কক্সবাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমানের পত্রিকা ‘আজকের কক্সবাজার’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করলো আজ। পত্রিকাটির রবিবারের প্রধান প্রতিবেদন ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজ’। কেবল তাই নয়, দিনটি উপলক্ষে পত্রিকাটি বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করেছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও পরিবার নিয়ে বিস্তারিত লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
সকালে পত্রিকা হাতে পাওয়ার পর থেকে কক্সবাজারের সাংবাদিক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়েই আলোচনা চলছে। তারা বলছেন, সর্ষের মধ্যেই ভূত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানেন না আজ মুজিবনগর দিবস। এদিকে মুজিবনগর দিবসকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন হিসেবে আয়োজন প্রকাশের এতোবড় ভুল করাকে কেবল ‘ভুল’ হিসেবেই দেখার ‘নসিহত’ দিলেন পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক।
রবিবার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস (১৭ এপ্রিল)। এই দিনটিকে নিয়ে সব পত্রিকায় বিশেষ আয়োজন থাকে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চকে আজকের দিনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে পত্রিকাটি যে ‘ভুল’ করেছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজারের এক সাংবাদিক সে বিষয়ে বলেন, কক্সবাজার একটা পত্রিকার শহরে পরিণত হয়েছে। এই ছোট্ট জায়গা থেকে ২১টি পত্রিকা বের হয়। এখানে রাজনীতিকরা, অসাধু ব্যবসায়ীরা ধুমধাম পত্রিকা বের করে। এখানে অনেক পত্রিকা আছে যেটার সার্কুলেশন একশ’ কপিও না।
তিনি বলেন, এই পত্রিকাটিও বেশিদিন বের হয়নি। খুব জোর বছর তিনেক হবে। আমরা সাংবাদিকতা করি, রোজকার কাজে কোনও না কোনও ভুল হয়। কিন্তু এতোবড় ভুল, ক্রোড়পত্রসহ ছাপানো দেখলে মনে হয় না এটা ভুল।
আজকের কক্সবাজার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, আমরা ১৭ মার্চের সঙ্গে ১৭ এপ্রিল ‘একটু টেকনিক্যালি ভুল’ করে ফেলেছি। মারাত্মক ভুল।
কীভাবে প্রধান শিরোনামে এতোবড় ভুল হলো, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আজ আমরা সংশোধনী দেব। ভুলটা ভুলের মতো মনে করতে হবে আপনাদের।
কেবল একটা নিউজ রিপ্লেস হওয়া আর ক্রোড়পত্রসহ পত্রিকা বের হওয়া ভুল নাকি অজ্ঞতা- সে প্রশ্নে জবাবে এই নির্বাহী সম্পাদক বলেন, আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
সম্পাদককে টেলিফোনে পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, উনি ব্যস্ত। উনার দায় যেমন আছে, আমি নির্বাহী আমার দায়ও অনেক। উনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। উনি এখানকার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সময় দিতে পারেন না। সেদিক থেকে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
গত ১৭ মার্চের পত্রিকাই ভুল করে ছেপে দিয়েছেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রথমে কিছু বলতে রাজি না হলেও পরে বলেন, না, সেদিনেরটা আবার ছাপা হয়েছে এমন না। এটা আসলে ভুলই।
এ বিষয়ে কথা বলতে সম্পাদক মুজিবর রহমানকে টেলিফোনে চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
আওয়ামী লীগ নেতার পত্রিকায় এ ধরনের ভুলের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, জেলা শহরগুলোতে এত ডিক্লারেশন দিয়ে পত্রিকার মান নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব নাম সর্বস্ব পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে জনগণকে অপসাংবাদিকতার হাত থেকে রক্ষা করা উচিত।