সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের অনুপস্থিতিতেই দলের কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরশাদের বনানীর রাজনৈতিক কার্যালয় রজনীগন্ধায় রবিবার কো-চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের ও মহাসচিব হিসেবে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নিয়োগকে অনুমোদন দিয়েছে দলটির প্রেসিডিয়ামসভা।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের একাংশের মতামত উপেক্ষা করে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৬ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের অধিবেশনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এরশাদের বনানীর রাজনৈতিক কার্যালয় রজনীগন্ধাতে রবিবার বেলা পৌনে ১২টায় এই সভা শুরু হয়। বৈঠক চলে আড়াইটা পর্যন্ত। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আজকের সভায় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কর্তৃক নিয়োগকৃত জাপার কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য আমরা পার্লামেন্ট ও পার্লামেন্টের বাইরে ভূমিকা রাখতে চাই। এজন্য জাতীয় পার্টিকে তৃণমূল থেকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ১৬ এপ্রিল দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে এক মাসের মধ্যে ৪০ জেলার কাউন্সিল সম্পন্ন করা হবে।’
সংসদের বিরোধীদলের নেতা ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদপন্থীদের বয়কটের মধ্য দিয়ে এই বৈঠক চললেও এ বিষয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে এরশাদ আমাদের পিতার মতো। রওশন এরশাদ আমাদের মাতার মতো। উনি (রওশন এরশাদ) অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকায় আজকের বৈঠকে আসতে পারেননি।’
দলের মন্ত্রীদের মন্ত্রীত্ব ছাড়ার বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘প্রেসিডিয়ামের সদস্যদের সবাই প্রকৃত বিরোধীদলের ভূমিকা নিতে মন্ত্রীত্ব ছাড়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন পার্টির চেয়ারম্যান।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদপন্থীদের এই সভায় দলের ৩৭ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে ২২জন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির নবনিযুক্ত মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ সাত্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, গোলাম হাবিব দুলাল, আবুল কাশেম, এম এ মান্নান, শেখ সিরাজুল ইসলাম, সুনীল শুভরায় প্রমুখ।
বৈঠকে রওশন এরশাদ, সরকারে থাকা জাতীয় পার্টির তিন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মশিউর রহমান রাঙা, মুজিবুল হক চুন্নু, বিরোধীদলের চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশিদ, ফখরুল ইমামসহ দলের ১২ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। যারা দলে রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত।