চকরিয়ায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
৩২৭
বার পড়া হয়েছে
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারী বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়–য়া স্কুলছাত্রী জন্নাতুল নঈমের (১২)। সেই হিসেবে বৃহস্পতিবার মেহেদী অনুষ্ঠানের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু বিয়ের পরিণত বয়স (১৮) দেখানোর জন্য মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য গেলে বাঁধ সাধেন চেয়ারম্যান নিজেই। এর পরও নাছোড়বান্দা মা-বাবা জন্ম নিবন্ধন সনদ আদায়ের জন্য নেতৃস্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছেও ধর্ণা দেন। একপর্যায়ে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কান পর্যন্ত পড়ালে বাল্যবিয়ের আয়োজনটি বন্ধের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেন। এরই প্রেক্ষিতে ইউএনওর নির্দেশনা পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে বাল্যবিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেন। এর পরও আদেশ অমান্য করে বাল্যবিয়ে দেওয়া হলে মা-বাবাকে কারাদন্ড দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেন চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, স্কুলছাত্রী জন্নাতুল নঈমের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর নুনাছড়ি গ্রামে। সে ওই গ্রামের জহির আলমের কন্যা এবং উত্তর হারবাং জুনিয়র হাইস্কুলের ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়–য়া ছাত্রী। জন্নাতুল নঈমের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন বরইতলীর খয়রাতি পাড়ার কামাল উদ্দিনের পুত্র কুতুব উদ্দিনের।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহমদ বাবর দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন, ‘মাত্র ১২ বছরের হলেও ওই স্কুলছাত্রীকে বিয়ে দেওয়ার জন্য কয়েকদিন আগে আমার কাছে আসে বয়স বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে। কিন্তু আমি মা-বাবাকে বলেই দিয়েছি, কোন অবস্থাতেই বয়স বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেওয়া। এমনকি অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমেও তদবির করে সনদ নিতে। আজ (গতকাল) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় আমাকে নির্দেশ দেন এই বিয়ের আয়োজন বন্ধ করতে। সেই অনুযায়ী আমি বাড়িতে গিয়ে ছাত্রীর মা-বাবাকে কড়া নির্দেশনা দিয়ে এসেছি।’
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ খবর পাওয়া মাত্রই এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহমদ বাবরকে পাঠিয়েছি। এর পরও যদি বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতেও ছাত্রীর অভিভাবক মা-বাবাকে কারাদন্ড দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।’