‘পড়ার সঙ্গে করতে হবে
অভিজ্ঞতা যোগ
নইলে কি কেউ পড়াশোনা
করবে উপভোগ?
বইতে যদি লেখা থাকে
কাকে বলে ‘ঈষ’
খুব ভালো হয় যদি সেটা
চিনিয়ে ওকে দিস।
লাঙ্গলের ফলাটাকে
ধরতে দিলে তবে
ঠিক জেনে নিস শিক্ষাটা ওর
পুরোপুরি হবে।
অথবা ধর্, নদীর কথা
লেখা আছে বইতে
কোন্ ঠিকানায় যাবে নদী
এলো কোথা হইতে।
কথার যতই ফানুস উড়াস
বুঝতে পারবে কি সে?
কথার তোড়ে বরং মেয়ের
হারিয়ে যাবে দিশে।
কিন্তু ওকে নিয়ে গেলে
শীতলক্ষ্যার পাড়ে
নদী কাকে বলে, সেটা
বুঝবে হাড়ে হাড়ে।’
দাদুর কথা শুনে মেয়ে
হলো উৎসাহিত
বই নিয়ে ও পড়তে এলো
আমি তো খুব প্রীত।
রোদেলা বই পড়ছে এখন
‘ক’ দিয়ে হয় কলা
‘আমি কলা খাব’, মেয়ের
উচ্চকিত গলা।
সকল সময় কলা কি আর
থাকে সবার ঘরে?
রোদেলাকে এই কথাটা
বুঝাই কেমন করে?
‘বইতে যখন লেখা আছে
কলার বিবরণ
কলা না খাওয়ালে মেয়ের
কষ্ট পাবে মন।
পড়ার সঙ্গে অভিজ্ঞতার
থেকেও যাবে ফাঁক।
তার চে বরং পুষ্টিকর এ
ফলটা মেয়ে খাক।’
মায়ের কথায় মেয়েটা বেশ
ঝুলায় দেখি মাথা
মা ও মেয়ের বুদ্ধি যেন
একই সুতোয় গাঁথা।
কী আর করি পথে বেরোই
পাই যদি-বা কলা
কলা তো মিললো না, শুধু
সার হলো পথ চলা।
ফলপট্টি বাদ দিয়ে তাই
কাঁচাবাজার যাই-
শাস্ত্রে আছে, উড়াতে হয়
দেখলে পরে ছাই-
তাতেই নাকি মিলতে পারে
মাণিক-রতন-
আমি চাই সামান্য কলা
খাওয়ার মতন।
কাঁচাবাজার- পাকা কলা
পাওয়ার কথা নয়,
পাওয়া গেল কাঁচকলা, তো
তাতেই বলি, জ-য়।
বাসায় ফিরি- সবার তো খুব
খুশি হওয়ার কথা
কিন্তু কলার ফানা দেখে
হলো এর অন্যথা।
‘কত রকম কলা আছে
যেমন ধরো মর্তমান
সবরি চাটিম কানাইবাঁশি
মর্ত্যভোগও বর্তমান।
পাহাড়ি বা সিঙ্গাপুরি
আর কাঁঠালি কলা
স্বর্ণফলা চিনিচম্পা
কতই তো যায় বলা!
কাবুলি বা দয়াকলা
চম্পা সাগর বিচি
সে-সব রেখে আনলে কী-না
কাঁচকলাটাই- ছিছি!
কাঁচকলা কেউ খায় কি কাঁচা?
পাকিয়ে তবে খায় ।’
‘চুলায় চড়াও!’ কথা শুনে
সক্কলে চমকায়।
‘পাকালে কি থাকবে কলা?
তখন তো তরকারি!’
‘স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যে
তা-ও তো দরকারি।’
‘দরকারি হোক, তরকারি এ
কে বলেছে কলা?’
‘কলাকে কি কলা তবে
আর যাবে না বলা?’
রোদেলা এই সমস্যাটার
করল সমাধান
জানালো সে কলার প্রতি
এখন তো নেই টান।
‘খ’-তে নাকি লেখা আছে
ভালো খাবার ‘খই’;
এখন আবার যাচ্ছি বাজার
দে-খি মেলে ক-ই?