কক্সবাজারের ৩ টি উপজেলার ১৯ ইউনিয়নের দাখিল করা প্রার্থীদের মধ্যে ২৭ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। এই ১৯ ইউনিয়নে ১৩১৭ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এমন তথ্য জানিয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফের ১১ জন, মহেশখালীর ১৩ জন এবং কুতুবদিয়ার ৩ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হল।
টেকনাফ উপজেলার ৬ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন ৩ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন টেকনাফ উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ নুরুল আবছার, টেকনাফ সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, বাহারছড়া ও সেমন্টমার্টিন ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন টেকনাফ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শামসুল আলম কুতুবী।
এ তিন কর্মকর্তা জানান, বুধবার ও মঙ্গলবার এ ৬ ইউনিয়নের মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই করা হয়। এতে টেকনাফ সদর মনোনয়ন জমাদানকারী ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এরা হলেন, বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী জিয়াউর রহমান জিহাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোক্তার আহমদ। বয়স কম থাকার কারনে জিয়াউর রহমানের ও ব্যাংক ঋন খেলাপী হওয়ায় মোক্তার আহমদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। সাধারন মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে ৭২ জনের মধ্যে ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন, বয়স কম থাকায় ৪ নং ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসাইন, ভোটার নং ভূল থাকায় ৬ নং ওয়ার্ডের আব্দুল আমিন ও প্রস্তাবকারী, সনাক্তকারী ও প্রার্থী ভোটার নম্বর ভূল থাকায় ৭ নং ওয়ার্ডের আবুল কালাম। ১১ জন সংরক্ষিত মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে দুই জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন, প্রস্তাবকারীর ভোটার নম্বর ভুল থাকায় ৪,৫ ও ৬ ওয়ার্ডের পারভিন আক্তার ও ৭,৮ ও ৯ ওয়ার্ডের খতিজা বেগমের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। হ্নীলা ইউনিয়নে সাধারন মেম্বার প্রার্থীদের মনোনয়নে বিভিন্ন সমস্যার কারণে ৪ নং ওয়ার্ডের নিগার নাসরিন এর মনোনয়ন বাতিল ঘোষনা করে একই অভিযোগে সংরক্ষিত মেম্বার প্রার্থী ১,২,৪ নং ওয়ার্ডের নুরজাহান বেগম, ৩,৫,৬ নং ওয়ার্ডের জান্নাতুল ফেরদৌস লাকী এছাড়া হোয়াইক্যং ইউনিয়নে সাধারণ মেম্বারপ্রার্থী রোশন আলী সিকদার মনোনয়নপত্র বাতিল করে সংশ্লিষ্ট যাচাই কমিটি।
মহেশখালী উপজেলার ৭ ইউনিয়নে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন ৪ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে হোয়ানক ও বড় মহেশখালী ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন মহেশখালী উপজেলার প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিয়াদুল কুদ্দুস, মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন মহেশখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশিষ চিরাণ, কালারমারছড়া ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশরার (ভূমি) নোমান হোসেন, কুতুবজোম ও ছোট মহেশাখালী ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন মহেশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুল আলম।
এ ৪ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ ৭ ইউনিয়নের ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৩ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বয়স কম হওয়ায় বড় মহেশখালীতে বিএনপি’র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন সোহাগ ও কালামার ছড়ার চেয়ারম্যার প্রার্থী সেলিম চৌধুরীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া বড় মহেশখালীতে ১ জন, কালামার ছড়ায় ৩ জন, ধলঘাটায় ৩ জন ও মাতারবাড়িতে ৩ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়।
কুতুবদিয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন ৩ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে বড়ঘোপ ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা প্রভাত বড়ুয়া, লেমশিখালী ও আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেনজির আহমদ, উত্তর ধুরুং ও দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কামাল পাশা।
এ ৩ কর্মকর্তা জানান, কুতুবদিয়ায় ৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দাখিলকৃত ৩০২ প্রার্থীর মধ্যে ২৯৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ হরেয়ছে। একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং দু‘জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ৩০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৬১ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ২০৮ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হলো।
জেলা নির্বাচন কর্মকতা মো. মেছবাহ উদ্দিন জানান, মনোনয়ন পত্র বাতিল হও্যয়া প্রার্থীরা ১ মার্চ পর্যন্ত আপিলের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীতা প্রত্যাহরের শেষ দিন ২ মার্চ, প্রতীক বরাদ্ধ ৩ মার্চ এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২২ মার্চ।