উখিয়ায় বিতর্কিত রহস্যময়ী মাদ্রাসা নিয়ে গ্রামবাসি মুখোমুখি অবস্থান করছে। প্রশাসনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি ওই রহস্যময়ী মাদ্রাসা কার্যক্রম ধর্মীয় নিয়মের বাহিরে সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালিত হওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের সাথে মতবিরোধ সৃষ্টি হয় বলে উল্লেখ করে উখিয়ার ইউএনওর নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেছেন রতপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী।
জানা গেছে, মালেশিয়া প্রবাসি ওমর আলীর ছেলে বেলাল উদ্দিন মিয়ানমার সীমান্ত ঘেষা উখিয়ার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা রত্নাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা গ্রামের করইবনিয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন দারুল হিকমা নামক মাদ্রাসা। স্বাভাবিকভাবে এলাকার জনসাধারণ ধর্মভীরু হওয়ায় মাদ্রাসার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে পাশে প্রতিষ্ঠিত করেন একটি মসজিদ। এলাকার লোকজনকে বাদ দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-শিক্ষক সংগ্রহ করে মাদ্রাসা পরিচালনা করে। প্রচলিত ধর্মীয় রীতিনীতি ব্যতিরেকে উগ্রপন্থী কায়দায় নামায পড়তে মুসল্লিদের অনেকটা বাধ্য করলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
উপজেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধি ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করে জানতে পারেন, প্রচলিত নিয়মে মসজিদে নামায ও অন্যান্য ধর্মীয় রীতিনীতি মানা হচ্ছে না। রোহিঙ্গা জঙ্গী দেলোয়ার, ফেনির মাওলানা জহির, উগ্রপন্থী বেলাল উদ্দিনের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে মাদ্রাসার কার্যক্রম এ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখে। ২৮ জানুয়ারী রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী গোপনে ও প্রকাশ্যে তদন্ত পূর্বক একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ঐ মাদ্রাসার কার্যক্রম প্রচলিত ধর্মীয় রীতিনীতির বাহিরে পরিচালিত হওয়ায় স্থানীয় জনগনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং ঐ বিতর্কিত মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেন। কিন্তু ইতিমধ্যে ঐ মাদ্রসার প্রতিষ্টাতা বেলাল উদ্দিন মালেশিয়া থেকে বর্তমানে এলাকায় অবস্থান করছেন। যার ফলে গ্রামবাসীর মধ্যে দুভাগে বিভক্ত হয়ে মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ৬ ফেব্রুয়ারী জমির মালিক আজিজুর রহমান প্রকাশ আজু ফকির এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসীদের নিয়ে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় উগ্রপন্থী বেলাল তার সহযোগি অজিউল্লাহর ছেলে হামজা মীর কাসেমের ছেলে ফরিদ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রয়োজনে গুলি করে মানুষ হত্যা করতে হলেও মসজিদের কার্যক্রম চালু রাখবে বলে হুংকার দিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও চাকবৈঠা জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসাইনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে হয়রানি করছে এবং তাকে বার্মাইয়া বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিভ্রান্তি চড়াচ্ছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির মোতাওয়াল্লি মকবুল আহমদ মুন্সি, পরিচালনা কমিটির প্রধান এম এ কামাল উদ্দিন ও সেক্রেটারী সাবের আহমদ, প্রফেসর মোজাফ্ফর আহমদ বলেন, হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসাইনকে যাচাই-বাছাই করে মসজিদে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারী চাকবৈঠা করইবনিয়া গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বেলাল ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন বলেন গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের নোটিশের মাধ্যমে তার কার্যালয়ে ডাকা হবে বলে তিনি জানান।