চকরিয়া পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের দিগরপানখালী এলাকায় মাতামুহুরী নদীতে পাম্প মেশিন বসিয়ে প্রকাশ্যে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র গত কয়েকমাস ধরে এভাবে বালু উত্তোলন চালিয়ে আসলেও প্রশাসন এব্যাপারে কোন ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থার কারনে বর্তমানে নদীর তীরবর্তী এলাকার ক্ষেত্রপাল মন্দির ও আশপাশের জনবসতি নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কায় পড়েছে।
ইতোমধ্যে স্থানীয় এলাকাবাসি বালু লুটে জড়িত ৭জনকে অভিযুক্ত করে গত ২ ফেব্রুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে দিগরপানখালী পুকপুকুরিয়া গ্রামের মোহাম্মদ সফি, নুরুল কবির নুরু, মনির আহমদ, বদরুল ইসলাম, রফিক, নির্মল কান্তি দাশ ও ছৈয়দ সওদাগর। লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন স্থানীয় বাসিন্দা সফর মুল্লক, শাহআলম, নাছির উদ্দিন, নান্টু মহাজন ও সুরজিৎ মহাজন নামের পাঁচ ব্যক্তি। ওইদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম অভিযোগটি আমলে নিয়ে বালু লুটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারি কমিশনারকে (ভুমি) নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রশাসনের কোন ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়ায় অভিযোগটি দেয়ার পর থেকে এখনো নদীর ওই পয়েন্ট থেকে দিব্যি বালু উত্তোলন করে আসছে অভিযুক্তরা।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.রফিকুল হক বলেন, দিগরপানখালী এলাকায় মাতামুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। এব্যাপারে আজকালের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে জানা গেছে, পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের দিগরপানখালী ক্ষেত্রপাল মন্দির এলাকায় মোহাম্মদ সফি নামের একব্যক্তির নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র মন্দিরের পাশে মাতামুহুরী নদীতে পাম্প মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে তা নদীর তীরে ভরাট চরে মজুদ করছেন। পরে সেখান থেকে প্রতিদিন অন্তত ৪০-৫০টি পিকআপ ট্রাকে করে এসব বালু বিক্রি করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, বালু উত্তোলনে জড়িতরা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন। এ কারনে প্রশাসন সহজে তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। এ অবস্থার ফলে গত কয়েকমাস ধরে তাঁরা নদীতে পাম্প মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু উত্তোলনের কারনে তলদেশ গভীর হয়ে পড়ার ফলে নদীর তীরে অবস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় প্রতিষ্টান ক্ষেত্রপাল মন্দির ও আশপাশ এলাকার বিপুল জনবসতি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোহাম্মদ সফি জানান, এলাকার নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ২২টি পরিবারের বসতভিটা ভরাটের জন্য নদীতে পাম্প মেশিন বসিয়ে এভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব পরিবারের ভিটা ভরাটের পাশাপাশি কিছু বালু বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি।