রোগীদের নিবীড় চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চালু হতে যাচ্ছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বা নিবীড় পর্যক্ষেণ কেন্দ্র। আগামী মাসের শুরুতেই সীমিত লোকবল নিয়ে জেলার এই শীর্ষ হাসপাতালে এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটটি চালু হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণও প্রায় শেষের দিকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের শুরুতেই সদর হাসপাতালে যাত্রা শুরু করবে আইসিইউ ইউনিটের কার্যক্রম।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ পুচনু জানান- সরঞ্জাম থাকলেও জনবলের অভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল আইসিইউ স্থাপনের কার্যক্রম। একটি আইসিইউ স্থাপনের জন্য অন্তত ৪০ জনের জনবল দরকার। কিন্তু এত জনবল এক সাথে অনুমোদন দেয়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরও সম্প্রতি উচ্চ মহলের জোর প্রচেষ্টার কারণে প্রাথমিকভাবে ৬ বেডের একটি আইসিইউ চালু করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে ৮ জনের জনবল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৪ জন ডাক্তার ও ৪ জন নার্স রয়েছেন।
তিনি জানান- আইসিইউ বিভাগে নিয়োগকৃতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪ জনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকীদের প্রশিক্ষণ চলছে। চলতি জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে তাদের প্রশিক্ষণও শেষ হবে। এছাড়া ইউএনএইচসিআর এর পক্ষ থেকেও ২ জন নার্স দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারী) মাসের শুরুতে আইসিইউ’র কার্যক্রম চালু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাববধায়ক ডাঃ রতন চৌধুরী জানান- প্রাথমিকভাবে ৬ বেডের একটি নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র-আইসিইউ স্থাপনের জন্য মন্ত্রনালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়। ওই চাহিদার অনুকূলে আইসিইউ’র জন্য মন্ত্রণালয় থেকে পর্যায়ক্রমে প্রায় দেড় কোটি টাকার অত্যাধুনিক সরঞ্জাম বরাদ্দ দেয়া হয়। অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় আরো প্রায় দেড় কোটি টাকা।
তিনি জানান- মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ৬ বেডের আইসিইউ’র কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জনবল বাড়লে কার্যক্রমও বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন- স্বাস্থ্য খাতে সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই। অতীতের চেয়ে বর্তমানে সদর হাসপাতালে সেবার মান অনেক গুণ বেড়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
আইসিইউ স্থাপন এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবী উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন- সদর হাসপাতালে আইসিইউ না থাকায় বছরে অনেক সংকটাপন্ন রোগী চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে মারা যান। আইসিইউ স্থাপন হলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কক্সবাজারে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে তিনি দাবী করেন। এছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হলে সিসিইউ’র কার্যক্রমও চালু করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) ও ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়। সিসিইউ স্থাপনের জন্য ভবন প্রস্তুত থাকলেও মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস থাকায় এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কারণে এই ইউনিটটি চালু করা যায়নি। কিন্তু আইসিইউ স্থাপনের বিষয়ে স্থানীয়দের জোর দাবী, বিশেষ করে পর্যটননগরীর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হওয়ায় কক্সবাজারে আইসিইউ’র প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে সরকারের উচ্চ মহল সম্প্রতি আইসিইউ চালুর জন্য লোকবল নিয়োগ দিয়েছে।