চকরিয়ায় কোচিংয়ের টাকা না দেওয়ায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
২৯২
বার পড়া হয়েছে
বিশেষ পাঠদানের নামে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের জন্য সরকারের কড়া নির্দেশনা থাকলেও কক্সবাজারের চকরিয়ার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের শহীদ আবদুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তা মানছেন না। বিশেষ পাঠদানের নামে ৬০০ টাকা করে বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট থেকে নবম শ্রেণির অন্তত ১২০ জন ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে আদায় করতে না পেরে তাদেরকে নিয়মিত ক্লাসও করতে দিচ্ছে না। এমনকি গতকাল বৃহস্পতিবারসহ তিনদিন ধরে নিয়মিত ক্লাস করতে গেলেও এসব শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বের করে দেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অনেক অভিভাবক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও মৌখিকভাবে জানিয়েছেন গতকাল বৃহস্পতিবার।
নবম শ্রেণির ছাত্র মোজাফ্ফর আহমদ, আবু তাহের, তৌহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফসহ বিভিন্ন শ্রেণির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী দৈনিক কক্সবাজারকে জানায়, প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফা বিদ্যালয়ে বিশেষ ক্লাস বা পাঠদানে বাধ্য করে আসছিল শিক্ষার্থীদের। বিপরীতে প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছিল ৬০০ টাকা করে। কিন্তু যেসব শিক্ষার্থীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়, তাদেরকেও একই পরিমাণ টাকা দিতে চাপ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ক্লাসের এ ধরণের গরীব পরিবারের অন্তত ১২০ জন ছাত্র-ছাত্রী টাকা দিতে না পারায় গত তিনদিন ধরে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিচ্ছে, নিয়মিত ক্লাসও করতে দিচ্ছে না।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ এলাকার অভিভাবকেরা জানান, অনেক আবেদন-নিবেদনের পর সরকার তিনবছর আগে দুর্গম বমু বিলছড়ি ইউনিয়নে একমাত্র বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে। এর পর থেকে প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফা নানা অনিয়ম-দুর্নীতির হাট বসায়। এমনকি গতবছরের অক্টোবর মাসে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রাণি করার সময় এলাকার লোকজনের হাতে ধরা পড়ে সে। বিষয়টি জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ পর্যন্ত গড়ালে শেষতক ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে ঘরে তুলে।
বক্তব্য নেওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অরূপ চাকমার ব্যবহৃত মুঠোফোনে অসংখ্যবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাহেদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘এলাকার অভিভাবকেরা এ বিষয়ে আমাকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন। এর পর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখভাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনতগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে কয়েকদিন আগে অভিভাবক সমাবেশ হয়েছে। ওই সমাবেশে যেসব শিক্ষার্থীর বাবা অথবা মা উপস্থিত হননি তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়।’ বিশেষ পাঠদানের নামে কোন টাকা নেওয়া হচ্ছে না বলেও তিনি দাবি করেন।