কক্সবাজারে তিন চাকার যানবাহন চালকের হাতে প্রতারিত হচ্ছে পর্যটক
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
৩৬৩
বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতায় বরাবরেই সক্রিয় রয়েছে প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছু অসাধু টমটম ও রিক্সা চালকের হাতে প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত ও প্রতারিত হচ্ছেন পর্যটক। এমনটাই অভিযোগ করেছেন বেড়াতে আসা ভূক্তভোগী পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন।
তারা বলছেন, কিছু অসাধু টমটম ও রিক্সা চালক পর্যটকদের কাছ থেকে রাখছে বাড়তি ভাড়া। আর তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি ভাড়া দিতে না চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ নানাভাবে লাঞ্চিত করে পর্যটকদের। এছাড়া তারা দলবেধে নানা কৌশলে প্রতারিত করে পর্যটকদের। কক্সবাজার আবাসিক হোটেল বা কটেজ সর্ম্পকে অবগত নন এমন পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা সর্ম্পন্ন আবাসিক রুম দেওয়া কথা বলে ঠকাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকি কিছু অসাধু চালক কৌশলে ছিনতাইয়ের কবলে ফেলে সর্বশ হাতিয়ে নিচ্ছে পর্যটকের কাছ থেকে।
সরে জমিনে দেখা যায়, শহরের বাসটার্মিনাল ও কলাতলীতে কিছু টমটম ও রিক্সা চালক রয়েছে যারা পর্যটক ছাড়া স্থানীয় লোকজনকে যাত্রী হিসেবে নেয় না। প্রয়োজনে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে পর্যটক যাত্রী পাওয়ার জন্য। এছাড়া তাদের মধ্যে অনেককে দেখা যায়, বাস টার্মিনাল এলাকায় পর্যটকের জন্য অপেক্ষা করতে। পর্যটক বাস থেকে নামার সাথে সাথে টানা হেছড়া শুরু করে কার আগে কে যাত্রী হিসেবে তাদের গাড়িতে তুলবে। আর তাদের মধ্যে অনেকের হাতে প্রতারিত ও লাঞ্চিত হয় পর্যটক।গোপন সূত্রে জানা যায়, অনেক টমটম ও রিক্সা চালক রয়েছে যারা পেশাদার চালক নয়। মূলক পর্যটন মৌসুম আসলেই তারা চালকে সেজে হাতিয়ে দিচ্ছে পর্যটকদের।
বুধবার বিকাল ৪ টার দিকে গাজীপুর থেকে আসা এক যুগল টমটম যোগে বাসটার্মিনাল থেকে কলাতলী সুগন্ধা পয়েটে যান। আর এই যাত্রার জন্য টমটম চালক তাদের কাছে ভাড়া দাবী করে সাড়ে ৩শ টাকা। ওই যুগল সাড়ে ৩শ টাকা না দিয়ে আড়াইশ টাকা দিতে চাইলে চালক উচ্চস্বরে স্থানীয় ভাষায় গালিগালাজ করে। এই দৃশ্য দেখে কয়েকজন স্থানীয় যুবক এগিয়ে আসে এবং টমটম চালককে সাশিয়ে দেয়।
একইভাবে শহরের হোটেল-মোটেল যোন লাইট হাউস এলাকা থেকে ২ পর্যটক লালদিঘীর পাড় যায় রিক্সা যোগে। রিক্সা ভাড়া দিতে গিয়ে ভাড়াভাড়ির এক পর্যায়ে চালক রীতিমত পর্যটকদের গায়ে হাত তুলছে। পরে পর্যটকরা চালকের দাবিকৃত ভাড়া দিয়ে ইজ্জত নিয়ে সরে পড়ে। জানা যায়, ওই রিক্সা চালক তাদের কাছ থেকে দেরশ টাকা ভাড়া নিয়েছে লাইট হাউস থেকে লালদিঘীর পাড়ে।
এভাবে কিছু অসাধু রিক্সা ও টমটম চালকের হাতে প্রতিনিয়ত প্রতারিত ও লাঞ্চিত হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে আসা সাইফুল করিম নামে এক যুবক ডেইলি কক্সবাজারকে জানান, কক্সবাজার তার খুবই পছন্দের জায়গা। তিনি এই পর্যন্ত ৮ বার কক্সবাজার এসেছেন। এই অসাধু টমটম ও রিক্সা চালক সর্ম্পকে তার যতেষ্ট ধারনা রয়েছে। যদিও অনেক টমটম ও রিক্সা চালক রয়েছে খুবই ভাল।
তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, গত ২ বছর আগে এক রিক্সা চালক নানা সুযোগ-সুবিধার কথা বলে ৫শ টাকা দামের রুমের ভাড়া নিয়েছিল ২ হাজার টাকা। আর ওই রিক্সা চালকের সাথে চুক্তি ছিল ওই আবাসিক হোটেলের ম্যানেজারের সাথে। একই ভাবে তার অনেক বন্ধু রুম নিয়ে প্রতারিত হয়েছে রিক্সা ও টমটম চালকের হাতে।
আবুল মন্জুর নামে এক রিক্সা চালাক ডেইলি কক্সবাজারকে জানান, কিছু চালক রয়েছে যারা স্থানীয়দের রিক্সায় উঠান না। তারা অপেক্ষা করেন পর্যটকের জন্য। তাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যাদের সাথে ছিনতাইকারীদের হাত। ওসব রিক্সা ও টমটম চালকেরা কৌশলে ছিনতাইকারীর কবলে ফেলে সর্বশ হাতিয়ে নেয় পর্যটকের। অনেক সময় ছিনতাইকারীদের হামলায় আহত হয় পর্যটক। এমনকি খুন পর্যন্ত হয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিষ্ট পুলিশের এএসপি জহিরুল ইসলাম ডেইলি কক্সবাজারকে জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন বরাবরেই সক্রিয়। তবে এই ধরনের অভিযোগ তিনি ইতিমধ্যে পাননি। কেউ যদি পর্যটকদের লাঞ্চিত বা প্রতারিত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।