কক্সবাজারে সরকারের নেওয়া ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প,সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর তিনটি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে।
জানা যায়,কক্সবাজারে মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টের অগ্রগতি বিষয়ে জানা গেছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে দেড় হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। ইপিসি ঠিকাদার নিয়োগের জন্য প্রি-কোয়ালিশন (পিকিউ) আহ্বান করা হয়েছে। অন্যান্য কার্যক্রমও চলছে।
এ ছাড়া মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য একটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ব্যয় ৬০২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। তবে এ প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হতে এখনো অনেক সময়ের প্রয়োজন।
কেননা প্রকল্প অনুমোদন, ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া অন্য কোনো কাজই হয়নি। ফলে চলতি বছর এর মূল কাজ শুরু হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
অন্যদিকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনালের জন্য পেট্রোবাংলা এবং এক্সিলারেট এনার্জি লিমিটেডের মধ্যে টার্ম সিট এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে। মেট্রোলজিক্যাল ওশান স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে, যা পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া সব প্রক্রিয়া শেষ করে এফএসআরইউ স্থাপনের কার্যক্রম শেষ করা হবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। এ প্রকল্পটি মহেশখালীতে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানির জন্য টার্মিনালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। টার্মিনালটি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬-এর জুলাই মাসে। অথচ এখনো কাজই শুরু হয়নি।
অপরদিকে কক্সবাজারের সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের জন্য অর্থায়নকারী সংস্থা এখনো খুঁজে পায়নি সরকার। পায়রা বন্দরের মতোই এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথমদিকে ভারত, মালয়েশিয়া, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ আগ্রহ দেখালেও চূড়ান্তভাবে কোনো দেশই চুক্তিতে আসেনি। তবে এখন পর্যন্ত ডেনমার্ক ছাড়া যেসব দেশ কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বড় ধরনের বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে এগুলো হলো— যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, নেদারল্যান্ড ও জার্মানি। কিন্তু কোন দেশের আর্থিক সহযোগিতায় এটি তৈরি করা হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ এখন অগ্রগতির সিঁড়িতে উঠেছে। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজে কাঙ্ক্ষিত গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মোট দেশজ উত্পাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি যেমন বাড়বে, তেমনি বদলে যাবে দেশের অর্থনীতির চেহারাও। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম মনিটরিং করছে সরকার। এদিকে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন আরও দ্রুত করতে গঠন করা হচ্ছে প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফান্ড এবং সংশোধন করা হচ্ছে ভূমি সংক্রান্ত আইনও।
তবে এ বৃহৎ প্রকল্প রয়েছে সেগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।