নতুন সূর্য দিয়ে শুরু হয় নতুন সকাল, নতুন দিন, নতুন বছর। আর এই সূর্যই এনে দিয়েছে ১৪২৩ বঙ্গাব্দ। বরাবরই লাল সাদা রঙ্গের পোশাক আর সাজ সজ্জা বৈশাখকে নতুন মাত্রা দেয়। এ রঙের আধিক্য যেমন রয়েছে সবার সাজে, তেমনি রয়েছে অন্যান্য রঙেরও ছড়াছড়ি।
সবাই যেন মনকে রঙিন করেই এসেছে নতুন বছর বরণে। আর যে যার মত করে উপভোগ করছে সময়টাকে। প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষকে বরণে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
এ দিন সকালে বর্ণাঢ্য শুভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালী জাতীর চিরায়ত দিনটিকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বাদ্য যন্ত্রের তাল, গান আর নিত্যের মাধ্যমে বরণ করে নেয়া হয় দিনটিকে।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের প্রাঙ্গন থেকে অনুষ্ঠিত র্যালি শহরের প্রধন সড়ক ঘুরে। এরপর পাবলিক লাইব্রেরীতে সম্মিলন ঘটে।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন খানসহ প্রশাসন ও সুশীল সমাজের লোকজন লোকজন র্যালীতে উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ মেলায় পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে অর্ধশত স্টল বসেছে।
সেখানে ভিন্ন স্বাদের ২৫ রকম পিঠার পসরা বসিয়েছে কক্সবাজার আদর্শ মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসা। দক্ষ হাতের রান্না করা পিঠা মন কাড়ছে ক্রেতাদের। এই স্টলে পিঠা ছাড়াও সাজিয়ে রাখা হয়েছে টুকটুকে লাল তরমুজ ও বেলের শরবতও।
আতিথিয়েতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে দুইজন শিক্ষিকাসহ একঝাঁক তারুণ্যদ্বীপ্ত শিক্ষার্থী। তাদের স্টলটি পুরো মেলায় ভিন্নতা এনে দিয়েছে।
পাশাপাশি কক্সবাজার ইসলামিয়া মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসার স্টলেও রয়েছে দুধ, দধি, শরকতসহ ভিন্নজাতের পিঠা-পায়েস।
মেলা ঘুরে চোখে পড়েছে কক্সবাজার কেজি এন্ড মডেল হাই স্কুল, প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও তৎসংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় (পিটিআই), কক্সবাজার সরকারী উচ্চবিদ্যালয়, কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাল্স, বায়তুশ শরফ আদর্শ জব্বারিয়া একাডেমী, পৌর প্রিপ্যারেটরাী উচ্চ বিদ্যালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল।
এসব স্টলেও বৈশাখী দিনের নানা রকমের পিঠা-পায়েস, শরবত খেতে ভীড় করছে লোকজন। বিশেষ করে গরমের মাত্রা একটু বেশী হওয়ায় শরবতের কদরটা বেড়েছে। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টলে শাড়ী, নকশী কাঁথাসহ বিভিন্ন জাতের পোষাক পাওয়া যাচ্ছে।
মেলায় আগত দর্শকদের মাতিয়ে রাখতে মাঠের পূর্ব পার্শ্বে নির্মিত মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তীব্র গরমেও মন মাতানো অনুষ্ঠান উপভোগ করছে দর্শকরা। খরতাপে মাথার ঘাম পায়ে পড়লেও বাঙালীর উৎসবে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। সবাই যে যার মতো বৈশাখী উৎসবে মেতেছে।
অনুষ্ঠানে শিশু, কিশোর, যুবক, যুবতী থেকে সব বয়সী বাঙালীর মিলনমেলা ঘটেছে। সভা মঞ্চে অনুষ্ঠান করছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিকজোট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সরকারী শিশু পরিবারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এছাড়াও শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারেও বৈশাখ পালিত হচ্ছে।
তবে, এবার পান্তা ইলিশ আয়োজনে একটু ভাটা পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় ইলিশের বদলে ছাগল, ডিম, মরিচ, আলুভর্তার আয়োজন বেশ আলোচনা তৈরী করেছে।