চট্টগ্রাম : সিএমপির পাহাড়তলী থানার ওসি রণজিৎ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীসহ মারধর ও ভাঙচুরের মামলা দায়ের করেছেন নুর জাহান আক্তার জুলি নামে এক নারী।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম রহমত আলীর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিএমপি কমিশনারকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার নীচে নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, নগরীর পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে আব্দুর পাড়ার বাবুল মেম্বারের বাড়ির সুলতান আহমেদ (৫০) ও ইমতিয়া আহমেদ (৩০)।
মামলার বাদি নুর জাহান আক্তার জুলি আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩/৩৫৪/৪২৭/৪৫২/৪৪৭/৪৪৮/৫০৬ ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ এনেছেন।
বিষয়টি বাংলামেইলকে নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউসন) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান।
মামলার আরজিতে বাদি উল্লেখ করেন, গত ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টার যোগশাজশে বাদির শ্লীতহানি করে এবং মারধরের পাশপাশি হত্যার হুমকি প্রদান করেন। এরআগে গত মাসে আসামি সুলতান আহমেদ ও ইমতিয়াজের সাথে বাদির পরিবারের বিরোধের জেরে আদালতে দুটি মামালা দায়ের হলে আদালত পাহাড়তলী থানার ওসিকে তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। তবে ওসি আদালতের নির্দেশ পেয়ে তদন্ত না করে আসামির পক্ষ হয়ে আদালত গিয়ে মামলা তুলে নিতে বাদিকে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জানুয়ারি বিকেলে বাদির বাড়িতে গিয়ে আসামি ওসি রণজিৎ বড়ুয়া পাঁচজন পুলিশ সদস্য নিয়ে বাদিকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য তার পরিবারকে গালিগালাজ করতে থাকনে। এসময় পুলিশের সাথে যোগদেন অন্য দুই আসামি সুলতান ও ইমতিয়াজও। এসময় এই দুই আসামি বাদির ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর করে প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করেন।
বাদি ওসির বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ করেন, ‘আসামি রণজিৎ বড়ুয়া বাদি জুলির গালে স্বজোরে কয়েকটি থাপ্পড় মারলে তার নাক ফুল পড়ে যায়। এসময় ওসি বাদির তলপেটে বুটজুতা দিয়ে লাতি মারলে বাদি সিজার অপারেশন হওয়ায় সেটি মারাত্মকভাবে জখম হয়। এমনকি বাদি জুলির স্বামী বিদেশ থাকার সুযোগে ওসি রণজিৎ বড়ুয়া তার পরণের শাড়ী ও ব্লাউজ ধরে টানা হেঁচড়া করে শ্লীতহানি করেন। এসময় বাদির ভাই ও পিতা এগিয়ে আসলে তাদেরও পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় ওসি মারধর করেন।’
এদিকে আদালতে মামলা দায়েরের আগে বাদি জুলি সিএমপির উপ কমিশনার (পশ্চিম) বরাবর এই তিন আসামির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দিয়েছিলেন গত ১৬ জানুয়ারি।
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে পাহাড়তলী থানার ওসি রণজিৎ বড়ুয়া বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি পুলিশ হিসেবে কারো পক্ষ নেয়ার সুযোগ নেই। সুলতান ও বাবুল মেম্বারের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তাদের ডাকে দুপক্ষকে সমঝোতায় বসাতে গিয়ে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। ওই দিন ১৪ জানুয়ারি আমরা দুপক্ষকে শান্ত করি। হয়তো তখন কেউ ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে।’
শ্লীলতাহানীর বিষয়ে ওসি বলেন, ‘এটি একেবারেই মিথ্য। ওই মহিলার স্বামী দেশের বাইরে থাকেন। তিনি কী রকমের ঝগড়াটে সেটি না দেখলে বুঝার উপায় নেই।’
বাংলামেইল২৪ডটকম