দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গেল ৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে জেলা আওয়ামীলীগের এ সম্মেলন ২৮ জানুয়ারী ঘোষণা করলেও তা ২ দিন পিছিয়ে ৩১ জানুয়ারী নির্ধারন করা হয়েছে। সম্মেলন ঘোষণায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উৎসব মুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। আর প্রার্থীরা রাতের ঘুম হারাম করে রাতদিন বিভিন্ন কাউন্সিল ও উপজেলায় গিয়ে ব্যস্ত সময় করছেন। আর উপজেলা ও জেলা শহরে ব্যানার পেস্টুনে ছেয়ে গেছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাউন্সিলরদের কাছে ও প্রচারণায় তুমুল প্রচারনা চালাচ্ছেন। এরিই মধ্যে সম্মেলনের মাত্র ৬ দিন আগে সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এডভোকেট ফখরুল ইসলাম গুন্দু সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করেছে। আবার ইতিমধ্যে মাঠে ময়দানে নানা গুন্জন শোনা যাচ্ছে আদৌ কি সম্মেলন হবে কিনা। সুত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০০৩ সালের ২০ডিসেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কে এম মোজাম্মেল হক সভাপতি ও সালাহ উদ্দিন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৫ সালের ২৭ মে এ কে এম মোজাম্মেল হক মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান সহসভাপতি এ কে আহমদ হোসাইন। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ কে আহমদ হোসেন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আগামীতে আওয়ামীলিগের নেতৃত্ব গ্রহণে ইচ্ছুক বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একে আহমদ হোসেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী। চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আলম, রাশেদুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদ ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এডভোকেট ফখরুল ইসলাম গুন্দু প্রমুখ নেতারা। এদিকে খবর নিয়ে জানা গেছে, নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্মেলনের তারিখ চুড়ান্ত করাই দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সর্বস্তরের নেতারা মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। যার ফলে নেতারা এখন কাউন্সিলর মূখী হয়ে পড়েছেন। ফলে কদর বেড়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের তুমুল আগ্রহ বেড়েছে। আগামি ৩ বছরের জন্য কাদের হাতে জেলার নেতৃত্ব তুলে দিতে চায় কাউন্সিলরা তা এখন দেখার বিষয। তবে সকলেই চায় দলকে চাঙ্গা রাখতে যাকে প্রয়োজন তাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিতে। তবে কয়েকটি উপজেলায় কাউন্সিলর তালিকা নিয়ে অসঙ্গতি থাকায় সকলের মাঝে হতাশাও রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করার প্রচারণায় রয়েছেন। ইতোমধ্যে সভাপতি প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ কে আহমদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডঃ সিরাজুল মোস্তফা, কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, শাহ আলম চৌধুরী ও জাফর আলম। সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জন প্রার্থী প্রচারণায় রয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রচারণা চালাচ্ছেন কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষযক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাশেদুল ইসলাম, রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল ও সর্বশেষ লাইমলাইটে এসে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষনা দেয়া সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট ফখরুল ইসলাম গুন্দু। জেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতা ও তথ্য সুত্রে জানা গেছে, এখনো কাউন্সিলর তালিকা চুড়ান্ত হয়নি। ইতোমধ্যে সবকটি উপজেলা ও সাংগঠনিক উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ কমিটির অনুমোদন দেয়নি জেলা আওয়ামী লীগ। যার ফলে এত স্বল্প সময়ে সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়াও ইতোমধ্যে কয়েকজন প্রার্থী টাকার খেলায় মেতে উঠেছেন বলে জানা গেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যে কোন মূল্যে ৩১ জানুয়ারীই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে সম্মেলন স্থল ও ভিআইপিদের থাকার যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডঃ এ কে আহমদ হোসেন জানান, সম্মেলনের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। অতিথিরা ৩০ জানুয়ারি কক্সবাজার চলে আসবেন। তিনি শান্তিপূর্ন ও সকলের অংশগ্রহনে সম্মেলন সফল করার জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মিদের আহবান জানান।