উখিয়ার পশ্চিম ডিগলিয়া খালের ওপর নির্মিত রাবার ড্যাম কৃষকদের উপকারে আসেনি। প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দে নির্মিত এ রাবার ড্যামটি অকার্যকর হয়ে পড়ার কারণে প্রায় ২ হাজার একর জমিতে বোরো চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে পানি ব্যবস’াপনা সমিতির নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে স’ানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
পশ্চিম ডিগলিয়া পানি ব্যবস’াপনা সমবায় সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির আর্থিক সহায়তা প্রদানের পর পশ্চিম ডিগলিয়া খালের ওপর রাবার ড্যাম বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন হয় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। সমিতির প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক কৃষক উক্ত রাবার ড্যামের পানিতে বোরো চাষাবাদ করার জন্য প্রয়োজনীয় বীজতলা রোপণ থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এ অবস’ায়, রাবার ড্যামে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা সম্ভব না হওয়ায় সেচ সংকটের আশংকা করে কৃষকদের বাধ্য হয়ে বোরো চাষ থেকে বিরত থাকতে হবে। ফলে রাবার ড্যামের আশপাশে প্রায় ২ হাজার একর জমিতে বোরো চাষাবাদ হচ্ছে না।
গত মঙ্গলবার সরেজমিন রাবার ড্যাম এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বোরো চাষের জন্য প্রস’ত রাখা হয়েছে বিপুল সংখ্যক জমিজমা। এ সময় কৃষকেরা অভিযোগ করে জানান, দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারের অনিয়মের কারণে শত শত একর জমিতে বোরো চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদার আবুল বশর জানান, শিডিউল অনুযায়ী রাবার ড্যামের কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অত্র সমিতির নিকট রাবার ড্যাম বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। রাবার ড্যামের পানিতে কিভাবে চাষাবাদ করবেন, তা তারাই আমার চাইতে ভাল জানে। এ সময় পানি ব্যবস’াপনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহে আলম জানান, শিডিউল অনুযায়ী রাবার না ফুলানের কারণে রাবার ড্যামের এ অবস’ার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো জানান, নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী রাবার ক্রয় করা হয়নি বিধায় সংশ্লিণষ্ট ঠিকাদার শিডিউল মোতাবেক রাবার ফুলাতে ব্যর্থ হয়েছেন। যে কারণে রাবার ড্যামের পানিতে বোরো চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সমিতির সভাপতি ডা. আব্দুর রহিম জানান, নীতিমালা অনুযায়ী রাবার ড্যামের স্বাভাবিক প্রবহমান পানিতে চাষাবাদ হওয়ার কথা। কিন’ এ রাবার ড্যামে তা হচ্ছে না। উপরন’ এখানে জ্বালানি তেল দিয়ে চালিত সেচ পাম্পের সাহায্যে রাবার ড্যাম থেকে পানি উত্তোলন করে জমিতে সেচ দিতে হবে। এতে কৃষকদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। যে কারণে কৃষকেরা বোরো চাষাবাদে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এম এ ছিদ্দিকের মুঠোফোন (০১৭১৫৬৭০৩৩১) নাম্বারে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।