1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
“ছন্দ পতন” - Daily Cox's Bazar News
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

“ছন্দ পতন”

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০১৬
  • ৩৮৪ বার পড়া হয়েছে

আজগর আলী রুটিন পেপার হাতে নিলো। তাতে চোখ রাখলো । তার নামের পাশের ঘর গুলো দেখছে । পঞ্চম থেকে অষ্টম পর্যন্ত এক টানা চার পিরিয়ড। এটা কি করে সম্ভব! একটানা চার পিরিয়ড কি ভাবে চালাবে । আস্তে আস্তে রুটিন পেপারটা টেবিলের উপর রাখলো।

নতুন বছর এলেই আজগর আলী ভয়ে থাকে। ভয়ে থাকার অবশ্য কিছু কারণ আছে সেগুলো হলোঃ- ক. নতুন ক্লাস রুটিন। খ. বিষয় পরিবর্তন। গ. শ্রেণী পরিবর্তন (ডিমোশনের ভয়ে)।

এ ছাড়াও ছোট খাটো আরো কিছু বিষয় থাকে । এগুলো বলাও যায় না আবার সওয়াও যায় না। এর মধ্যে অন্যতম হলো মাথার উপর জুনিয়র কাউকে বসিয়ে দেয়া। এ সকল ক্ষেত্রে নিশ্চিন্ত থাকতে হলে কিছু করণীয় আছে। সে গুলো হলোঃ ক. হেড মাষ্টারের সাথে জ্বী হুজুর ভালোবাসা। খ. বিশেষ (?) কারো সাথে অন্তরঙ্গতা । গ. দলীয় পাওয়ার ফুল লোকদের সাথে উঠাবসা। ঘ. বস স্টাইলের টিচারের খাতা মূল্যায়ন নিজ কাঁধে তুলে নেয়া। ঙ. পরিচালনা কমিটির বিশেষ (?) কারো দোয়া পাওয়া।

মোটামুটি বছরের শুরুতে এগুলোর যে কোন একটা একাউন্টে থাকতে হয় । তা হলে ভয় নামক ভয় নামক ভাঙ্গা সেতু বিদ্যুতের মত পার হওয়া যায়। আজগর আলীর ভাগ্যে এর কোনটাই জোটেনা। তাই বছরের শুরুতে আজগর আলী ভয়ে ভয়ে থাকে ।

এই যে স্যার! কেমন আছেন ?

মিরাজুল হক আজগর আলীর দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন।

জ্বী । আলহামদুলিল্লাহ । আজগর আলী মোছাফ্হা করতে করতে বললেন।

কোন বিষয় নিয়ে ভাবছেন মনে হয় স্যার?

না তেমন কিছু না।

রুটিন ওপেন করেছে নাকি!

হ্যাঁ ।

দেখি। আমাকে কি ঘন্টা দিলো।

কথাটা বলেই মিরাজুল হক রুটিন পেপার হাতে নিলেন । নিয়ে চোখ বুলালেন । নিজের ক্লাসের দিকে। এক পর্যায়ে বলে উঠলেন ;এটা কি রুটিন করলো? আজগর আলী কছু বললোনা। চুপ করে থাকলো। আরে! আপনাকে কি করলো স্যার! এক সাথে চার পিরিয়ড। আপনি কিছু বলেন নি স্যার ?

কি বলবো ?

দেখি। চলেন । এটা কি রুটিন হলো।

মিরাজুল হক রুটিন পেপার নিয়ে হেড মাস্টারের রুমের দিকে চললো। আজগর আলী আস্তে আস্তে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।

দুই.

পত্রিায় চোখ বোলাচ্ছে আজগর আলী ।

এক স্থানে তার চোখ আটকে গেল। নিউজটা পড়লো।

ন্উিজটা হলো;শৈত্য প্রবাহ চলছে। পঁয়তাল্লিশ বছরের মধ্যে তাপমাত্রা সর্বনিন্মে । তিন ডিগ্রীর নিচে…।

আজগর আলী নিউজটা মন দিয়ে পড়লো। তার মনে কিছু প্রশ্ন তৈরী হলো। প্রশ্ন গুলো হলো; ক. দ্বিতীয় তাপমাত্রা কত ছিলো? খ. সেটা কোথায় ছিলো? গ. তা কে রেকর্ড করেছে? ঘ. …? ঙ. …?

কি আশ্চর্য ! এত প্রশ্ন আসছে কেন ? আজগর আলীর কি কোন পরিবর্তন হচ্ছে ? হলে কোথায় ? সেটা কি ? কি ভাবে হচ্ছে?

আস্সালামু আলাইকুম । ভালো আছেন স্যার?

আজগর আলী ঘাড় ফিরালো। সালামের জবাব দিলো। মিরাজুল হক একটা ছাপানে কাগজ এগিয়ে ধরে বললেন ;স্যার ! এটা পড়েন। আন্দোলনের কর্মসূচী আছে এতে।

কিসের আন্দোলন ? আজগর আলী পেপার নিতে নিতে বললো । শিক্ষকের । দাবী দাওয়া আদায়ের । ভাতা বৃদ্ধিও । ও আচ্ছা। রুটিন চেঞ্জ হয়েছে স্যার?

করবে বললো।

ঠিক আছে । না করলে আমি দেখাবো । আমাকে বললেন । আচ্ছ, বলবো । মিরাজুল হক রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। আজগর আলী ছাপানো পেপার টা পড়তে লাগলো।

“ ১০ জানুয়ারী ২০১৩ খ্রিঃ থেকে লাগাতার…।”

তিন.

স্যার ! আপনি যাচ্ছেন তাহলে । একজন বললেন ।

আজগর আলী ভাবছে । না বলবে কি ভাবে । পৃথিবীতে না বলাটা খুব একটা সহজ কাজ না।

শুধু যাবেন। চুপচাপ বসে থাকবেন। ব্যাস। হেড মাস্টার শরাফত আলী সহজ স্বরে কথাটা বললেন। উনাকে বাদ রাখলে হয় না। তা ছাড়া এখানে টি.আর দের যাওয়া প্রয়োজন । যেহেতু প্রতিনিধি নিয়ে কথা হচ্ছে । টি.আর যারা হন তারা সব কিছুতেই সামনে থাকবেন । সুখে দুঃখে । মিরাজুল হক শান্তভাবে কথা গুলো বললেন। আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন? নাম্বার ওয়ান টি.আর কটকটে কন্ঠে কথাটা বলে উঠলেন । সরি স্যার! আমরা শিক্ষকদেরকে বোঝাই না। ছাত্রদের কে বোঝাই। মিরাজুল হক মুচকি হেসে বললেন। “ সুখে দুঃখে ” বলে যা বলছেন তার একটা ব্যাখ্যা আসা প্রয়োজন। টি.আর নাম্বার টু কথাটা বললেন। সুখে বলতে সংবর্ধনা স্টেজ ,মাইক্রো ফোন , বিশেষ (!) কোন সুযোগ সুবিধা । আর দুঃখে বলতে আন্দোলন সংগ্রাম ,দাবী আদায় । এ ধরণের বিষয় বোঝালে কি খুব কম বোঝানো হবে। মিরাজুল হক স্পষ্ট বচনে বলে উঠলেন। দেখুন মিরাজ সাহেব। সহ্যের একটা সীমা থাকে। টি.আর নাম্বার টু বলে উঠলেন রাগত স্বরে। এভাবে কথা চললে মিটিং এ বসা সম্ভব না। কথাটা বলেই টি.আর নাম্বার ওয়ান চেয়ার ছেড়ে উছে দাঁড়ালেন কেন? একজন শিক্ষক বলে উঠলেন উঠবো নাতে কি বসে বসে অপমান হবে নাকি ! টি.আর নাম্বার ওয়ান বললেন।

আপনাকে মিরাজ সাহেব অপমানের কি বলছেন? যেটা সত্য সেটাইতো তিনি বললেন। অন্য একজন শিক্ষক বললেন। ঠিক আছে শরাফত সাহেব । আপনি মিটিং করেন। বেয়াদব কতগুলো নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন। কথা বলা পর্যন্ত শেখেনি। বাংলা স্যার ! আপনার কাউকে খারাপ বলতে চাইলে বলেন। কিন্তুু বেয়াদব কতগুলো বলে কি বোঝাচ্ছেন? এ শব্দের জন্য আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে। আমির স্যার দাঁড়িয়ে কথাটা বললেন। পুরো মিলয়াতন হৈ হুলুড়ে ভরে উঠলো। হেড মাষ্টার শরাফত আলী দাঁড়িয়ে চুপ করার জন্য কয়েকবার বললেন । তাঁর কথায় কেউ কান দিচ্ছে না।

আজগর আলী কি করবে বুঝতে পারছে না। কাউকে কিছু না বলে আস্তে করে বের হওয়া যায়। সেটা কি ঠিক হবে! সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। মিলনায়তের সামনে ছাত্র- ছাত্রীরা জড় হয়ে আছে। তিনি আস্তে করে উঠে তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। স্যার ! অফিসে কি হয়েছে ? ছাত্র -ছাত্রীরা আাজগর আলীর কাছে জানতে চাইলো । কি উত্তর দেয়া যায় সেটা তার মাথায় আসছে না। একজন একজন করে শিক্ষক মিলনায়তন থেকে উত্তেজিত ভাবে কথা বলতে বলতে বের হচ্ছে। তিনি ছেলে মেয়েদের উদ্দেশ্য করে বললেন;চলো । মাঠে যাই। ছাত্র ছাত্রীরা তার সাথে চলতে লাগলো।

চার.

আজগর আলী বসে আছে।

নিচে কালো রাজপথ । এর উপর পত্রিকা বিছিয়ে নিয়েছেন। তার সাথে আরো অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা। তারা অনেকে বিছানা চাদর বিছিয়ে বসে আছেন। শিক্ষিকারা এ ক্ষেত্রে এডভান্স । দূরে বক্তৃতা চলছে। বক্তৃতা গুলোকে কি বলা যায় বুঝতে পারছে না আজগর আলী। মনে হচ্ছে বসা লোকগুলো ছাত্র ছাত্রী । দাঁড়ানো ব্যক্তি টিচার। তাদের কর্মসূচীর নাম আমরণ অনশন। বাংলা চলিত ভাষায় না খেয়ে মরা । দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত না খেয়ে থাকা। আজগর আলী বুঝতে পাছে না। না খেয়ে মরার দরকার কি? একটু ভালো খাওয়া দাওয়া ভাবে বেঁচে থাকার আশায় দাবী দাওয়া আদায়ের আন্দোলন এটা । এখানে না খেয়ে মরে গেলে দাবী আদায় হলে সেগুলো খাবে কে? খাওয়ার দাবী আদায় না খেয়ে আদায় করতে হবে কেন? বিকল্প কোন কর্মসূচী কি কারো মাথায় নেই? আজগর আলী ভাবছে । এর বিকল্প কি কি কর্মসূচী হতে পারে।

এক. ছাত্র ছাত্রী সহ স্কুলের সামনে শিক্ষকরা বসে থাকা।

দুই. রাস্তার পাশে লাইন ধরে বসে থাকা। ছাত্র ছাত্রী সহ একটা পে কার্ডে লেখা থাকবে, “ আপনার আগামী দিনের শিশুর শিক্ষা গুরুত্ব কথা কেউ না ভাবলেও আপনি ভাবুন ।

তিন. সারা দেশে লিফলেট বিতরণ। এজন্য হেলিকপ্টার রুপে কাজ করবে ছাত্র ছাত্রীরার ।

চার. প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ,পৌরসভার চারপাশে ছাত্র ছাত্রী নিয়ে বসে থাকা।

পাঁচ. …।

আজগর আলীল মাথায় এক এক করে খসড়া কর্মসূচী আসছে। একটা সমস্যা অবশ্য লোকজন সৃষ্টি করতে পারে।

সেটা হলো ছাত্র ছাত্রীর বিষয়টা । ছাত্র ছাত্রী দাবী আদায়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এতে।

অবশ্য ছাত্র ছাত্রী তো শিক্ষক পরিবারের প্রদান সদস্য । তাদেরকে যদি মন্ত্রী, এমপিদের ফুল ছিটানোর কাজে ব্যবহার করা যায় তা হলে শিক্ষকদের সাথে বসে থাকতে সমস্যা কোথায়? কি স্যার! খারাপ লাগছে? পাশে বসা মিরাজুল হক বললেন । না তেমন না। একটু হেসে বললো আজগর আলী।

বেশী খারাপ লাগলে এদিক ওদিক থেকে একটু ঘুরে আসুন । না লাগবে না।

দুপুরের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী আসবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাই নাকি !

সব শোনা কথা।

না এলে কি করবে?

বুঝতে পারছিনা। তবে শিক্ষামন্ত্রী না এলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশ পাঠাবে ।

কি বলছেন! আমরা তো কারো কোন সমস্যা করছি না। চুপ চাপ না খেয়ে বসে আছি।

না খেয়ে যাতে না মরেন সে জন্য পুলিশের লাঠি চার্জ ,টিয়ারশেল খাবেন। এরপর হাসপাতালে যাবেন। গনতান্ত্রিক (!) সরকারের গনতন্ত্রেও (!) নমুনা না দেখে রাজধানী ছাড়বেন। এটা কি করে হয় । ভাগ্য ভালো হলে কবরে স্থান হবে শহীদ (!) রুপে। মিরাজ সাহেব ! আপনার কি মন খারাপ?

না রে ভাই! মন বলে কিছু আছে কিনা তাই জানিনা। তার আবার ভালো খারাপ। আপনি ভাই আমার চেয়ে ভাগ্যবান । কোন দিক থেকে? আপনি দেখেন, শোনেন। ভালো মন্দ বোঝেন। এরপর ভালো কে ভালো মন্দ কে মন্দ অকপটে বলে ফেলেন। আমি ও দেখি,শুনি । ভালো মন্দ বুঝি। কিন্তুু আপনার মত সাহস করে সত্য উচ্চারণ করতে পারিনা। এদিক থেকে আপনি ভাগ্যবান। সবাই আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটাও নিশ্চই সৌভাগ্যের লক্ষণ। কি বলেন আজগর আলী? মিরাজুল হক তিক্ষè কন্ঠে বললেন ।

ঝাঁপিয়ে পড়লেও আপনার কোন ক্ষতি তারা করতে পারবে না। সত্য প্রকাশের প্রচন্ড সাহসের কাছে তারা কাপুরুষের মত পলায়ন করে । হেরে যায়।

তাই নাকি।

হ্যাঁ । সাময়িক আপনাকে আটকানোর চেষ্টা করে। কষ্ট দেয়। কিন্তুু আপনার গতি থামাতে পারবে না। যেখানেই তারা আপনাকে আঘাত করবে সেখানেই আপনি বিজয়ী হবেন। একটু আগে আর পরে। পৃথিবীর সাহসী মানুষ যারা, তারা সবাই সত্যভাষী ছিলেন। আছেন। থাকবেন। আজগর সাহেব! একটা পুলিশের গাড়ী এসেছে। এরপর হয় মন্ত্রী আসবে না হয় দাঙ্গা পুলিশ আসবে।

কি বলছেন ! হ্যাঁ । পুলিশের গাড়ি থেকে একজন ওয়ারলেসে কি যেন বলেছে। যা কিছুই হোক আপনি ঘাবড়াবেন না। শুধু আমাকে ফলো করবেন। সিটির অলি গলি আমার হাতের তালু।

আচ্ছ । পুলিশের লোকগুলো বক্তৃতা মঞ্চের দিকে এগুচ্ছে । সাথে সাথে একটা বিকট সাউন্ড হলো। সাথে ধোঁয়া । কি আর্শ্চয! কালার ধোঁয়া আসছে কোথা থেকে? আজগর আলী পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। চোখের সামনে লোকজন হুড়াহুড় শুরু করে দিয়েছে । একজন এসে আজগর আলীর উপর পড়লো। আজগর আলী রাস্তায় পড়ে গেলো। তার মনে হলেঅ সব লোকগুলো তাকে পায়ে পিষ্ঠ করে ফেলবে। মনে মনে কালেমা পড়তে লাগলো আজগর আলী।

পাঁচ.

আজগর আলী দৌড়াচ্ছে।

তার হাত একজন হাতে ধরা। কোন শব্দ শোনা যাচ্ছে না। তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আজগর আলী যাচ্ছে। কিন্তুু কোথায় যাচ্ছে । বুঝতে পারছে না। তার শরীর জ্বালা করছে । মনে কেউ মরিচের গুড়া ঘষছে তার শরীরে । আজগর আলী বসে পড়লো। অনেকটা ধাক্কা মেরে কেউ একজন তাকে কোথায় বসিয়ে দিলো। একটা কিসে যেন। আজগর আলী নিজের ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলো।

ছোট্ট একটা ধাক্কা । আজগর আলী বুঝলো। যেটাতে বসে আছে সেটা দুলছে। দুলছে নাকি চলছে? দুলুক আর চলুক আজগর আলী সেটা নিয়ে ভাবতে চাচ্ছে না। তার প্রার্থনা এখন শুধু গায়ের জ্বলুনী কমা।

ছয়.

আজগর আলী চোখ মেললো।

গায়ের জ্বালা একটু কম মনে হচ্ছে। কেমন একটু শীত শীত লাগছে।

আজগর আলীর সামনে তার সময়ের ছাত্রী অর্পনা। ছোট্ট চেহারা নিয়ে তাকে দেখছে। তার ঠোঁটে মিটি মিটি হাসি। আজগর আলী চোখ বন্ধ করে ফেললো । চোখ বন্ধ করার সাথে সাথেই তার কাছে সব বিষয় ক্লিয়ার হলো।

আজগর আলী বসে আছে একটা মার্সিডিজ গাড়ির এর পেছনে । সামনে অর্পনা। সে ড্রাইভ করছে। সে যে ছোট্ট চেহারার অর্পনাকে দেখেছে। তবে সেটা দেখছে গাড়ির মিররে। এখন কেমন লাগছে আজগর সাহেব? মিরাজুল হক বললো। জ্বী । ভালো । ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ উনাকে দিন । দৌড়ের মুখে উনি বললেন;স্যার ! আমার গাড়ীতে উঠুন । আমি একসময় আপনার স্কুলের ছাত্রী ছিলাম। আজগর আলী মিররে তাকালো। অর্পনার চোখে চোখ পড়লো। অর্পনা বলে উঠলো; স্যার! আজ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলাম। কেমন চালাচ্ছি স্যার?

আজগর আলী মুখে কিছু বললোনা। মনে মনে বললো।

মনের কথা বোঝে মনের ¯্রষ্টা। সে ¯্রষ্টা বুঝলেন। তিনিও মুখে কিছু বললেন না। মনে মনে বললেন । সে মনের কথা তিনি পাঠিয়ে দিলেন । পৃথিবীর দু’টি মনে। সে দু’টি মন ছাড়া আর কেউ সেটা বুঝলোনা।

অর্পনা মুচকি হেসে স্কেলেটারে চাপ হালকা বাড়িয়ে দিলো। গাড়ি তার চাকাকে পূর্বের চেয়ে আরো দ্রুত করে ফেললো।

লেখক: গোলাম সরোয়ার ,কবি ও গল্পকার।

বি.এ অনার্স ,এম.এ -বাংলা

২৪৬/৩ ,একাডেমী ,ফেনী।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications