সেনাবাহিনীতে স্বাস্থ্যসেবার জন্যে দুই ধরনের ইউনিট কাজ করে। একটি সিএমএইচ। অর্থাৎ কম্বাইন্ড মিলিটারি হসপিটাল। এগুলো যেমন দেখা যায়, একেকটি সেনানিবাসে যেমন এরকম হাসপাতাল থাকে যেখানে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে। অন্যটি ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স, যার প্রাথমিক কাজ যুদ্ধের ময়দানে চিকিৎসা দেওয়া।
বাংলাদেশের ২১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স ইউনিটটি সম্প্রতি আফ্রিকার আইভরি কোস্ট-এ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে যোগ দিয়েছে। আর এই এই ৫৬ জনের দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। কর্নেল নাজমা বেগমের আগে আইভরি কোস্ট-এ কোনো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী ইউনিটের নেতৃত্বে কোনো নারী কাজ করেনি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স আইভরি কোস্ট-এ একটি লেভেল ২ হাসপাতাল চালাবে। এই দলে সব মিলিয়ে ৬ জন নারী অফিসার রয়েছেন। ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স-এ যোগ দেবার আগে নাজমা বগুড়া সেনানিবাসে ১১শ পদাতিক ডিভিশনের স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক সহকারী পরিচালক ছিলেন। শুধু জাতিসংঘ মিশনেই নয়, নাজমা ২১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবেও প্রথম নারী।
অন্যান্য দেশের মত আইভরি কোস্টেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের একনিষ্ঠতার কারণে সুনাম এবংখ্যাতি অর্জন করেছে। আফ্রিকার এই সংঘাতময়দেশটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০০৪ সাল থেকেকাজ করছে।
সেনাবাহিনী জনসংযোগ দপ্তরের একটি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নাজমা শুধু একজন সফল সেনা অফিসারই নয়, একজন খ্যাতনামা লেখকও বটে। এ পর্যন্ত নাজমা ২৬টি বই লিখেছেন। এ বছরের বইমেলাতেই তার ৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
আইভরি কোস্টে জাতিসংঘের জন্যে প্রথম হলেও বাংলাদেশের জন্যে নারী অধিনায়কের বিষয়টি অভিনব নয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় থেকেই নারীরা কাজ করে আসছেন। ক্যাপ্টেন (মুক্তিযুদ্ধকালীন) সিতারা মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের জন্যে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।
এই মেডিকেল কোরের যাত্রা শুরু হয় মেলাঘরে স্থাপিত বাংলাদেশ হাসপাতালের মধ্য দিয়ে। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেওয়া হতো ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থিত সেই হাসপাতালে। মুক্তিযুদ্ধের শেষভাগে সিতারা সেই হাসপাতালের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কয়েক মাস।