কক্সবাজার রিপোর্ট :
শহরের নুনিয়ারছড়ার শমসু মাঝির ছেলে সৈয়দ করিম (৩৭)। তিনি পুলিশ হেডকোয়াটারের তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় ২ টি ও টেকনাফ থানায় ১ টি মানবপাচার মামলা রয়েছে। এছাড়া ১০ টির বেশী অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় ভিকটিমদের জবানবন্দীতে মানবপাচারে সৈয়দ করিমের সংশ্লিষ্ঠতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু চিহ্নিত ওই মানবপাচারকারীকে নির্দোষ দাবী করে আদালতে চার্জশীট দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
সৈয়দ করিমের মতো অনেকেই এভাবেই বাদ পড়েছেন চার্জশীট থেকে। কক্সবাজার শহরের চিহ্নিত মানবপাচারকারীদের নির্দোষ দাবী করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করছেন।
একই এলাকার আবুল কাশেম প্রকাশ কাশেম মাঝির ছেলে আজিজ (৩৮)। তিনিও পুলিশের তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী। এছাড়া রয়েছে মানবপাচারে সংশ্লিষ্ঠ থাকার অসংখ্য অভিযোগ।
মহেশখালির থানার একটি মামলার তদন্তে ভিকটিম ও আটক আসামী জবানবন্দীতে আজিজের সংশ্লিষ্ঠতার কথা উল্লেখ করেছেন । এরই তদন্ত রিপোর্ট চাইলে সদর থানা পুলিশ তাকে নির্দোষ দাবী করে রিপোর্ট প্রদান করে। অথচ একটি মামলায় সদর থানা পুলিশেই তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীটও দিয়েছেন। এভাবেই তদন্ত কর্মকর্তারা নানা ভাবে প্রভাবিত হয়ে তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারীদের নিদোর্ষ প্রমানিত করছেন। অভিযোগ রয়েছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পাচারকারীদেরর রক্ষা করছেন।
সদর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, আজিজ ও সৈয়দ করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় উদ্ধার হওয়া ভিকটিম ও আটক হওয়া আসামীরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। এছাড়া আজিজের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৯ জুনে ২৫ নম্বর মামলায় চার্জশীট প্রদান করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে মহেশখালির একটি মামলায় তাকে নির্দোষ দাবী করে প্রতিবেদন দাখিলকারী কক্সবাজার সদর থানার এ এসআই খোরশেদ জানান, তিনি অনুসন্ধান করার সময় আসামীদের এলাকায় গিয়েছেন। এছাড়া সদর থানার কম্পিউটার সার্চ করেছেন। কিন্তু আজিজের বিরুদ্ধে কোন কিছুই পাননি।
সৈয়দ করিম পুলিশের তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের তদন্তাধীন মামলায় তার পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ঠতা প্রমানিত হয়েছে। অপর মামলায় সিআইডি তাকে নির্দোষ দাবী করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৯ জুনে ২৫ নম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ( অর্গানাইজড ক্রাইম (ঢাকা) ’র ওসি রওশন আরা বেগম । চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে, সৈয়দ করিম ফেরি করে মাছ বিক্রি করে। ওসি মানবপাচারের তালিকাভুক্ত ওই আসামীর সাথে কথা বলেছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে। যদিও বা সৈয়দ করিম কখনো আটক হয়নি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে সৈয়দ করিম ঘটনার দিন খুরুশ্কুলে মাছ বিক্রি করছিল।
এ বিষয়ে এডভোকেট অরূপ বড়–য়া তপু জানান, এটি দুর্বল তদন্ত। শুধুমাত্র আসামীর কথায় চার্জশীট থেকে আসামীর নাম বাদ দেওয়া যায়না। তাছাড়া ওই আসামীর বিরুদ্ধে আরো একাধিক মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র ওসি রওশন আরা বেগম জানান, তিনি তদন্ত করে যাই পেয়েছেন চার্জশীটে তাই দিয়েছেন।