1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
উপজাতী পল্লীতে চলছে উৎসব - Daily Cox's Bazar News
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

উপজাতী পল্লীতে চলছে উৎসব

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৬
  • ৩০৩ বার পড়া হয়েছে

coxs-boisakh-pic-2‘কাট্টোল পাগোস বিঝু এ ঝোক’থ এটির বাংলা অর্থ হলো, কাঁঠাল পাকবে চৈত্রসংক্রান্তি আসবে। উপজাতীয়দের ঐতিহ্যবাহী প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব হলো বিজু, সাংগ্রাই ও বৈসুক। বাংলা নববর্ষের বিদায় অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তিকে ঘিরে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী সপ্তাহ ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনপদে আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরই ধারাবিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় শুরু হয়েছে ‘বৈসাবি’ আয়োজন। ইতোমধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ির উপজাতী পল্লীগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ। যা ছড়িয়ে পড়ছে বাঙালিদের মাঝেও।

বুধবার ১৩ এপ্রিল সকালে উপজেলা সাংগ্রাই উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালির মাধ্যমে এ বছর উৎসবের সূচনা নয়। র‌্যালিতে অংশ নেন পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য মাষ্টার ক্যউচিং চাক, মুক্তিযোদ্ধা মংশৈপ্রু চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চোচুমং মার্মা সহ শতাধিক নেতাকর্মী। র‌্যালি শেষে বৌদ্ধ স্নান অনুষ্ঠিত হয়।

সাংগ্রাই উদযাপন পরিষদের অন্যতম নেতা ও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি চোচুমং মার্মা জানান, এ বছর মহা ধুমধামে উৎসব শুরু হয়েছে। আগামী ১৭ তারিখ জলকেলির মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। সমাপনি অনুষ্ঠানে পাহাড়ি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।

Rakin-coxপার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য মাষ্টার ক্যউচিং চাক জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত উপজাতীয় বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে আনুষ্টানিকভাবে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজাতী পল্লীতে যা প্রাণের উৎসব হিসাবে গুরুত্ব পেয়েছে।

সূত্র মতে, চাকমারা ‘বিজু’, মারমারা ‘সাংগ্রাই’ এবং ত্রিপুরারা ‘বৈসু’ বলে অভিহিত করলেও পুরো পার্বত্য জেলায় তা ‘বৈসাবি’ নামেই পরিচিত। বছরের শেষ দুদিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন, মূলত মোট তিন দিনই বর্ষবরণ উৎসব ‘বৈসাবি’ পালিত হয় তিন পার্বত্য জেলায়।

বৈসাবি, এটির প্রথম অক্ষর ‘বৈ’ দিয়ে, বৈশাখী বলা যেতে পারে। বৈ+সা+বি=বৈসাবি অর্থাৎ ‘বৈ’ মানে ‘বৈসু’থ এটি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ভাষা। ‘সা’ মানে ‘সাংগ্রাই’, এটি মারমা সম্প্রদায়ের ভাষা। ‘বি’ মানে বিজু, এটি চাকমা সম্প্রদায়ের ভাষা। সুতরাং বছরের প্রথম দিনকে ত্রিপুরা সম্প্রদায় ‘বৈসু’, মারমা সম্প্রদায় ‘সাংগ্রাই’ এবং চাকমা সম্প্রদায় ‘বিজু’ নামে অভিহিত করে থাকে।

তিন সম্প্রদায়ের উৎসবের আদ্যাক্ষর দিয়ে গঠিত হয়েছে ‘বৈসাবি’। বৈসাবি উৎসব পালনের নিয়মকানুন নিম্নরূপ :

hill-fes Rangamatiবৈসু : ত্রিপুরা সম্প্রদায় বছরের শেষ দিনের অনুষ্ঠানকে বৈসু উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারা বিজুকে তিন পর্বে ভাগ করে উৎসব পালন করে থাকে। এগুলো হলো হারি বিজু, বিষুমা বিজু ও বিসিকাতাল বিজু। এ উৎসব পালনকালীন তারা জতিভেদ, হিংসা-বিদ্বেষ সবকিছু পরিত্যাগ করে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বৈসু দিনে তারা পাচন, সেমাই, পিঠা ইত্যাদি মুখরোচক খাবারের আয়োজন করে। গরু-মহিষের অক্লান্ত পরিশ্রম দ্বারা তারা ফসলসহ নানা দ্রব্যাদি উৎপাদন করে বিধায় গরু-মহিষকে স্নান করিয়ে এদের গলায় পাহাড়ি কাঁচা ফুলের মালা পরিয়ে দেয়। ধুপ, চন্দন ও প্রদীপ জ্বেলে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এভাবে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বৈসু উৎসব বছরের শেষ দিনে মহাসমারোহে উদযাপন করে।

সাংগ্রাই : সাংগ্রাই, এটি মারমা ভাষা। মারমা সম্প্রদায় বছরের শেষ দিনে নানা অনুষ্ঠান পালন করে। যার কারণে এ দিনটিকে সাংগ্রাই নামে অভিহিত করা হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিনে সাংগ্রাই পালন করে থাকে মারমা সম্প্রদায়। সেমাই, পাচন, পিঠা এবং নানা মুখরোচক খাবারের আয়োজন করে মারমা সম্প্রদায়। একে অপরের বাড়িতে যায়, কুশল বিনিময় করে এবং আনন্দ উৎসবে মেতে থাকেন। উল্লেখ্য, মারমা সম্প্রদায়ের এ দিনের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ‘জলোৎসব’। জলকেলি দৃশ্য বেশ উপভোগ্য বলে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে উৎসবস্থলে। মারমা ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘রিলংপোয়ে’। জলখেলার জন্য এরা আগে থেকেই প্যান্ডেল তৈরি করে। ওই প্যান্ডেলে যুবক-যুবতীরা একে অপরের প্রতি জল ছিটিয়ে কাবু করার প্রতিযোগিতায় শামিল হয়। বয়স্করা এদিনে বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে ধর্মীয় রীতিনীতি মোতাবেক ধর্ম অনুশীলনে রত থাকে। শিশু-কিশোররা জল ছিটিয়ে আনন্দ-উল্লাস পালন করার পাশাপাশি দড়ি টানাটানি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার মাধ্যমে সাংগ্রাই উৎসবকে বিদায় জানায়।

বিজু : বিজু হলো চাকমা ভাষা। চাকমা সম্প্রদায় বিজু উৎসবকে তিনভাগে ভাগ করে পালন করে। বছরের শেষ অর্থাৎ চৈত্র মাসের ২৯ তারিখে ‘ফুল বিজু’, ৩০ তারিখে ‘মূল বিজু’ এবং নববর্ষের প্রথম দিনকে ‘গজ্যাপজ্যা বিজু’ নামে রকমারি উৎসব পান করে।

ফুল বিজু : ফুল বিজুর দিন ভোররাতে ঘুম থেকে ওঠে স্নান করে নানা রকমের ফুলের সন্ধানে শিশু-কিশোরের দল সবুজ পাহাড়ি গহিন অরণ্যে বিচরণ শুরু করে দেয়। ফুল সংগ্রহ শেষে এরা বাড়িতে ফিরে এসে ফুলগুলোকে চারভাগে ভাগ করে একভাগ দিয়ে নিজের মনের মতো করে ঘরবাড়ি সাজায়। দ্বিতীয় ভাগ ফুল নিয়ে বৌদ্ধবিহারে যায়। বুদ্ধের উদ্দেশে ফুল উৎসর্গ করে সমবেত প্রার্থনায় রত হয়। পঞ্চশীলে সবাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে ভিক্ষু সংঘ কর্তৃক দেয় ধর্মীয় দেশনা শ্রবণ করে। তৃতীয় ভাগ ফুল ছড়া, নদী বা পুকুরের পাড়ে পূজামন্ডপ তৈরি করে সেখানে প্রার্থনা করে যেন সারা বছর পানির ন্যায় অর্থাৎ পানি যেমন শান্তশিষ্ট, ধীরে প্রবহমান সে ধরনের জীবনযাপন সবাই যেন করতে পারে। চতুর্থভাগ ফুল, তারা প্রিয়জনকে ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ উপহার দেয় এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

hill-fesমূল বিজু : মূল বিজু হচ্ছে বিজুর প্রথম দিন। ফুল বিজুর দিনে মূল বিজুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। এদিনে ঘরের মহিলারা খুবই ব্যস্ত থাকে। ৩০-৪০, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও অধিক কাঁচা তরকারির সংমিশ্রণে পাঁচন বা ঘণ্ট তৈরি করা হয়। পাচন ছাড়াও নানা ধরনের পিঠা, পায়েস, মাছ-মাংসের আয়োজনও থাকে। বছরের ঐতিহ্য হিসেবে থাকে বিন্নি ধানের খই, নাড়–, সেমাইয়ের পাশাপাশি পাহাড়ি মদও পরিবেশন করা হয় আগত মেহমানদের। আবাল বৃদ্ধ বনিতাসহ সবাই পাড়ায় পাডায় ঘুরে বেড়ায় এবং নানা আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িঘরের দরজায়, উঠানে, গোশালায় প্রদীপ জ্বালিয়ে সবার মঙ্গল কামনা করা হয়।

গজ্যাপজ্যা বিজু : নববর্ষের প্রথম দিনকে চাকমারা গজ্যাপজ্যা বিজু হিসেবে উদযাপন করে। এদিন বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে চাকমারা বিশ্রাম করে দিন অতিবাহিত করেন। ছোটরা বড়দের নমস্কার করে এবং স্নান করিয়ে দিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে। সন্ধ্যায় সবাই স্থানীয় বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে ধর্ম অনুশীলনে মশগুল থাকে। ভিক্ষু সংঘ কর্তৃক ধর্ম দেশনা শুনে অনাগত দিন সুখে-শান্তিতে কাটানোর জন্য বিশেষ প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করে। এভাবে গজ্যাপজ্যা দিনের পরিসমাপ্তি ঘটে। পরিশেষে তারা দেশের জনগণের সুখ, শান্তি এবং দেশ সমৃদ্ধি লাভ করুক এ বিশেষ প্রার্থনায় দিনের কার্যাদির পরিসমাপ্তি ঘটায়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications