দলের দীর্ঘ দিনের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকদের অন্তর্ভূক্ত করে গঠন করা হয়েছে রামু উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি। দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে লাখ-লাখ টাকার বাণিজ্য সিদ্ধ করতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক এই কারসাজির আশ্রয় নিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিকারের জন্য গত ২৮ মার্চ জেলা আওময়ামীলীগ সভাপতি/সম্পাদক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা। অপরদিকে কমিটিতে বাদপড়া নেতাকর্মীদের চাপা ক্ষোভ ও হতাশার মাঝে আগামীকাল ৩১ মার্চ চাকমারকুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা আয়োজন করা হয়েছে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতাকে কৌশলে মনোনয়ন বঞ্চিত করতে ইউনিয়ন কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের লোকদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার সামশুল আলম ও সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভুট্টু। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বরাবরে লিখিত অভিযোগে নেতাকর্মীরা চাকমারকুল ইউনিয়ন কমিটি গঠনে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সভাপতি ইউপি মেম্বার আব্দুর রহিমসহ ২০-২৫ জন উক্ত লিখিত অভিযোগে জানান, বিগত ২০১২ সালের কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন সামশুল আলম। ওই সময় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন কোম্পানীর সমন্বয়ে গঠন করা হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। উক্ত কমিটিতে যাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিল তাদের অনেকে বর্তমান কমিটিতে বাদ পড়েছেন। বাদ পড়াদের স্থলে বর্তমানে সৃজিত কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে জামায়াত-বিএনপির নেতা কর্মীদের। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নিতে সুপরিকল্পিতবাবে এই কাজটি করা হয়েছে। উপরন্তু, চাকমারকুলের পরিবর্তে রামুর সরওয়ার প্লাজায় আগামীকাল ৩১ মার্চ বিকাল ৩টায় বর্ধিত সভা আয়োজনও দূরভিসন্ধিমূলক বলে দাবী ভূক্তভোগীদের। তারা চাকমারকুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি সামশুল আলম ও সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভূট্টুর এসব অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণেরও আবেদন জানান। তারা দাবী করেন, বর্তমান সৃজিত কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে বিএনপি নেতা রফিক আহম্মদ সিকদারকে। অনূরূপভাবে কৃষি সম্পাদক করা হয়েছে বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হককে। বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে জামায়াত নেতা মনিরুল আলম সিকদারকে। যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক করা হয়েছে বিএনপি নেতা আলমগীর সিকদারকে। সদস্য হিসেবে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ, নুরুল হক, মোক্তার আহম্মদসহ অনেক বিএনপি-জামায়াতের লোককে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সৃজিত কমিটির ৩৭ নাম্বার ক্রমিকে জনৈক নুরুল আজিমের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির অনু-সাক্ষর রয়েছে। এমতাবস্থায়, জামায়াত-বিএনপির লোকদের বাদ দিয়ে প্রকৃত আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের অন্তর্ভূক্ত করে কমিটি গঠনের দাবী জানানো হয়। এ বিষয়ে প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হোসেন কোম্পানী অভিমত ব্যক্ত করেন, বিএনপি-জামায়াতের লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করলে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে জঠিলতার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ডেও বিঘœ সৃষ্টি হবে।