তিনদিনের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামতে যাচ্ছে কক্সবাজারে। ২১ ফেব্রুয়ারী মহান ভাষা দিবসের জন্য আগাম বুকিং হয়ে গেছে কক্সবাজারের সব হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট। পর্যটন শহরটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা অবস্থানের জন্য কোনো কক্ষ খালি পাচ্ছেন না। ফলে কক্সবাজার আসার পরিকল্পনা বাদ দিতে হচ্ছে অনেককেই। ২১শে ফেব্রুয়ারী মহান ভাষা দিবস উপলক্ষে ছুটি আগামী রবিবার। আর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। টানা তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামছে। এরই মধ্যে এখানকার হোটেল, মোটেল, কটেজগুলোর কক্ষ আগাম বুকিং দিয়ে ফেলেছেন তারা। ফলে এখন কক্সবাজারের কোনো হোটেলেই এখন আর একটিও কক্ষ খালি নেই। এদিকে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোক সজ্জা ও রাস্তার দু-পাশে লাইটিংয়ের কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আর জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। অপরদিকে হোটেল ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের কাছ থেকে গলাকাটা বানিজ্য করে প্রতিনিয়ত পর্যটন মৌসুমের কথা বলে মোটাংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। হোটেলের নির্দিষ্ট ভাড়া তালিকার নিয়ম না মেনেই যেমন ইচ্ছা তেমন করে হাকিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এ কারনে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ ও নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, শহরের ৪০০টির বেশি হোটেলের মধ্যে প্রায় সবগুলোর কক্ষ আগামী সোমবার পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে। ঢাকার আশুলিয়ার বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান নিপু ২১ ফেব্রুয়ারী পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে আসতে চেয়েছিলেন।
১৭ ফেব্রুয়ারী তিনি রুম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করেন কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে। কিন্তু আশ্চর্য কক্সবাজারের একটি হোটেল, মোটেল, রিসোর্টেরই কক্ষ খালি নেই। আগে থেকেই সব বুকিং হয়ে গেছে। ফলে কক্সবাজার আসার পরিকল্পনা বাদ দিতে হচ্ছে নিপুকে। কেবল মাহফুজুর রহমান নিপু নয়, কক্সবাজারে বেড়াতে আসতে ইচ্ছুক এমন অনেককেই এখন বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কোনো হোটেল-মোটেলে সিট খালি পাচ্ছেন না তারা। জানা যায়, আগামী রবিবার মহান ভাষা দিবসের ছুটি। আর শুক্র ও শনিবার তো সাপ্তাহিক ছুটিই। টানা তিন দিনের এই ছুটির কারণে কক্সবাজারে ঢল নামছে পর্যটকদের। ইতোমধ্যে পর্যটকরা কক্সবাজার, হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলোর কক্ষ আগাম বুকিং দিয়ে ফেলেছেন। ফলে এখন কক্সবাজারের কোনো হোটেলেই আর কক্ষ খালি নেই। এতে করে যারা এখনো রুম বুকিং দেননি কিন্তু ভাষা দিবসের ছুটিতে কক্সবাজার আসার পরিকল্পনা করেছিলেন তাদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। পর্যটন নগরী হিসেবে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত, পাথুরে বীচ ইনানী, দরিয়ানগর, মহেশখালীর আদিনাথ, টেকনাফের সেন্টমার্টিন, রামুর বিভিন্ন পর্যটন এলাকাসহ বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন স্থানে ছুটি পেলেই ছুটি আসেন পর্যটকরা।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন (টুয়াক) এর সভাপতি রেজাউল করিম রেজা বলেন, ২০, ২১, ও ২২ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারের সব হোটেল/রিসোর্ট প্রায় পূর্ণ। আগে থেকে যারা বুকিং নিশ্চিত করেননি, সম্ভবতঃ তাদেরকে হতাশ হতে হবে এবার।’ রেজা আলো বলেন, পর্যটকরা আসছেন। কিন্তু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের খারাপ দশাসহ কিছু সমস্যার কারণে তাদের ধরে রাখা যাচ্ছে না।
কক্সবাজারের তারকামানের হোটেল লংবীচের অপারেশন অফিসার মোহাম্মদ তারেক বলেন, শুক্র, শনি ও রবিবারে হোটেলের কোনো কক্ষ খালি নেই। এক মাস আগেই বুকিং হয়ে গেছে। তবু প্রতিদিন অনেকে কক্ষ বরাদ্ধ নিতে ফোন করেন। তাদের হতাশই হতে হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন জানান, শুক্র, শনি ও রবিবার হোটেলের কোনো কক্ষ খালি নেই। এক মাস আগেই সব বুকিং শেষ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোটেল ব্যবসায়ীদের পর্যটকদের সেবার মান বাড়ানোসহ সবধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। পর্যটকদের যাবতীয় নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে কক্সবাজার ট্যুরিষ্ট পুলিশসহ সমস্ত বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।