জেলায় জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা বিরোধী প্রচারণা জোরদার হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় গঠন করা হয়েছে প্রতিরোধ কমিটি। প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক প্রচারণা ও মসজিদের জুমাবারে ইমামদের জঙ্গী বিরোধী বক্তব্য এর কারণে জনসচেতনতা বেড়েছ। ফলে জঙ্গীবাদ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক সৃষ্টি হচ্ছে।
জেলাব্যাপী জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা বিরোধী ব্যাপক প্রচারণার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বড়েছে। অভিভাবকরা নিজেদের সন্তান কি করছে তা খুঁজ নিতে শুরু করেছে। সম্প্রতি একাধীক জঙ্গী হামলার কারণে বিষয়টি সাধারণ মানুষের মাঝেও আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তবে মসজিদের ইমামদের আরো সক্রিয় ভুমিকার কথা বলছেন সাধারণ মানুষ।
জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, যেখানে জঙ্গী সেখানেই প্রতিরোধ এমন প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা কমিটি। উপজেলা পর্যায়েও গঠন করা হয়েছে কমিটি। আমরা জঙ্গীবাদ বিরোধী প্রচারণা তৃণমুল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। মৌলবাদী চক্র দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী যে প্রচারণা চালিয়ে আসছিল সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভুল ভাঙবে।
জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি মহেশখালী উপজেলা শাখার সদস্য সচিব এম আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সঠিক ইতিহাস ও ধর্ম নিয়ে কতিপয় মৌলাবাদীর বিভ্রান্তি কর প্রচারণা সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা প্রচারণার বিষয়টি গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। মসজিদের ইমামরাও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় মানুষ বুঝতে পেরেছে আসল রহস্য। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই মুলত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে এতদিন কাজ করেছে এ চক্রটি। সম্প্রতি আইজিপির কক্সবাজার সফরের কারণে সকলে আরো সক্রিয় হয়েছে। আশাকরি জঙ্গীবাদের মূল সিকড় উপড়ে ফেলা সম্ভব হবে।
শিক্ষাবিদ শফিউল আলম জানান, শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর কারণে জঙ্গীবাদ ইসলাম এবং মানবতার পরিপন্থি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। ১০/১২ বছর বয়সি শিশুরাও এখন জঙ্গীবাদ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পাচ্ছে। এতদিন ইতিহাস বিক্রিত করার মাধ্যমে প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল তা অনেকাংশে দুর হয়েছে। প্রশাসন সক্রিয় থাকায় জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে নানা পেশার মানুষ সক্রিয় হয়েছে।
বিশিষ্ট ইসালামী চিন্তাবিদ, হাফেজ আবদুর নুর আল-কাদেরী জানান, ইসলামে জঙ্গবাদ ও নাশকতার কোন স্থান নেই। ধর্মের নামে যারা বিভ্রান্ত হয়ে এ অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে তারা মুলত ইসলামের মুল আকিদা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। বিভিন্ন অপ-ব্যাখার মাধ্যমে তাদের এ কাজে লিপ্ত করা হচ্ছে। তাই এই ধর্ম বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আলেম সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাদের এই ঘৃনিত কাজে দেশের কোন আলেম সমাজের সমর্থন নেই। মুলতঃ আলেমদের বক্তব্যই সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া পড়েছে। জুমার নামাজের সময় ইমামদের জঙ্গী বিরোধী বক্তব্য মুসল্লিরা গ্রহন করছেন। আশাকরি অচিরেই এই জঙ্গীবাদীদের তৎপরতার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের গনজাগরণ ঘটবে।
চকরিয়া ডুলাহাজারা ফজল করিম জানিয়েছেন, সম্প্রতি জঙ্গী হামলার পর কলেজে অধ্যয়নরত ছেলে কি করছে তা খোঁজ নিতে শুরু করেছি। মসজিদে ইমামদের বক্তব্য শুনে অনেক অভিভাবক এখন সজাগ হয়েছে। নিজেদের সন্তানদের এ ব্যাপারে সর্তক করছেন। যার ফলে কারো সন্তান বিভ্রান্ত হলে সহজেই প্রশাসনের কাছে তথ্য পৌছে যাবে।