গত দুই বছর ধরে কক্সবাজার কেজি অ্যান্ড মডেল হাইস্কুলের ৪০ শিক্ষার্থী ক্লাস করেছে চারু ও কারুকলা বিষয় নিয়ে। পরীক্ষার দেড় মাস আগে তারা জানতে পারে পরীক্ষার রুটিনে নেই চারু ও কারুকলা নামে কোনো বিষয় নেই। এখন তাদের পরীক্ষা দিতে হবে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে ওইসব পরীক্ষার্থী। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তাদের অভিভাবকরা। তবে বিষয়টি নিয়ে একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজদের রক্ষার চেষ্টা করছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড কৃর্তপক্ষ এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষার সময় সূচি অনুযায়ী, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা। ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের পরীক্ষা। রুটিনের কোথাও নেই চারু ও কারুকলা বিষয়টি। এ অবস্থায় সোমবার রাতে কক্সবাজার কেজি অ্যান্ড মডেল হাইস্কুলের ৪০ জন শিক্ষার্থীকে কৃষি শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া দিয়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মুঠোফোনে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের এ কথা জানানোর পর শুরু হয়েছে অস্থিরতা।
পরীক্ষার্থী ইফাজ উদ্দিন ইমুর বাবা নেজাম উদ্দিন জানান, তার ছেলে দু’বছর ধরে চারু ও কারুকলা পড়েছে। টেস্ট পরীক্ষায়ও এ বিষয়ে অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ফোন করে বলেন, ছেলেকে চারু ও কারুকলা আর না পড়াতে। এর পরিবর্তে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে প্রস্তুতি নিতেও বলা হয়। পরীক্ষা শুরুর আগ মুহূর্তে এটা শিক্ষদের হঠকারি সিদ্ধান্ত।
জালাল উদ্দিন নামে আরেক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে মশকরা করেছেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী জানান, রেজিস্ট্রেশনের সময় চারু ও কারুকলা বিষয়টি উল্লেখ্য করে শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করে। বোর্ড তা বৈধতা দিয়ে ছাড়ও দেয়। এমনকি বোর্ড থেকে বইও পাঠানো হয়। দুই বছর পর পরীক্ষার আগে এসে দেখা যাচ্ছে পরীক্ষার রুটিনে বিষয়টি নেই।
এজন্য তিনি বোর্ড কৃর্তপক্ষকে দায়ী করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সময় চারু ও কারুকলার বিষয়টিতে যে কোড নম্বর ব্যবহার করেছিল তা তখন বৈধতা দিয়ে পরীক্ষা শুরুর আগ মুহূর্তে বিপাকে রাখা হলো।’
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, ‘চারু ও কারুকলা বিষয়টির ব্যাপারে বোর্ডের অনুমোদন নেই। ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নিজ উদ্যোগে এ বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছে। এটা তাদের ভুল।’
শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক কাজী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘দুটো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে যে তথ্য এসেছে সেই অনুসারেই শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ভুল থাকলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পুনরায় সংশোধনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা না করলে বোর্ড কর্তৃপক্ষের কী করার থাকে।’