স্বৈরাচার এলে দেশের উন্নতি হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আত্মজীবনী ‘আমার কর্ম আমার জীবন’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এরশাদ বলেন, আমি চাই, আমার মতো আরও স্বৈরাচার ক্ষমতায় আসুক। বারবার স্বৈরাচার ক্ষমতায় আসুক। এখনও তো এক ব্যক্তির শাসন চলছে। ১৬ কোটি মানুষকে একজন শাসন করছেন।
নিজের জীবনী প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, আমি যা লিখেছি, সত্য লিখেছি।
আত্মজীবনীর শুরুর দিকে আত্মপক্ষ শিরোনামে অধ্যায়ে এরশাদ বলেন, আক্ষরিক অর্থে এটি আমার আত্মজীবনী নয়, সুদীর্ঘ জীবনের খণ্ডাংশের চিত্র মাত্র। ফলাও করে প্রচার করার মতো ঘটনা আমার জীবনে অনেক ঘটেছে। কিন্তু তার সব কিছুই অর্থপূর্ণ নয়।
নিজের জীবন সম্পর্কে এরশাদ লিখেছেন, আমার এই জীবনটা যেমন দীর্ঘ ও লম্বা, ঘটনা ও অভিজ্ঞতার সঞ্চয়ের পরিমাণও তেমনি প্রচুর। পেছনে ফেলে আসা সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বিষাদ, সাফল্য-ব্যর্থতায় পূর্ণ সেসব দিনগুলোকে স্মরণ করে আজ আমি এক নির্মল সুখ অনুভব করছি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এরশাদের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন শিক্ষাবিদ মিজানুর রহমান শেলী।
আলোচনা করেন সাবেক সচিব এম মোকাম্মেল হক, মফিজুল ইসলাম, রফিকুল হক দাদু ভাই। মঞ্চের সামনের সারিতে এরশাদের ছোটভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাপার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে রওশন এরশাদসহ তার অনুসারী নেতাকর্মীদের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
এরশাদ দাবি করেন, তার সময়েই পহেলা বৈশাখে সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়। তিনিই প্রথম রাষ্ট্রনায়ক, যার আমলে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি সৈনিক ছিলাম এটা কি অপরাধ? আমি কবিতা লিখলেও সমালোচনা হয়।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ’ থেকে প্রকাশিত বইটির দাম ১২শ টাকা।
অনুষ্ঠানে সাবেক সচিব মোকাম্মেল হক বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য সামরিক শাসকদের সঙ্গে এরশাদের পার্থক্য হচ্ছে- অন্য শাসকরা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর আর সামাজিক, অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত থাকতে পারেননি। এরশাদ ব্যতিক্রম। তিনি ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর সামাজিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে মূল্যায়িত হচ্ছেন। যেখানে ইয়াহিয়া খান, আইয়ুব খান, আনোয়ার সাদাতদের পরিণতি অনেক খারাপ হয়েছে।