কক্সবাজার ১৯টি ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফিরে পাবার আশায় অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী হাঙ্গামা শুরু করেন। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে রাস্তায় অবরোধ, গাছ উপড়ে জীবযাপনে স্থবিরতা সৃষ্টি এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে লাফাতে থাকেন বিদ্রোহীরা। কিন্তু হঠাৎ করে আওয়ামীলীগের সেই সব বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজের অবস্থান থেকে সরতে শুরু করেছেন। বন্ধ করে দিয়েছেন তাদের প্রচার প্রচারণা। ইতোমধ্যেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী।
জানা যায়,আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর দুই পুত্র মাহাবুব মোর্শেদ ও রাশেদ মাহমুদ আলী নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। দলীয় সভানেত্রীর সাথে দেখা করার পর হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর পরিবারের একটি সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন এবং তাঁর তনয়ার নেতৃত্বে দীর্ঘ বছর আওয়ামীলীগের রাজনীতির শেষ বয়সে এসে পৌঁছেছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। আর এই সময় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনায় তাঁর দুই সন্তান মোর্শেদ ও রাশেদ মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলেও ওই সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। তাঁর দুই পুত্র আপাতত নির্বাচন করার কথা ভাবছেন না। আসন্ন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে সমর্থন চান হ্নীলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি এইচকে আনোয়ার ও এবংসাবেক এমপি অধ্যাপক মোঃ আলী পুত্র মাহাবুব মোর্শেদ। পরবর্তীতে এইচকে আনোয়ারকে দল সমর্থন দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপকের মেজো সন্তান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন মাহাবুর মোরশেদও মনোনয়ন প্রত্র জমা দেন। একই সাথে তাঁর ছোট ভাই রাশেদও। গত ২৬ জানুয়ারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীসহ তার বড় পুত্র মোর্শেদ ঢাকা গিয়ে সভানেত্রীর সাথে দেখা করে তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা ভোটারদের জানিয়ে দেন বলে জানা গেছে। এর ফলে হ্নীলা ইউপিতে আওয়ামীলীগ থেকে আর কোন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলোনা।
এদিকে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আগেই স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে নিজের তুলে ফেলেন প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ফজলুল করীম সাঈদী। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে না যাওয়ার ঘোষনা দিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন থেকে বিরত থাকেন। যদিও সাবরাং ইউনিয়নে টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর হোছাইন এখনো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর একনিষ্ট কিছু সূত্র বলছে তিনি বিদোহী হয়ে থাকবেন না। আবার কেউ কেউ বলছেন তিনি ২ মার্চ এর আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।
এছাড়া টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপেও রয়েছে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। যারা ইতোমধ্যে নিজেদের নড়াচড়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ সূত্র জানা যায়, জেলার ১৯টি উপজেলায় যারা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিবেন। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, দলের কঠিন সিদ্ধান্তের কথা সবারই জানা আছে। নেত্রীর মনোনিত প্রার্থীর পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে। এর ব্যর্তয় ঘটলে সাংগঠনিক ব্যবস্থার বিষয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীরা অবগত আছেন।
সূত্র জানা যায় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রভাশালী নেতা ওবাইদুল কাদের মাহাবুবুল আলম হানিফ জানিয়েছেন কেউ আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করলে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এই ঘোষনার পর থেকে মুলত জেলা আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রাথীরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বলে জানা গেছে।