চুপকথা : সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক মদদ বন্ধ করা প্রয়োজন
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৬
৩৫১
বার পড়া হয়েছে
মাতৃজঠর থেকে স্কুলের শিক্ষার্থী, কেউ এখন আর দেশে নিরাপদ নয়। ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস থেকে ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীরাও রক্ষা পাচ্ছেন না। গত ১৫ আগস্ট চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীতে একসাথে ক্ষমতাসীন দলের তিনজন নেতাকর্মী নিহত হন। এই সঙ্ঘাত ও সংঘর্ষ শুধু নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, শোক দিবসের নামে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিশুরাও এখন আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
চাঁদপুরের কচুয়ায় ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতাকর্মীরা একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকার ওপর চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা দিতে প্রধান শিক্ষক অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে মারধর করা হয়। এ সময় অপর একজন শিক্ষক তাকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও পিটুনি দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা এ খবর জানার পর স্বাভাবিক প্রতিবাদ করেছে। এ জন্য শিশু-কিশোর এই শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। এই মানববন্ধনে যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ৪০ শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। এর মধ্যে কয়েকজনের হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুরের এ ঘটনা সারা দেশে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির নামে যে অরাজকতা চলছে তার একটি উদাহরণ মাত্র। কার্যত দেশে এখন জবরদস্তিমূলক অর্থ আদায়ের মচ্ছব চলছে। ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যত মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দমনপীড়ন ও অত্যাচার চালানোর জন্য এদের ব্যবহার করার পর এরা এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে।
সারা দেশে এ ধরনের সন্ত্রাসীদের ভয়ে মানুষ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। আশার কথা হলো, চাঁদপুরের এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুলালচন্দ্র আর শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে। ক্ষমতাসীন দলের এই সন্ত্রাসীরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা শিশু-কিশোরদের ওপরও হামলা করছে।
সন্দেহ নেই, এসব সন্ত্রাসীর পেছনে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের সমর্থন আছে বলেই তারা এ ধরনের অপকর্ম করার সাহস পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, চাঁদাবাজি ও শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার এসব অপকর্মের দায় ক্ষমতাসীন দলকে নিতে হবে।
আমরা মনে করি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শুধু কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের ঘটনার অবসান হবে না। যারা এসব সন্ত্রাসীকে মদদ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। আর বন্ধ করতে হবে সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা।