বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বৃহৎ ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৭তম প্রতিষ্টা বার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনে কক্সবাজারে উদযাপন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত ওই আয়োজনে ছিল আলোচনা সভা, শান্তির পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এবং কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন।
কক্সবাজার শহর ছাড়াও জেলার উপজেলা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সংগঠন ছাড়াও নানাপ্রাপ্ত থেকে শত শত নেতা-কর্মী মিছিল নিয়ে এই উদযাপনে যোগ দেন।
জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদুল হক রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সংগঠনটির জন্মদিনের এই আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল।
ছাত্রদলের এই আলোচনায় বক্তাগণ বলেন, ছাত্রদলই দেশের দুঃসময়ে সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে ছিল। এই ছাত্রদলই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে ছিল সবসময়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যখন অন্য ছাত্র সংগঠন গুলো স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়েছিল তখন ছাত্রদলই স্বৈরাচার বিরোধী সেই আন্দোলনে ঝান্ডা ধরেছিল।
প্রধান অতিথি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, বিএনপিই একমাত্র দল যে নিজস্ব জাতীয়তাবাদের প্রতিষ্টা করেছে। আর ওই জাতীয়তাবাদকে বুকে নিয়ে ছাত্রদলই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় সচেষ্ট ছিল। এখনও এই ছাত্রদলই জাতিকে মুক্তি দেয়ার মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।
তিনি মনে করেন, ছাত্ররাই জাতিকে পথ দেখায়। তবে ছাত্র হলেই সবাই পথ দেখাতে পারে না। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরাই দেশের জন্য রক্ত দিয়ে সেই সুন্দর পথ দেখিয়েছে। আগামিতে এই ছাত্রদলই জাতিকে পথ দেখাবে।
তিনি ২০১৬ সালকে আন্দোলন ও গণতন্ত্র মুক্তির বছর আখ্যা দিয়ে বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও জাতির অহংকারের প্রতীক তারেক রহমান যে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন সব কর্মসূচিতে এই ছাত্রদলকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, যুগে যুগে দেশে দেশে স্বৈরাচারের আগমন ঘটে। বর্তমান স্বৈর সরকারও তেমনই একটি। আর এই স্বৈরাচারকে হটাতে ছাত্রদলকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, পাতানো নির্বাচন করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অতীতে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকারও পারবে না।
সাবেক সাংসদ কাজল মনে করেন, বাংলাদেশি জাতি এখন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। এই ক্রান্তিকাল বেশি দিন থাকবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণ যখন জাগবে তখন স্বৈরাচার কোন পথে পালাবে সেই পথ খুঁজে পাবে না।
তিনি জনগণকে জাগিয়ে তোলার সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, যুগ্ম সম্পাদক এড. আবু সিদ্দিক ওসমানী, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান, সাবেক জেলা মহিলা দল সভানেত্রী রবুওয়া বেগম, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নেজাম উদ্দিন, শহর যুবদল সভাপতি মসউদুর রহমান মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার রোমন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক আলাউদ্দিন রবিন, জাহেদুল ইসলাম রিটন, শহর ছাত্রদল আহবায়ক মোহাম্মদ ইলিয়াছ, যুগ্ম আহবায়ক শাহাদত হোসেন রিপন, সিটি কলেজ ছাত্রদল আহবায়ক সাইফুর রহমান নয়ন, যুগ্ম আহবায়ক শামসুল আলম, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রদল আহবায়ক এইচ এম রায়হান উদ্দিন, কক্সবাজার আইন কলেজ সাধারণ সম্পাদক করিমতাজ, সদর উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম টিপু, কক্সবাজার সরকারী কলেজ সিনিয়র সহ-সভাপতি জাইনুদ্দিন জনি, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, চকরিয়া উপজেলা শাখা আহবায়ক নুরুল আবছার রিয়াদ, যুগ্ম আহবায়ক শাহাদত হোসেন সামির, পেকুয়া উপজেলা আহবায়ক কামরান জাদিদ মুকুট, যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহ, চকরিয়া পৌর শাখা আহবায়ক মোহাম্মদ আলী, যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, চকরিয়া কলেজ আহবায়ক মিনহাজ উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক কুতুব উদ্দিন, ওবাইদুল্লাহ নূর ছিদ্দিকী, মহেশখালী উপজেলা ছাত্রদল সিনিয়র সহ-সভাপতি রিয়াদ মোহাম্মদ আরফাত হোসেন, কুতুবদিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক কাউসার হোসেন রিপন, উখিয়া উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক সেলিম সিরাজী প্রমূখ।
এই ছাত্র সমাবেশে জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, মাতামুহুরী, কুতুবদিয়া, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা শাখা, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখা, চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, উখিয়া কলেজ, টেকনাফ কলেজ, চকরিয়া পৌরসভা, টেকনাফ পৌরসভা শাখার নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
ছাত্র সমাবেশের আগে সকাল ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচি সূচনা করা হয়।