1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সার্ফিং যুদ্ধে জয়ী ক’জনা - Daily Cox's Bazar News
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৭ অপরাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সার্ফিং যুদ্ধে জয়ী ক’জনা

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬
  • ২৯১ বার পড়া হয়েছে

sarfar-coxবিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত আমাদের দখলে থাকলেও উত্তাল সমুদ্রের ভয়াল গর্জন কিংবা অদৃশ্য ভ্রুকুটিকে পাত্তা না দিয়ে সে ঢেউয়ের সঙ্গে মিতা পাতিয়ে সার্ফিং করার মতো দুঃসাহস খুব কম মানুষেরই আছে এই ভূমে। তাই বলা যায়, বাংলাদেশে সার্ফিং এখনো তেমন জনপ্রিয় কোনো খেলা নয়।

তবে সংখ্যায় অল্প হলেও সার্ফিংয়ের মতো বিষয়টি যখন একদল কিশোরীর নখদর্পে, তখন আমাদের রক্ষণশীল সমাজের বিপরীতে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন পূরণ যে সম্ভব, তারই বাস্তব উদাহরণ কক্সবাজার সার্ফ ক্লাব এবং এর দুঃসাহসী কিশোরীরা।

surfing-coxsbazar-pic-2শুরুতেই ওই কিশোরী সার্ফার দলের সোমার গল্পই বলা যাক। বাবা অন্যত্র বিয়ে করায় মা আর ছয় ভাইবোনের দায়িত্ব সোমাকে নিতে হয়েছে খুব অল্প বয়সেই। সমুদ্রসৈকতে আগত পর্যটকদের জন্য হাতে তৈরি অলঙ্কার, খাবার ইত্যাদি বিক্রি করেই তাদের সংসার চলত। প্রতিদিন অলঙ্কার তৈরি, ঘরের কাজ করা, আর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেসব অলঙ্কার ও খাবার বিক্রি করেই চলছিল তার শৃঙ্খলিত জীবন।

কিন্তু হঠাত্ই তার এ একঘেয়ে জীবনের মোড় ঘোরে দুঃসাহসী সার্ফিংয়ের মতো বিষয়কে সঙ্গী করে নেয়ার পর। এরই ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে আমাদের রক্ষণশীল সমাজের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা এক স্বপ্নকন্যার প্রতীক হয়ে গেল কক্সবাজারের সোমা।

তিন বছর আগে সোমার বয়স তখন ১১ বছর। প্রতিদিনের মতো একদিন সকালে আগত পর্যটকদের কাছে নানা ধরনের গয়না, খাবার বিক্রি করতে প্রায় মাইল পথ হেঁটে সমুদ্রসৈকতে এসে সে দেখতে পেল জাদুকরী এক খেলা। দেখতে পেল একটি বোর্ডের ওপর দাঁড়িয়ে এক যুবক সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে। সোমা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল বেশ কিছু সময়। আর অপেক্ষায় ছিল কখন সে যুবক খেলা শেষ করে বালিতে উঠে আসবে। প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর রাশেদ আলম নামে সে জাদুকর ফিরে এল।

surfing-coxsbazar-pic-1সোমা দেরি না করে আলমের কাছে জানতে চায় তিনি যে খেলাটা খেলছেন, সেটা কী? উত্তরে আলম তাকে সার্ফিং সম্পর্কে ধারণা দেয়। সব শুনে সোমার কাছে বিষয়টি এতটাই চমকপ্রদ মনে হলো যে, সে আলমের কাছে সার্ফিং শেখার আগ্রহ প্রকাশ করল। কিন্তু আলম ভাবতে লাগল একটি মেয়েকে এভাবে সার্ফিং শেখালে আশপাশের মানুষ বিষয়টি কীভাবে দেখবে। তার পরও সোমার আগ্রহ দেখে আলম পরদিনই শুরু করে দিল সার্ফিং প্রশিক্ষণ।

শুরুতে সোমার জন্য বিষয়টি মোটেও সহজ ছিল না। কেননা, সমাজ ও পরিবারের ভরণপোষণ— এই দুয়ের জাঁতাকলে পড়ে সোমা প্রথমে বেশ ভয়ে ছিল সার্ফিং শেষমেশ করতে পারবে কিনা। তার ভয় ছিল সার্ফিংয়ে যে সময় সে ব্যয় করবে, তাতে প্রতিদিনের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে আর সমাজে শুরু হবে নানা গুঞ্জন।

কিন্তু দমে যাওয়ার মতো মেয়ে নয় সোমা। কাজে যাওয়ার আগে সকাল বেলা সার্ফিংয়ের জন্য কিছু সময় বের করে নিল সে। বলা চলে একপ্রকার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে চলতে থাকে তার প্রশিক্ষণ। কয়েক দিন পর একে একে যোগ দিতে থাকে মাইশা, জাহানারা, সুমিসহ আরো অনেক কিশোরী।

surfing-coxsbazar-pic-3এদের সবার গড় বয়স ১১ থেকে ১৫। কিন্তু কয়েক দিন না যেতেই বিষয়টি সবার জানা হয়ে যায় এবং পরিবার আর সমাজ থেকে নানা ধরনের বাধা আসতে শুরু করে। আর সেসব বাধা মোকাবেলা করতে সোমাদের সঙ্গে প্রশিক্ষক আলমকেও বেগ পেতে হয়েছে অনেক। সবাইকে বোঝাতে হয়েছে নানাভাবে।

সোমার সার্ফিং সঙ্গী সুমির একটি ঘটনার বর্ণনা থেকে বোঝা যায় সার্ফিং করা কতটা কঠিন ছিল তাদের জন্য। সোমার মা মরিয়ম প্রায়ই এসে মেয়েকে নিয়ে যেত সৈকত থেকে। পরদিন আবার এসে সোমা হাজির হতো সার্ফিংয়ের জন্য। একবার তো বাসার কাজে সোমাকে দিয়ে দেয় তার মা। কিন্তু সফল হননি।

ফলে আলম এবং সোমাদের ধৈর্য আর যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়েছে বারবার। হয়তো সে কারণে যোগ্যতা প্রমাণে সোমাকে স্থানীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হয়েছে এবং সেখানে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় গুনে গুনে পেয়েছিল প্রায় ৩ হাজার টাকা। সে টাকা দিয়ে মা-মেয়ে দুজন প্রথমবারের মতো কক্সবাজারের বাইরে কোথাও বেড়াতে যায়।

surfar-jafor-pic-1জীবনে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়ে সোমার মা উপলব্ধি করতে পারে সার্ফিংয়ের জন্য মেয়ের মেধা, ইচ্ছা আর একাগ্রতার কথা। তাই তো মেয়ের বিয়ের কথা জানতে চাওয়ায় তিনি জানালেন, সেটা তার মেয়ের নিজস্ব ইচ্ছা। বোঝাই যাচ্ছে মানসিকভাবে কতটা বদলে গেছেন মরিয়ম। হয়তো তিনি বুঝতে পেরেছেন তার মেয়ে জয় করতে যাচ্ছে আরো বিশাল কিছু।

সোমা, সুমি বা জাহানারা এখন তাদের গুরু রাশেদ আলমের নিজ হাতে গড়া কক্সবাজার সার্ফ ক্লাবের সদস্য। সার্ফার জাহানারা জানায়, তারা সবাই কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা নানা কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু এসবের পর সার্ফ করা সহজ কাজ নয়। তাই হয়তো এই মেয়েদের মেধা আর লড়াইয়ের কথা ভেবে বাংলাদেশে বসবাসরত মার্কিন আলোকচিত্রী এলিসন জোইয়ি ‘ক্রাউড ফান্ডিং’য়ের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রত্যেকের জন্য ৫০ মার্কিন ডলারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এ বিষয়ে জাহানারার বক্তব্য, ‘এই সাহায্য ছাড়া আমার মা কোনোভাবেই আমাকে সার্ফ করতে দিত না।’

সার্ফিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে তেমন পরিচিতি না পেলেও এক সময় যে নাম করবে না, তা বলার কোনো অবকাশ নেই। কারণ লড়াই যেখানে প্রকট, বিজয় সেখানে নিশ্চিত। না হয়, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা অস্ট্রেলীয় এক নাগরিকের ফেলে যাওয়া একটি সার্ফ বোর্ড দিয়ে রাশেদ আলমের নিজ প্রচেষ্টায় সার্ফিং শেখা এবং সে শিক্ষা আরো ৫০ জনের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া, যাদের সবাই নারী, সেখানে সার্ফিং করার এই যে ধারাবাহিক সংগ্রাম, এর ফলাফল নিশ্চয়ই একদিন পাবে সোমা, সুমি, আয়েশা, রিফা, মাইশা বা জাহানারারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications