জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সেবক হিসাবে পরিচিত কক্সবাজারের ইনানী অরণ্যের সেই ‘অজ্ঞাতবাস স্থানের’ আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের আজ বৃহষ্পতিবার সন্মাননা জানানো হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল উখিয়া উপজেলার অরণ্যঘেরা ইনানী চেনছড়ি গ্রামে গিয়ে ১০ টি আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকের হাতে রজনী গন্ধা তুলে দিয়ে সন্মাননা জানান। বঙ্গবন্ধুর ৯৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে বৃহষ্পতিবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এই ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে উখিয়া উপজেলার সাগর পাড়ের অরণ্যঘেরা ইনানী চেংছড়ি গ্রামটি এখন ইতিহাসের অংশ। আজ থেকে প্রায় ৫৮ বছর আগে ১৯৫৮ সালে পুর্ব পাকিস্তানের নিষিদ্ধ রাজনীতির এক দুঃসময়ে পূর্ব বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানেই এসেছিলেন ‘অজ্ঞাতবাসে।’ গ্রামের আদিবাসী নেতা প্রয়াত ফেলোরাম রোয়াজা চাকমার বাগান বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এ কারণেই ইনানী চেংছড়ি গ্রামটি এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘকাল ধরে জাতির নিকট অজানা ছিল এই ইতিহাস।
এ সংক্রান্ত ইতিহাস জানাজানি হয় ২০১০ সালের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯১ তম জন্মদিনে দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ইনানীতে বঙ্গবন্ধুর অজ্ঞাতবাস’ শীর্ষক এই অজানা অধ্যায় নিয়ে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর। একই সাথে সেই দুর্গম এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত সখিনা খাতুন নামের এক শতায়ূ নারী-যিনি বঙ্গবন্ধুকে রান্না করে খাইয়েছিলেন এবং একই এলাকার আদিবাসী নেতা প্রয়াত ফেলোরাম রোয়াজা চাকমার পরিবারের কথাও আলোচনায় উঠে আসে।
আজ বঙ্গবন্ধুর ৯৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে কক্সবাজার সদর-রামু আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন এবং পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চেনছড়ি আদিবাসী পল্লীতে যান। তারা জাতির জনকের স্মৃতি বিজড়িত স্থানটি পরিদর্শন করেন।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্টজন হিসাবে পরিচিত প্রয়াত আদিবাসী নেতা ফেলোরাম চাকমার উত্তরসুরি আদিবাসী দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের জন্য এমপি কমল এক লাখ টাকার অনুদানও ঘোষণা দেন। আদিবাসীদের ৫.৫৭ একরের সরকারি খাস জমিটি অবিলম্বে ঘেরা দিয়ে সেখানে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ফলক স্থাপনের কথাও জানান জেলা প্রশাসক। এসময় অন্যান্যের মধ্যে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড. অনুপম সাহা, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈনুদ্দিন, উখিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান ও মুক্তিযোদ্ধা পরিমল বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।