1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
এমপি বদির সাম্রাজ্যে সরকারের হানা - Daily Cox's Bazar News
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৯ অপরাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

এমপি বদির সাম্রাজ্যে সরকারের হানা

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৬
  • ৪১৭ বার পড়া হয়েছে

bodi ariaতাঁর গুণের শেষ নেই! ইয়াবা ব্যবসা-বিষয়ক তালিকার শীর্ষে থাকে তাঁর নাম; আবার সরকারি কর্মকর্তাকে পিটিয়ে সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষেও থাকেন তিনি। তিনি কক্সবাজার-৪ আসনের (উখিয়া-টেকনাফ) সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। তাঁর প্রতিপত্তির আরো এক ঘটনার সমাপ্তি হয়েছে সম্প্রতি।

সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের মামলায় কয়েক দিন জেলও খাটতে হয়েছিল তাঁকে। এমপি বদির বাবা মরহুম এজাহার আলী টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময় থেকেই এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী এই পরিবার। সেই প্রভাবশালী পরিবারের সাম্রাজ্যে হানা দিল সরকার।

আব্দুর রহমান বদির পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনরা এলাকায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে প্রায় ৩০০ একর খাসজমি দখল করে রেখেছিল। বাস্তবে ২১ বছর ধরে ওই জমি অবৈধভাবে ভোগ করেছে তারা। জমিটি (আসলে একটি ছোট্ট দ্বীপ) নিজেদের কবজায় রাখতে সব চেষ্টাই করেন তাঁর অনুসারীরা। তাঁদের পক্ষ থেকে এ জন্য দুটি রিটও করা হয়। আইনি লড়াইয়ে জিতে শেষ পর্যন্ত সরকার ওই জমি বুঝে পেয়েছে। অবসান হয়েছে ১৫ বছরের দখলদারিত্বের।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে টেকনাফ উপজেলায় ২৭১ একর আয়তনের জালিয়ার দ্বীপে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে চিংড়ি ও লবণ চাষ করে আসছিল বদির পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনরা। মেসার্স জালিয়ারদিয়া লিমিটেডের নামে সরকারের কাছ থেকে ১০ বছরের জন্য জমি ইজারা নিলেও ইজারা ফি পরিশোধ করেননি বদির অনুসারী স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। বকেয়া পরিশোধে বারবার তাগিদ দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে সরকার জমির ইজারা বাতিল করলে বদির অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দুটি রিট করেন; বাদী ছিলেন শামসুল আলম। আলী আকবর, ফিরোজ আহমেদ, খোরশেদ আলম, আবু তালেব, মোহাম্মদ আইয়ুব, আবুল কাশেমসহ অনেকে ওই জমিতে চিংড়ি ও লবণ চাষের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা বদির পরিবারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর আদালতে রিট দুটি খারিজ হয়ে যায়। ফলে জমি দখলমুক্ত করতে সরকারের সামনে আর কোনো বাধা রইল না। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় এখন স্থানীয় প্রশাসন ওই জমি ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করবে। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় প্রতীকী মূল্যে তা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) অনুকূলে বন্দোবস্ত করবে। সেখানে পর্যটনকেন্দ্র করা হবে বলে জানিয়েছেন বেজার কর্মকর্তারা।

সরকারের কয়েকটি দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, জালিয়ার দ্বীপে খাসজমি অবৈধভাবে দখল করার পেছনে আব্দুর রহমান বদি ও তাঁর অনুসারীদের ইন্ধন ছিল।

জালিয়ার দ্বীপ ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্যের চোরাচালানের রুট হিসেবেও ব্যবহার করা হয় বলে এ প্রতিবেদককে জানান একাধিক কর্মকর্তা। তাঁরা বলেন, জালিয়ার দ্বীপে যেতে নৌকা বা ট্রলারই ভরসা। মিয়ানমার থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য এনে রাখা হয় সেখানে। পরে দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয়। জালিয়ার দ্বীপে পর্যটনকেন্দ্র হলে সেটি আর মাদক চোরাচালানের রুট থাকবে না।

সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে খাসজমি দখলের যে অভিযোগ উঠেছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা। যাদের নাম এসেছে, তারা আমার অনুসারী নয়। আমি তাদের চিনি না, জানি না। একটা পক্ষ আছে, যারা সব সময় আমার বদনাম করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি জীবনে কখনো কারো এক কাঠা জমিও দখল করিনি। আমার চরিত্রের মধ্যে দখল শব্দটি নেই। বরং এমনও হয়েছে, আমি সরকারকে জমি দিয়েছি।’ জালিয়ার দ্বীপকে মাদকদ্রব্য চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অভিযোগ সঠিক নয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে মেসার্স জালিয়ারদিয়া লিমিটেডকে ১০ বছরের জন্য জালিয়ার দ্বীপ ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ইজারা ফি পরিশোধ না করেই জমি ভোগ করছিল। ছয় বছর ধরে এ অবস্থা চলার পর ২০০১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইজারা বাতিল করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইজারাগ্রহীতা রিট করলে আদালত ইজারা বাতিলের সিদ্ধান্ত সঠিক উল্লেখ করে ছয় মাসের মধ্যে বকেয়া ফি পরিশোধের নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পরিশোধ করেনি; জমির দখলও ছাড়েনি।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী এক দশক আগে যখন চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনে দায়িত্বরত ছিলেন, তখন একবার জালিয়ার দ্বীপে ঘুরতে যান। দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন তিনি। তখনই তিনি জানতে পারেন, সরকারের ওই জমি লিজ নিয়ে লবণ ও চিংড়ি চাষ করছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে দ্বীপ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করতে পারেননি তিনি।

গত বছর বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরই জালিয়ার দ্বীপের খোঁজ নেন পবন চৌধুরী। তিনি দেখতে পান, সেটি আগের মতোই আছে—এক দশক আগে যেভাবে দেখে এসেছিলেন। এরপর তিনি ওই জমি সরকারের দখলে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। গত বছরের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পরিবেশ ও বন সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদসহ ১১ জন সচিবকে তিনি জালিয়ার দ্বীপে নিয়ে যান। অনন্য সুন্দর দ্বীপ দেখে সবাই মুগ্ধ হন। দ্বীপটিকে নিয়ে তাঁর স্বপ্ন ও পরিকল্পনার কথা সচিবদের জানান পবন চৌধুরী। এরপর জমি উদ্ধারে তৎপর হয় সরকার। দুটি রিটের নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে দুটি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর রিট দুটির নিষ্পত্তি হয়।

দখলমুক্ত হওয়ায় নদীবেষ্টিত জালিয়ার দ্বীপে পর্যটন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বেজা। ইতিমধ্যে প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস লিমিটেডকে দিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষা করানো হয়েছে। বেজার কর্মকর্তারা আশা করছেন, পর্যটনকেন্দ্র হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য টেকনাফ হবে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। একদিকে মিয়ানমার, অন্যদিকে বিশাল নেটং পাহাড় (বাংলাদেশে)। বন্দরও আছে। ফলে টেকনাফ ও আশপাশের এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার বাণিজ্যেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, জালিয়ার দ্বীপকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে রিসোর্ট নির্মাণ করা হবে। কেব্ল্ কারের ব্যবস্থা করা হবে। দ্বীপে বসেই মিয়ানমারের সৌন্দর্য অবলোকন করা যাবে। তিনি বলেন, দ্বীপটি থেকে সেন্ট মার্টিনস খুব দূরে নয়। এটি অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি দ্বীপ। পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সেন্ট মার্টিনসের পাশাপাশি জালিয়ার দ্বীপেও ঘুরতে যাবে মানুষ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications