কক্সবাজারে অনুর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ নতুনরূপে সাজছে শেখ কামাল স্টেডিয়াম
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬
৫৪১
বার পড়া হয়েছে
আইসিসি অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপকে ঘিরে নতুনরূপে সাজানো হচ্ছে কক্সবাজার শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে। ইতোমধ্যে বিশাল আয়তনের নতুন একটি অনুশীলন মাঠ (প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড) নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশেই খেলোয়াড়দের জন্য নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ড্রেসিং রুম। সেটির নির্মাণ কাজও বর্তমানে প্রায় শেষ পর্যায়ে। পাশাপাশি বর্ণিল রঙে রাঙিয়ে তোলা হচ্ছে পুরো স্টেডিয়ামকে। সব মিলিয়ে এই স্টেডিয়ামে নতুন করে প্রায় ৩ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ভেন্যু ম্যানেজার আহসানুল হক বাহার জানিয়েছেন, আইসিসি অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের এগারোতম আসরের সর্বাধিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজার ভেন্যুতে। আগামী ২৭ জানুয়ারী থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই মেগা টুর্ণামেন্টকে ঘিরে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মোট ৩৬টি উইকেট, গ্যালারী ও মাঠ তৈরীর কাজ প্রায় শেষ। নতুন প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড নির্মাণের পাশাপাশি নতুন ড্রেসিং রুম নির্মাণ ও রঙের কাজ চলছে। নব নির্মিত প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে ১৮টি উইকেট থাকছে। এছাড়াও অনুশীলনের জন্য একাডেমী মাঠের পাশে আগের আরো ৬টি উইকেট রয়েছে। মূল মাঠে আগের ৫টি উইকেটের সাথে আরো ২টি নতুন উইকেট তৈরী করা হয়েছে। একাডেমী মাঠের আগের ৩টি উইকেটের সাথেও যোগ হয়েছে আরো ২টি উইকেট।
গত সোমবার দুপুরে বিশ্বকাপ আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন বিসিবি’র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। ওইসময় তারা সার্বিক প্রস্তুতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আইসিসির ম্যাচ ফিকশ্চার অনুসারে, এবার দেশের আটটি ভেন্যুতে বিশ্বকাপের ৪৮টি ম্যাচ হবে। এর মধ্যে সাগর পাড়ের কোল ঘেষে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে গড়ে তোলা কক্সবাজার ভেন্যুতে থাকছে ১৭টি ম্যাচ। গ্রুপ পর্বের ৫টি ম্যাচ এবং প্লেট পর্বের সবগুলো ম্যাচ অর্থাৎ ১২টি ম্যাচ হবে কক্সবাজারে। মূল মাঠে ম্যাচ গড়াবে ৯টি, একাডেমী মাঠে ৮টি। এই আয়োজনের মধ্য কক্সবাজার জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের একটি প্রাণের চাওয়া পূরণ হতে চলেছে। ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের পর এই টুর্ণামেন্টটিই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হতে চলেছে কক্সবাজারবাসীর জন্য।
২৭ জানুয়ারী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিন আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের জমকালো আয়োজনের পর্দা উঠবে। কক্সবাজার ভেন্যুতে প্রথম ম্যাচ হবে ২৯ জানুয়ারী। ওই ম্যাচে সফরকারী স্কটল্যান্ডের প্রতিপক্ষ হবে নামিবিয়া।
গত ৭ ডিসেম্বর বিশ্বকাপের সূচি ঘোষনা করে আইসিসি। ঘোষিত সূচি অনুসারে, মোট চারটি পর্বে বিশ্বকাপের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে। ১৬টি দেশের অংশগ্রহনে গ্রুপ পর্বে ২৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও নর্ক আউট পর্বে (প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপ, সুপার লীগ ও সুপার লীগ ফাইনাল) ২৪টি ম্যাচ হবে। বিশ্বকাপের ৫০ ওভারের সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে দিনের আলোতে। প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় ম্যাচ শুরু হবে। ১৬টি দলকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রতিটি গ্রুপের সেরা ২টি দল সুপার লিগ পর্বে এবং বাকি ২টি দল প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপ পর্বে অংশ নেবে। গ্রুপ ‘এ’তে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া। গ্রুপ ‘বি’তে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তান ও কানাডা, ‘সি’ গ্রুপে হলো ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও ফিজি এবং ‘ডি’ গ্রুপে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও নেপাল। ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ ছাড়াও এই বিশ্বকাপে আইসিসি’র ৬টি সহযোগী দেশ অংশ নিচ্ছে। দেশগুলো হলো আফগানিস্তান, কানাডা, ফিজি, নামিবিয়া, নেপাল এবং স্কটল্যান্ড।
বিশ্বকাপের ভেন্যুগুলো হলো, মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, সিলেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সিলেট জেলা স্টেডিয়াম, ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম, কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমী মাঠ। মূলপর্ব শুরুর আগে ২২ থেকে ২৫ জানুয়ারি ফতুল্লা, বিকেএসপি, জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে প্রস্তুতি ম্যাচ।
কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোর সূচি: ২৯ জানুয়ারি: স্কটল্যান্ড-নামিবিয়া (মূলমাঠ), ৩১ জানুয়ারি: বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড (মূল মাঠ), দক্ষিণ আফ্রিকা-নামিবিয়া (একাডেমী মাঠ), ২ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশ-নামিবিয়া (মূলমাঠ), দক্ষিণ আফ্রিকা-স্কটল্যান্ড (একাডেমী মাঠ)
প্লেট পর্বের সময়সূচিঃ- ৪ ফেব্রুয়ারি : প্লেট কোয়ালিফাই-১ (মূলমাঠ), প্লেট কোয়ালিফাই-৩ (একাডেমীমাঠ), ৫ ফেব্রুয়ারি : প্লেট কোয়ালিফাই-২ (মূলমাঠ), প্লেট কোয়ালিফাই-৪ (একাডেমীমাঠ), ৭ ফেব্রুয়ারি : প্লেট প্লে অফ-১ (মূলমাঠ), ৮ ফেব্রুয়ারি : প্লেট সেমিফাইনাল-১ (মূলমাঠ), প্লেট প্লে অফ-২ (একাডেমীমাঠ), ৯ ফেব্রুয়ারি : প্লেট সেমিফাইনাল-২ (একাডেমীমাঠ), ১০ ফেব্রুয়ারি : প্লেট ১৩তম স্থান নির্ধারণী (মূলমাঠ), ১১ ফেব্রুয়ারি : প্লেট ১৫তম স্থান নির্ধারণী (একাডেমীমাঠ), ১২ ফেব্রুয়ারি : প্লেট ১১তম স্থান নির্ধারণী (একাডেমীমাঠ), প্লেট ফাইনাল (মূলমাঠ)।