করেন, ‘মনে রাখতে হবে, যারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত, তারাও বেশ সতর্ক থাকবেন। আপনি চাইলেই যে তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন, তেমনটি নয়। এ ছাড়া সে তো আপনার সঙ্গে এসব বিষয় আলাপ করবে না। বরং লুকিয়ে রাখবে।’ তবু একজন প্রতিবেশী হিসেবে উচিত তার সম্পর্কে জানা, তার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা।
সবকিছুর পরও প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে আবার সতর্কও থাকতে হবে। তার চালচলন, চলাফেরা সম্পর্কে থাকতে হবে সজাগ। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কারণে জানতে হবে প্রতিবেশী সম্পর্কে। তাই তাদের বাসায় যান। নিজের বাড়িতে দাওয়াত দিন। বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান হলে ডাকুন। বিপদ-আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করুন। তবে খেয়াল রাখবেন, যেন কোনো কিছু বাড়াবাড়ি না হয়ে যায়। স্বাভাবিক সম্পর্ক যেন বজায় থাকে। তবে কারও বিষয়ে সন্দেহজনক কিছু নজরে এলে জানাতে হবে বাড়ির মালিকসহ স্থানীয় পুলিশকে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘আশপাশের কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্ঠীর গতিবিধি ও চলাফেরা সন্দেহজনক হলে কাছের থানায় জানাতে হবে। এ ছাড়া বাড়িভাড়া দেওয়ার সময় বাড়িওয়ালাকে ভাড়াটের সব তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিস্ট থানায় জমা দিতে হবে।’
সমাজবিজ্ঞানী মো. আনোয়ার হোসেন মনে করেন, ব্যক্তিস্বাধীনতার গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমাদের সামাজিক জীবন অনেকটাই হারিয়ে গেছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে এই দূরত্ব বা বিচ্ছিন্নতার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিবেশীর দিকে আমরা খেয়াল রাখতেই পারি। অপরাধীদের আচরণ অস্বাভাবিক হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটু কৌশলী হলেই আমি যে বাড়িতে বাস করছি সেখানে অসামঞ্জস্য কোনো কিছু থাকলে কারও না কারও চোখে পড়বেই। এই সময়ে আমার সন্তান কার সঙ্গে মিশছে—এটা জানার জন্যও প্রতিবেশীকে জানা দরকার। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কারও প্রাইভেসিতে বিঘ্ন না ঘটে।’ প্রতিবেশী হলেও কারও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয়ে নাক গলানো মোটেও কাম্য নয়। সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে পাড়া বা কমিউনিটিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ধরনের আয়োজন বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications