ঈদগাঁও প্রতিনিধি :
কক্সবাজার সদরের জন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাঁও-গোমাতলী কবি নুরুল হুদা সড়কের ব্রীজ কালভার্ট চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। জনবহুল এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহন ও লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করছেন। প্রতিদিন ছোটখাট দূর্ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সড়কে চলাচলরত সিএনজি ড্রাইভাররা জানান খুব অল্প সময়ে ঈদগাঁও গোমাতলী সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। সড়কের পাশাপাশি ব্রীজ কালভার্টগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। এলাকাবাসিরা জানান প্রতিবর্ষায় এ সড়কের ব্রীজ কালভার্টের দু’পাশের এপ্রোচ দেয়ালের মাটি সরে যায়। যার কারণে ব্রীজগুলো সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ প্রায় ১২ কিলোমিটারের বেশি এলজিইডির এ সড়কটি দিয়ে লবণ ও চিংড়ি পরিবহন করা হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ৪ টি ব্রীজের দু’পাশের মাটি সরে গিয়ে বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তারা আরো জানান শুষ্ক মৌসুমে এসব ব্রীজ কালভার্টের দু’পাশের মাটি ভরাটের কাজ করা না হলে আগামী মৌসুমে ব্রীজগুলো সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
সরেজমিন গতকাল বুধবার সড়ক ও ব্র্রীজ এলাকা ঘুরে এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর পূর্বে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সদর কক্সবাজার এ সড়কের পাহাশিয়াখালী ব্রীজ, টেকপাড়া ব্রীজ, গোমাতলী সংযোগ ব্রীজ, পশ্চিম গোমাতলী চৌকিদার দোকানস্থ বারডইল্ল্যা ঘোনা ব্রীজ, উত্তর গোমাতলী কাটাখালী ব্রীজ বা কালভার্ট বিপুল টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন। নির্মানের কিছুদিন পর্যন্ত ব্রীজগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকলেও ঈদগাঁও গোমাতলী রাজঘাট সড়ক সম্প্রসারণ পীচ ঢালাইয়ের কাজ হলে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যান চলাচল বৃদ্ধি পায়। যানবাহন বৃদ্ধির সাথে সাথে এ সড়ক দিয়ে কোটি টাকার লবন ও চিংড়ি পরিবহন বাড়ছে। অত্যান্ত জনবহুল এ সড়কটির ব্রীজ কালভার্ট বেহাল অবস্থা হওয়ার পেছনে স্থানীয়রা চিংড়ি ঘের মালিক ও চাষীদের দুষছেন।
তাদের মতে চিংড়ি চাষীরা প্রতি বছর ঘের করে কোটি টাকা আয় করলেও পানি নিষ্কাশন করার ক্ষেত্রে তারা এসব ব্রীজ কালভার্ট ব্যবহার করে থাকেন। যার কারণে বারডইল্ল্যা ঘোনা ও কাটাখালী ব্রীজের এপ্রোচের মাটি সরে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রতিবছর মৌসুম শেষে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাঘাটের জন্য কিছু টাকা বরাদ্ধ দেন ঘের মালিকরা। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল তা যথাযথ কাজে না লাগিয়ে যাচ্ছেতাই করে সড়কের বারোটা বাজাচ্ছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ঘের মালিকরা জানান কালভার্ট ও রাস্তা নির্মাণের সময় ব্রীজের দু‘পাশের গাইড ওয়াল পর্যাপ্ত আকারে দেয়া হয়নি যার কারনে মাটি সরে যাচ্ছে। এদিকে লবণাক্ত পানিতে ব্রীজের দেয়ালেরও আস্তর খসে পড়েছে। এলাকাবাসি জানান চিংড়ি ঘের মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় মাটি ভরাট করার কথা দিয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত কেউ এক কোদাল মাটি দেয়নি। বর্তমানে ব্রীজ দু’টির উভয় পাশ সরু হয়ে গেছে। এতে করে চলাচলরত সিএনজি জীপ ও অন্যান্য যানবাহন ব্রীজ পার হতে সমস্যায় পড়ছেন।
গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল জলিল বলেন, স্টীল ব্রীজের বর্তমানে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। মাটি ভরাটের কাজ না হলে চলতি মৌসুমে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
পোকখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল্লা বীন ছৈয়দ ছিদ্দিকী জানান গোমাতলী সংযোগ ব্রীজের পশ্চিম পাশের এপ্রোচ ভেঙ্গে গেছে। চরম ঝুঁকিতে যানবাহন ও লোকজন চলাচল করছেন।