থেমে থেমে চলছে আষাঢ়ী ভারী বর্ষণ। বৃষ্টির তোড়ে নেমেছে পাহাড়ি ঢল। এতে প্লাবিত হচ্ছে কক্সবাজার শহরসহ কয়েক উপজেলার নিম্নাঞ্চল। শনিবার সন্ধ্যা থেকে থেমে চলছে বর্ষণ। এতে বেড়েছে চকরিয়ার মাতামুহুরি, ঈদগাঁওর ফুলেশ্বরী ও কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর পানি। ঢলের তীব্রতা বাড়তে থাকায় নামতে পারছেনা সমতলের বৃষ্টির পানি। ফলে পানি বন্দি হয়ে পড়ছে জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ।
অনেক স্থানে নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন পুন:মেরামত সম্ভব হয়ে না উঠায় সহজে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। প্লাবিত হচ্ছে কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা, বড়বাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া, খরুলিয়া, দরগাহপাড়া, পোকখালীর মধ্যম পোকখালী, নাইক্ষংদিয়া, চৌফলদন্ডী, নতুন মহাল, ঈদগাঁওর মাইজপাড়া, ভাদিতলা, ভোমরিয়াঘোনা, কানিয়ারছরা, ঈদগাঁও বাজার এলাকা, কালিরছড়া, রামুর উপজেলার ধলিরছরা, রশিদনগর, জোয়ারিয়ানালা, উত্তর মিঠাছড়ি, পূর্ব ও পশ্চিম মেরংলোয়া, চাকমারকুল, কলঘর, লিংকরোড়, চকরিয়ার উপজেলার ভাঙ্গারমুখ, ফাসিয়াখালী, মালুমঘাট, ডুলহাজারা, খুটাখালী, ফুলছড়ি, ইসলামপুর ও পেকুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা।
চকরিয়া পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানান, ভারী বর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে পানি বেড়েছে। ফলে পৌরসভার বিভিন্ন জনপদে বিশেষ করে নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ক্রমে বাড়ছে নদীর স্রোত।
তিনি বলেন, সোমবার সকাল থেকে উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার গ্রামীন জনবসতি, সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্টান, মসজিদ, মাদরাসা এলাকার খোলা জায়গায় জমে রয়েছে পানি। এতে ভোগান্তি বাড়ছে।
উপজেলার কোণাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, ভারী বর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে ঢলের পানি বেড়ে যাওয়ায় ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ হয়ে লোকালয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি। এ অবস্থা চলতে থাকলে ইউনিয়নের বিপুল বসতি দ্রুত প্লাবিত হয়ে পড়বে।
কক্সবাজার ব্যবসায়ী কল্যান সমিতির সভাপতি আমিনুল হক আমিন জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে হালকা ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ফলে শহরের পাহাড়ি এলাকার পানি নিচে নামতে গিয়ে প্লাবিত করছে বাজারঘাটাসহ নিম্নাঞ্চল। এতে দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ ঈদবাজার করতে আসা নারী-পুরুষদের।
ব্যবসায়ীদের মতে, পৌরসভার নালা গুলো স্থানে স্থানে অবৈধ দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক গতিতে পানি নামতে পারছে না। ফলে বাজার এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বাজার এলাকা প্লাবিত হওয়ার তথ্য স্বীকার করে বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ভরাট হয়ে যাওয়া নালা দ্রুত সংস্কারের। এরপরও দীর্ঘদিনের সমস্যা বলে সহসা সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জাফর আলম জানান, মাতামুহুরীতে ঢলের পানি বেড়ে গেলে পাউবোর ক্ষতিগ্রস্থ শহররক্ষা বাধ আবারো তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাাবনা রয়েছে। পানি বাড়লে পৌরসভার নামার চিরিংগা, কোচপাড়া, ভাঙ্গারমুখ, মাষ্টারপাড়া, বাশঁঘাট, চেয়ারম্যান পাড়া নিমজ্জিত হয়ে পড়বে।
ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম জানান, গত কয়েকদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় ঈদগাঁও নদীতে আবারো ঢল নামছে। সোমবারও বৃষ্টিপাত চলমান থাকায় ক্রমে বাড়ছে নদীর পানি। গত বারের বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত সম্ভাব না হওয়ায় অতি সহজে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে জেলার মিঠাপানির প্রধান নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।