উখিয়া উপজেলার প্রতিটি কেজি স্কুল গুলোতে কারিকুলাম বহির্ভূত বাংলা ইংরেজি ও ব্যাকরণসহ অতিরিক্ত পাঠ্যবই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বাড়তি জ্ঞানার্জনের অজুহাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের সন্তানদের ওপর অতিরিক্ত পাঠ্যবইয়ের চাপে একদিকে যেমন শিশুদের মেধাবিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অন্যদিকে অনেকগুলো বই প্রতিদিন ব্যাগে করে নিতে হওয়ায় তাদের ঘাড়ে ব্যাথাসহ শারিরীক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকার নিয়ম করে দিয়েছে প্রাথমিক স্তরে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত আলাদা কোনো ব্যাকরণ বই থাকবে না। কিন্তু মুনাফালোভীদের কাছ থেকে নামমাত্র কমিশন গ্রহণের মাধ্যমে সরকারের এই আইন লঙ্ঘন করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক স্তরে অতিরিক্ত বই না দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষাক্রম ২০১২-তে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত আলাদা কোনো ব্যাকরণ বই থাকবে না। শিক্ষার্থীকে কোনো রকম ব্যাকরণগত সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ মুখস্ত করতে দেওয়া কাম্য নয়। অথচ কেজি টুতে বর্তমানে রয়েছে ১১ টি পাঠ্যবই। স্কুলের রুটিন অনুসারে কেজি- টুতে ১১ টি বইয়ের মধ্যে রয়েছে,আমার বাংলা বই,হিউম্যান বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা, প্রাথমিক গণিত, ন্যাশনাল জ্যামিতি শিক্ষা, ইংলিশ ফর-টুডে, এ্যাডভান্স ইংলিশ গ্রামার,একটিভ ইংলিশ বুক, একটিভ ইংলিশ ওয়ার্ড বুক, এসো সাধারণ জ্ঞান পড়ি, এসো ছবি আঁকি ও রং করি এবং ছোটমণিদের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা। এর সাথে প্রতি বিষয়ের বাড়ির কাজের জন্য খাতা ও স্কুল নির্ধারিত ডায়েরি ব্যাগে করে নিতে হওয়ায় ছোট্র সোনামণিদের ঘাড়ে ব্যাথা হচ্ছে বলে একাধিক অভিভাবক এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্যদের তুলনায় নিজের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এগিয়ে রাখতে ব্যাকরণসহ এতগুলো বই দেয়া হয়েছে। তবে সচেতন অভিভাবকরা জানিয়েছেন, এক ধরণের বই – বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতেই বিদ্যালয় গুলো শিক্ষার্থীদের বাধ্য করছে বাড়তি বই কিনতে।শিক্ষাবিদ মোস্তাক আহমদ বলেন, শিশুদের ওপর বাড়তি বই আমি ভালো চোখে দেখি না। যে প্রকাশনা বইগুলো ছাপে তাদের এজেন্ট লাইব্রেরী মালিকদের সাথে স্কুলগুলোর লেনদেনের ব্যাপার থাকে। শিক্ষাবিদ ও বঙ্গমাতা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, বাচ্চাদের ওপর জ্ঞানার্জনের নামে বাড়তি চাপ কখনই সঠিক না। যারা এসব বইয়ের ব্যবসা করে তারাই একটা বড় অংকের কমিশনের মাধ্যমে স্কুলগুলোর সাথে চুক্তি করে থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও এই সুযোগটা নিচ্ছে। এর ফলে একটা বাচ্চার কোনো বেনিফিট তো হয়-ই-না, প্রকারান্তরে ক্ষতি হয়। এক প্রকার বাধ্য হয়েই অভিভাবকরা কিনে দিচ্ছেন এসব বই।