উখিয়ার বালুখালীর পানবাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনায় প্রায ২০ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে ১ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার সীমান্ত ঘেষা পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীতে প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র বর্তমান ইউপি সদস্য আওয়ামীলীগ নেতা ফজল কাদের ভূট্রো ও যুবলীগ নেতা ইয়াবা গডফাদার বকতার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড করে দু’পক্ষ এলাকায় তাদের এলাকার জনগনকে নিজেদের আয়াত্তে আনতে সংগঠিত করে আসছিল। ভূট্রো গ্রুপের বিরুদ্ধে যেমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে, তেমনি ভাবে ইয়াবা বকতার গ্রুপের বিরুদ্ধেও রয়েছে ইয়াবা সিন্ডিকেট করার অভিযোগ। গত শনিবারের ঘটনা সম্প্রতি ইয়াবা ব্যবসা সক্রান্ত বিষয় নিয়ে খুন হওয়া ভ’লুর পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর অভিমত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত রাত ৮ টার দিকে। উখিয়া থেকে কাজ শেষে ফজল কাদের ভুট্রো বালুখালী পানবাজার এলাকার একটি চায়ের দোকানে চা খেতে বসে, তার সাথে ছিল সাবেক মেম্বার মৌলভী গফুর উল্লাহ ও মাষ্টার শফি। এ সময় পিছন উতপেতে থাকা বকতার গ্রুপের নাজমুল আলম (২৫) ফজল কাদের ভূট্রোকে লাঠি দিয়ে উপর্যপুরী আঘাত করতে থাকতে থাকে। লাঠির আঘাতে ভূট্রো মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নাজমুল আলম পালিয়ে যায়। ভূট্রো গুরুতর আহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রুপের শত শত কর্মী লাঠি, দা, কিরিচ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। বকতার গ্রুপের কর্মীরও দা, কিরিচ, বল্লম, হকিস্টিক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। বাঁধে দু’পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ। এ সময় গুলির শব্দও শুনা গেছে বলে অনেকে দাবী করেছেন। ঘট্যাব্যাপী চলা সংঘর্ষের সময় এলাকায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দুপাশে আটকা পড়ে শ,শ যানবাহক। এ সময় উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ফজল কাদের ভূট্রো গ্রুপের ভুট্রো (৪০), বকতার গ্রুপের বকতার (৩৭), বকতারের পিতা হাজী আবদুল মজিদ (৬৫), বকতারের ভাই জাহাঙ্গীর (২৭), আবু তাহের (৩৫), মোহাম্মদ সিদ্দিক (৪৬), মুফিদুল আলম (২৫) মুফিজুর রহমান (৪০) গোলাম কাদের (৪৮), হেলাল (৩০), ছদর উদ্দিন (৩৫), ফকর উদ্দিন (৩৮), জসিম (৩০), সুলতান আহমদ (৩৯) নাজমুল আলম (২৫), নজির হোসেন (৩০), নুরুল আবছার চৌধুরী (৩৫), মুজিবুল হক চৌধুরী (৪০) প্রমুখ।
আহতদের কক্সবাজার হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে বকতারের পিতা হাজী আবদুল মজিদের অবস্থা আশংকাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ফজল কাদের ভূট্রোর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মেম্বার হিসেবে এলাকায় ইয়াবা বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারনে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বালুখালী এলাকার ইয়াবা সম্রাট খ্যাত বকতার ও তার লালিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তার উপর হামলা করেছে। তাকে লক্ষ্য করে গুলিও করা হয়েছে বলে ভূট্রো দাবী করেন। অপরপক্ষে যোগাযোগ করা হলে বকতার আহমদ জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসী ভূট্রো বাহিনীর লোকজন আমার লোকজনের উপর হামলা চালায়।
এ বিয়য়ে জানান জন্য উখিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্ত্র করে মেম্বার ভুট্রো ও বকতারের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।