কুতুবদিয়ার উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের মগলাল পাড়া সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষি জমিতে লবণ চাষ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্ট সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। মগলাল পাড়া গভীর নলক’প সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার নেছার উদ্দিনের এক রীট আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি কামরুল ইসলাম ছিদ্দিকী ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল এর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।
শুষ্ক মৌসুমে গভীর নলক’পের সাহায্যে পানি সেচের মাধ্যমে পতিত কৃষি জমিকে সেচের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধূরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সুপারিশের ভিত্তিতে উপজেলা সেচ সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ‘‘মগলাল পাড়া গভীর নলক’প সেচ প্রকল্প” গ্রহণ করা হয় এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের অর্থায়নে প্রায় ৫৪.০০ (চুয়ান্ন) লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০১২-২০১৩ অর্থবৎসরে গভীর নলক’প স্থাপন করা হয়। মগলাল পাড়া এলাকার বি, এস- ৯৪২৯ দাগ হতে ১০৩৮২ দাগের প্রায় ৭০ একর কৃষি জমি উক্ত সেচ প্রকল্পের আওতাভূক্ত।
মগলাল পাড়া সেচ প্রকল্পের নলক’প স্থাপনের পর বিগত ২০১৫ সালের সেচ মৌসুমে এলাকার কতিপয় বিশৃংখলাকারী পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বিধায় সুষ্টভাবে সেচ কার্যক্রম সম্ভব হয়নি। বর্তমান সেচ মৌসুম শুরু হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে উক্ত ব্যক্তিগণ প্রকল্প এলাকার সেচ নালা ভেঙ্গে ফেলে এবং সেচের জমিতে লবণ উৎপাদনের জন্য লবণ পানি প্রবেশ করায়। ফলে সরকারের নেওয়া প্রকল্পটি শুরুতেই হুমকির মূখে পড়ে। এব্যাপারে প্রকল্প ম্যানেজার এবং বিএডিসির পক্ষ হতে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষকে যথাসময়ে অবহিত করার পরও প্রভাবশালী মহল সেচ এলাকায় লবণ উৎপাদন কার্যক্রম এর অপচেষ্টা চালাতে থাকে। পরবর্তীতে মগলাল পাড়া গভীর নলক’প প্রকল্প এলাকায় লবণ পানি প্রবেশ করানো এবং লবণ উৎপাদনের উপর নিষেধাঞ্জার প্রার্থনায় প্রকল্প ম্যানেজার জনাব নেছার উদ্দিন মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন নম্বর-৩৪৮/২০১৬ দায়ের করেন। মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি কামরুল ইসলাম ছিদ্দিকী ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল এর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ উক্ত রীট পিটিশন শুনানী শেষে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল নীশি জারী করেন এবং উত্তর ধূরুং মৌজার বি, এস- ৯৪২৯ হতে ১০৩৮২ দাগের আন্দর ৭০ একর জমি নিয়ে গঠিত “মগলাল পাড়া গভীর নলক’প সেচ প্রকল্প” এলাকায় লবণ পানি প্রবেশ করানো এবং লবণ উৎপাদনের চেষ্টা বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় ও পুলিশ সুপার মহোদয়, কক্সবাজার এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কুতুবদিয়াকে নির্দেশ প্রদান করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দু’জন জনপ্রতিনিধি জানান মহামান্য হাইকোর্টের উক্ত নির্দেশনার খবর পেয়ে মগলাল পাড়ার কৃষকদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসে।