নিজের স্ত্রীকে ইনচার্জ করার অনৈতিক মিশনে ব্যর্থ হয়েছে তুষার সিন্ডিকেট। নিয়ম বর্হিঃভূতভাবে একজন সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টরকে ডিঙ্গিয়ে ওই সিন্ডিকেটটি অসীমা রানী সাহাকে ভারপ্রাপ্ত ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জের দায়িত্ব পাইয়ে দেয়ার চেষ্ঠা করলেও সেবা পরিদপ্তর তা গ্রহন করেননি। সিন্ডিকেটের তদবির তোয়াক্কা না করে সেবা পরিদপ্তর নিয়ম অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জের দায়িত্ব দিয়েছে সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর করুনা রানী বেপারীকে। গত ২৪ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সেবা পরিদপ্তর থেকে নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ, জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন বরাবরে প্রেরণ করলেও এতদিন ওই সিন্ডিকেট বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল। কিন্তু তাদের কারসাজি ফাঁস হয়ে যায়।
সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ সুশীলা রানী সাহা অবসরে চলে গেছেন গতকাল ১ ফেব্রুয়ারী। সেই সুবাদে আর এক ইনচার্জের পোস্টিং না হওয়া পর্যন্ত ওই পদটিতে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করবেন নিয়ম অনুযায়ী ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর। কিন্তু পদটি ভাগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর অসীমা রানী বৈদ্য। নার্সিং ইনস্টিটিউট ও সদর হাসপাতালে একচেটিয়া অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে যেতে স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ করতে মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সব দপ্তরে জোর তদবির চালায় সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক তুষার কান্তি পাল। নার্সিং ইনস্টিটিউটের এই অনিয়ম নিয়ে দৈনিক সকালের কক্সবাজার পত্রিকায় গত ২৬ জানুয়ারী ‘দুর্নীতিতে ছারখার কক্সবাজার নার্সিং ইনস্টিটিউট’ এবং ২৭ জানুয়ারী ‘এবার স্ত্রীকে ইনচার্জ করতে তুষার সিন্ডিকেটের দৌড়ঝাঁপ’ শিরোনামে দুটি তথ্য ভিত্তিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অনুসন্ধানীমূলক ওই সংবাদ দুটি প্রকাশ হওয়ার পর জনসম্মূখে বেরিয়ে আসে তুষার সিন্ডিকেটের অপকর্মের চিত্র।
সেবা পরিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ সুশীলা রানী সাহা ১ ফেব্রুয়ারী অবসরে চলে যাওয়ার সময় হওয়ায় সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর করুনা রানী বেপারীকে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ করে দায়িত্ব প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২৪ জানুয়ারী সেবা পরিদপ্তর থেকে একটি আদেশ জারি করে নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ, জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন বরাবরে একটি চিঠি প্রেরণ করে। যার স্মারক নং-ডি,এন,এস/শা-২/১ক-৩০৪/৯৪/৫৫১। সেবা পরিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিলুফার ফরহাদ স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অবসর জনতি কারণে ইনচার্জের পদটি খালি হওয়ায় ১ ফেব্রুয়ারী থেকে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করবেন সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর করুনা রানী বেপারী। একই আদেশে করুনা রানী বেপারী আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা (ডিডিও) এর দায়িত্বও পালন করবেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে করুনা রানী বেপারী জানান, সেবা পরিদপ্তর থেকে তাকে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জের দায়িত্ব দেয়ার জন্য আদেশ জারি করে একটি চিঠি প্রেরণ করলেও ষড়যন্ত্র করে তা ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়। কিন্তু ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। তাই গতকালই তাকে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন সদর হাসপাতালের সুপার।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রতন চৌধুরী জানান, যার হওয়ার কথা তাকে করা হয়েছে। এখন থেকে করুনা রানী বেপারী ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করবেন।