গত এক মাসে ১০ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন এই কক্সবাজারে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সামান্য উদ্যোগ নিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগও অনেকটা দায়সারা।
এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ স্পট সমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের। আর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৬ স্পটে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য রয়েছে পাহাড়, ঝর্ণা, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের মতো স্পট। তাই সুযোগ পেলেই এখানে ছুটে আসেন দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক। পর্যটনের ভর মৌসুমে এখন প্রতিদিনই আসছেন ৩০ হাজারের অধিক ভ্রমণ পিপাসু। তাদের নিরাপত্তায় হোটেলগুলোতে রয়েছে সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা কর্মী। কিন্তু পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নেই সিসি ক্যামেরা। তাই পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় সরকারি উদ্যোগ বাড়ানোর দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
হোটেল সী-গার্লের ম্যানেজার হারুন-উর-রশিদ বলেনÑ পর্যটনের ভর মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজার আগমন ঘটছে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা সৈকতের সব পয়েন্ট রয়েছে, তাতে কোন ধরণের সিসি ক্যামেরা নেই।
হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইসের প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রক মোঃ হায়াত খান বলেনÑ পর্যটকদের নিরাপত্তায় অভ্যন্তরীণভাবে সকল প্রকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে সিসি ক্যামেরা, নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীও পর্যন্ত রয়েছে। ফলে হোটেলের অভ্যন্তরে পর্যটকদের নিরাপত্তায় কোন ধরণের সমস্যা হয় না। কিন্তু পর্যটকরা হোটেলের বাইরে গেলে তখন তাদের নিরাপত্তায় সরকারি ব্যবস্থা তেমন পর্যাপ্ত না।
হোটেল লং বীচের হেড অব মার্কেটিং মোঃ তারেক বলেনÑ কক্সবাজারে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগমন ঘটছে। বিদেশি পর্যটকরা কক্সবাজারকে নিরাপদ মনে না করে তাহলে দিন দিন বিদেশি পর্যটক আগমন কমে যাবে। ফলে দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি যারা বিদেশি পর্যটকদের রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দিতে হবে।
হোটেল কক্স-টুডে’র ম্যানেজার আবু তালেব শাহ বলেনÑ পর্যটকদের নিরাপত্তায় ডিজিএফআই, এনএসআই, ডিএসবি, র্যাব, পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে পাশাপাশি যদি পর্যটন এলাকার প্রতিটি পয়েন্ট ও হোটেল মোটেল জোন সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা যায় তাহলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার হবে।
ভিস্তা বে রিসোর্টের স্বত্ত্বাধিকারী আবু তাহের বলেন, কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সিসি ক্যামেরা নেই। একই সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাতে বাতিও জ্বলে না। সেটাও পর্যটনের জন্য ভাল লক্ষণ নই। আমি মনে করি, আইন প্রয়োগকারি সংস্থার এবিষয়টি নিয়ে খুবই গুরুত্ব দেয়া উচিত।
অবশ্য কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার হোসাইন মো রায়হান কাজেমী জানালেন সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সী-গাল, সী-গালের পেছন, লাবণী, মাদ্রাসা ও ডায়াবেটিক পয়েন্ট সহ ১৬টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এব্যাপারে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে।