উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসীদের তান্ডব: ৯৩ টি বাড়ী ঘর ভাংচুর
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
রবিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৬
২৯৩
বার পড়া হয়েছে
উখিয়ার কুতুপালং বন ভুমির পাহাড়ে ঝুপড়ি বেধে বসবাসরত হতদরিদ্র অসহায় অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের উপর হামলা ভাংচুর লুটপাট সহ মারধর করে অরাজগ পরিস্থিতির ঘটনাকে আয়েমি জাহেলিয়াতকে হার মানিয়েছে মন্তব্য করে প্রত্যক্ষ্যদর্শী সচেতন মহল এ ঘটনার তীর্ব্র নিন্দা করে ধিক্ষার জানিয়েছেন। রবিবার বেলা ১১ টার দিকে সংগঠিত পরিকল্পিত হামলার পর থেকে বস্তির ছিন্নমূল রোহিঙ্গাদের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্টা। রেজিষ্ট্রাট ক্যাম্পের আবুল শমার নেতৃত্বে টাইগার বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালিয়ে ৯৩ টি অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের বাড়ী ঘর ভাংচুর করেছে বলে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, ২০১২ সালে সীমান্তের নাফনদী পার হয়ে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা স্ব পরিবারে অনুপ্রবেশ করে উখিয়ার কুতুপালং রেজিষ্ট্রাড রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প সংলগ্ন বন ভুমির পাহাড়ে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে তৎকালিন জেলা প্রশাসক মোঃ জয়নুল বারী বিজিবি পুলিশ ও বন কর্মীদের সহায়তায় যৌত অভিযান চালিয়ে ওই সব অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক ওই সব রোহিঙ্গাদের সরকারী বেসরকারী কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা না করার জন্য স্থানীয় এনজিও গুলোর প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন। স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাহায্য সহযোগিতা বঞ্চিত এ সব রোহিঙ্গারা তাদের পরিবার পরিজনের আহার জোগাতে দৈহিক শ্রম থেকে শুরু করে ভিক্ষাবৃত্তি সহ না না অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। লতাপাতা,জঙ্গল দিয়ে ঘেরা পলিতিনের ছাউনির নিছে রোদ বৃষ্টির মাঝখানে ক্ষুদায় যন্ত্রনা কাতর ও মানষিক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে এ সব ছন্ন ছাড়া রোহিঙ্গারা যুগ যুগ ধরে ভারসাম্যহীন জীবন যাপন করে আসলে ও দেখার কেউ ছিল না।
গতকাল রবিবার সরজমিন ঘটনাস্থল রোহিঙ্গা বস্তি ঘুরে দেখা যায়, কচি কাচা বিবস্ত্র শিশুরা প্রচন্ড শীতে কাপছে। বয়ো বৃদ্ধ নারী পুরুষ আগুন জেলে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে। দুগ্ধপোষ্য শিশুদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে। এ সময় বিদবা মুবিনা বেগম (৪০) জানায়, অবাজী এন্ডইল্লা শীতত আরা কেনে রাইত কাডাইয়ম( অর্থাৎ এ রকম শীতে আমরা ছেলে মেয়ে নিয়ে কি ভাবে রাত কাটাব। ৭ মাসের শিশুকে আচলে ঢেকে বসে থাকা গুলো বেগম (৩৫) জানায়, সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা অলে আরার ঘর দোয়ার ভাঙ্গি দিই লুটপাট গরি বেগিন নিয়ই। (অর্থাৎ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ঘর বাড়ী ভেঙ্গে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে) আনরেজিষ্ট্রাট ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা অভিযোগ করে বলেন, ডাকাত আবুল শমা, আবু তৈয়ব, নুরুল ইসলাম, আবু ছৈয়দ, আবু তাহের সহ একদল নিবন্ধিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ঝুঁপড়ি নির্মান করে রোহিঙ্গাদের ২০/ ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে দখল বিক্রি করে আসছে। ওই সব রোহিঙ্গারা খেলার মাঠ দখল মুক্ত করার অজুহাতে বস্তির রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ী ভাংচুর করেছে। । স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, নিবন্ধিত রোিিহঙ্গাদের সংরক্ষিত বিশাল একটি খেলার মাঠ থাকা শর্তেও নীরহ বস্তির রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ী কেন ভাঙ্গা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। (আই এমওর কক্সবাজারস্থ ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ নুর সাংবাদিকদের জানান, বস্তির রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ী উচ্ছেদের কথা শুনেছি। সরজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্যাম্প ইনচার্জ ও কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সাথে কথা বলে ছিন্নমূল এ সব রোহিঙ্গাদের কি করা যায় তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আজ সোমবার কুতুপালং বস্তি পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মাহমুদুল হকের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।