বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২। ঢাকা থেকে ৪২০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে মিয়ানমারে এর উৎপত্তিস্থল।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভূমিকম্পে জেলায় বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইউএসজিএসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৩৪ কিলোমিটার গভীরে। এদিকে ভু-কম্পন সবচেয়ে বেশী অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন্স। পুরো দ্বীপটি এসময় থর থর করে কেঁেপছে। সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নুর আহমদ রাতে বলেন-‘আমরা একটু শীতল হাওয়ার জন্য দ্বীপের বালুচরে বসেছিলাম। আকস্মিক দেখি সাগর পারের বালুচর কেঁপে কেঁপে আমাদের সহ বহু দুরে নিয়ে গেছে।’ তিনি বলেন-এ দ্বীপে এরকম ভুচাল (ভুমিকম্প) আর কোন সময় অনুভত হয়নি। তবে জেলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মুজিবুল হক জানিয়েছেন, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২। এটি ‘মেজর’ ক্যাটাগরির ভূমিকম্প। অতীতে এর চেয়ে বড় ভূমিকম্পেরও রেকর্ড রয়েছে। তবে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ফায়ার স্টেশনের ভবনের বর্ধিত অংশের (সানসীটের) একটি অংশ ধসে পড়েছে। সেখানে লোহার রড বেরিয়ে গেছে। এছাড়াও উপ-পরিচালকের ভবনের একাধিক অংশে ফাঁটল ধরেছে। তিনি জানান, ভূমিকম্পের তার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জেলার অন্য কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত তিনি পাননি। উখিয়ায় প্রচন্ড ভূমিকম্পঃ উখিয়ায় গতকাল বুধবার রাত ৭.৫৮ মিনিটের সময় প্রচন্ড ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পের কাঁপুনিতে পুরো এলাকার জনগণ আতংকিত হয়ে দিক-বিদিক দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা গেছে। প্রায় ১৫ সেকেন্ড ভূমিকম্পের স্থায়ী ছিল বলে প্রতেক্ষ্যদর্শীরা জানান। তবে এ রিপোর্ট লেখা পযন্ত ক্ষয়ক্ষতির খরব পাওয়া যায়নি। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে ব্যাপক ফাটল ঃ ভু-কম্পনে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পাহাড়ী জরাজীর্ণ বাসভবনে ব্যাপক ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতল বাস ভবন থেকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা কোন রকমে নিরাপদে বের হয়ে গেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলাম রাতে জানান-‘আমি পহেলা বৈশাখের অনুষ্টানের বাজার করতে কক্সবাজার ছিলাম। এসময়ই ভুকম্পনে আমার বাসার কয়েকটি রুমের ছাদের অংশ বিশেষ ধবসে পড়ে এবং দেয়ালেও বিরাট ফাটলের সৃষ্টি হয়। আমাকে বাধ্য হয়ে আজ রাত থেকেই খোলা আকাশের নিচে থাকা ছাড়া উপায় নেই। ’ তিনি আরো জানান, এমনিতেই সরকারি ভবনটি গত দুই বছর আগেই বসবাসের অনুপযোগী ঘোষনা করা হলেও তাঁকে এক প্রকার বাধ্য হয়ে অমানবিকভাবে সেখানে থাকতে হচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যেও প্রচন্ড ভু-কম্পন অনুভুত হয়েছে। আরাকানের কোয়ানচিবং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ওকাট্টা) শাদ উল্লাহর বরাত দিয়ে টেকনাফ সীমান্তের একজন চিংড়ি ব্যবসায়ী জানান, ভুমিকম্প প্রচন্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানলেও পাকা ভবনাদি সেখানে কম থাকায় তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ জানা যায়নি।