কক্সবাজারে বিনা মূল্যের বই বিতরণেও টাকা আদায় : শিক্ষকদের দাবি পরিবহন খরচ
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
সোমবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৬
৫৯১
বার পড়া হয়েছে
প্রাথমিকের মতো মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠ্য বই বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হলেও সরকারের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বই বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বই বিতরণে টাকা আদায়ে শীর্ষে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কোনো কোনো উচ্চ বিদ্যালয়ে মাসিক বেতন, ভর্তি ফি, সেশন চার্জসহ অন্যান্য ফির অজুহাত তুলে এ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন। যারা এ টাকা দিতে পারছে না তাদের হাতে বই তুলে দেওয়া হচ্ছে না।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া জানান, ‘বইগুলো আমরা বিন্যা মূল্যে বিতরণের জন্য দিয়েছি। এর সঙ্গে বিদ্যালয়ের মাসিক বেতন, ভর্তি ফি, সেশন ফির কোনো সম্পর্ক নেই। যদি নেওয়া হয় তাহলে তা হবে নিয়মবহির্ভূত।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষা প্রশাসনের দেখা উচিত। যাতে কেউ সরকারের সৎ-সুন্দর উদ্দেশ্যেকে নস্যাৎ করতে না পারে।
মহেশখালীর আধাঁরঘোনা এহছান আলী জানিয়েছেন আধাঁরঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই’র সেট প্রতি দেড়শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। অভিভাবকরা টাকা না চাইলে বই দেবে না বলে হুমকি দেয় শিক্ষকরা। অভিভাবকরা বার বার বাধা দেওয়া সত্তেও জোর পূর্বক টাকা আদায় করেছে প্রধান শিক্ষক। গত বছরও একই কায়দায় টাকা আদায় করেছে শিক্ষকরা।
আধাঁরঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেম টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টাকা নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যই বই বিতরণে টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় মাতারবাড়ি, কালারমারছড়া, হোয়ানক, ধলঘটা ও শাপলাপুরের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণকালে টাকা নিয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।
চকরিয়া ঢেমুশিয়ার মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, বই বিতরণকালে
প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে শিক্ষকরা। কোন কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বিদ্যালয়ে বসে থেকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। যার ফলে বিনামূল্যের বই নিতে এসে টাকা দিতে না পেরে অনেকই খালী হাতে বাড়ি ফিরেছে। যার ফলে এই সফল প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। হোয়াইক্যং এর শাহজাহান জানিয়েছেন হোয়াইক্যংয়ের মহেশখালীয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণকালে টাকা আদায় করেছে। স্থানীয় মো: আলমের ৪র্থ শ্রেণী এবং ২য় শ্রেণী পড়–য়া আরফাত ও সবুজ বলেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক নতুন বইয়ের জন্য ১শ টাকা করে আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে। ২য় শ্রেণী পড়–য়া মেয়ে মনিরা আক্তারের পিতা ফেরদৌস বলেন নতুন বইয়ের জন্য একজন শিক্ষক ১শ টাকা করে নিয়েছে। ৫ম শ্রেণী পড়ুয়া রিয়া মনি ও আমিয়া আক্তারের পিতা শামসুল আলম বলেন তার মেয়ের বইয়ের জন্য শিক্ষকেরা ২শ টাকা নিয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারি শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, পরিবহন খরচের নামে আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। যা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ভাগ করে নেবেন।
এই ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার জানান-বইয়ের জন্য টাকা নিয়ে থাকলে তদন্ত স্বাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ সাদেক জানান বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নেবেন।