জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন কাল : কাউন্সিল না হওয়ার আশংকায় তৃণমূলে হতাশা
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৬
৪৭৮
বার পড়া হয়েছে
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। দীর্ঘ ১৩ বছর পর ক্ষমতাসীন দলের সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হলেও কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা না দিয়ে সম্মেলন ও কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করার খবরটি তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে মহা আনন্দের বিষয়।
জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলররা মনে করছেন- সম্মেলন ও কাউন্সিল হওয়ার খবরে তাদের কদর বেড়েছে বহুগুণ। শীর্ষ নেতারা তাদের তেমন খবর নিতেন না। আর এখন ভোটের জন্য ঘরে ঘরে যাচ্ছেন।
যদিও শেষ মুহুর্তে এসে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও কাউন্সিল না হওয়ার আশংকায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান- কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করাটা দলের জন্য চ্যালেঞ্জ। আর আওয়ামীলীগকে এই কঠিন চ্যালেঞ্জটি মোকাবেলা করতে হবে।
সূত্রমতে- আগামীকাল জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।
কক্সবাজার শহীদ দৌলত ময়দানে সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিয়াম ল্যাবরেটরী ভবন কাউন্সিল করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। অনুষ্ঠিত সম্মেলন উদ্বোধন করবেন- আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সূত্রের খবর- কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতা ৩১ জানুয়ারী সকাল ১২ টায় কক্সবাজার আসার ও বিকাল ৪টায় কক্সবাজার থেকে ঢাকা ফেরার জন্য ফ্লাইটের টিকিট নিশ্চিত করেছেন।
জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়- কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের ইচ্ছে নেই জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল করার। সম্মেলন শেষ করে প্রার্থীদের নাম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে জেলা আওয়ামীলীগের নতুন নেতৃত্ব গঠন করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তারা।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে জেলা আওয়ামীলীগ নেতারা দেখা করতে গেলে সেখানে নেত্রী বলেন- ৩১ তারিখেই যেনো জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল হয়।
আর প্রধামন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেকই আগামীকাল জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর তালিকা চূড়ান্ত করতে গেলে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সভায় তুমুল হট্টগোল ও বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে কার্যকরী কমিটির সভা স্থগিত করে সর্বশেষ গতকাল ২৯ জানুয়ারী কার্যকরী কমিটির সর্বশেষ সভা ঢাকা হয়।
শেষ পর্যন্ত গতকাল জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সভায় কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর তালিকা চূড়ান্ত করা হলেও মহেশখালী উপজেলারটি বাকি রয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের আওতাধীন সাংগঠনিক ইউনিট হলো- ১১টি। এর মধ্যে মহেশখালী উপজেলা ছাড়া বাকি সব ইউনিটের কাউন্সিলর তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের নতুন নেতৃত্ব গঠনকে কেন্দ্র করে সভাপতি পদে ছয় জনের নাম বেশ জোরেশোরে আলোচনায় এসেছে।
এদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষ ও একজন নারী। এঁরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. একে আহমদ হোসেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, বর্তমান যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা পরিষদের প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর স্ত্রী ও জেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক এবং চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলম।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছে অনেকে। এরা হলেন, কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক চকরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম,কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. ফখরুল ইসলাম গুন্দু, জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য রাশেদুল ইসলাম ও রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল।
উল্লেখ্য- ২০০৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান এ কে এম মোজাম্মেল হক সভাপতি ও সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালের ২৭ মে এ কে এম মোজাম্মেল হক মারা গেলে ১ম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে ২য় সহ-সভাপতি এডভোকেট এ কে আহমদ হোসাইন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর সেই কমিটি আজও রয়েছে।