কক্সবাজার রিপোর্ট :
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি। ২৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করলেও এখনো চুড়ান্ত হয়নি কাউন্সিলর তালিকা ও নবগঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। জেলা আওয়ামী লীগের একাধীক সভা অনুষ্টিত হলেও এখনো সবকিছু গুছিয়ে উঠতে পারেনি জেলা আওয়মাী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দু’জনই প্রার্থী হলেও তারাই বিভিন্ন উপজেলা থেকে জমা দেওয়া কাউন্সিলর তালিকা কাটছাড় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা আওয়ামী লীগকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া সবকিছু ঠিক থাকলে আগামি ১৯ জানুয়ারী মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয় জেলা আওয়ামী লীগের গতকালের বৈঠকে।
কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর জানিয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপের বিকল্প নেই। বর্তমানে দলের সাংগঠনিক অবস্থা যে পর্যায়ে পৌছেছে এতে দলের সভানেত্রী হস্তক্ষেপই আমাদের কাম্য। ইতোমধ্যে দলের শীর্ষনেতারা যা করছেন এতে নেতাকর্মীরা হতাশ। উপজেলা এবং পৌরসভার বিভিন্ন কমিটি গঠিত হলেও এখনো কমিটিগুলো অনুমোদন দেয়নি। এ ছাড়াও কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদন হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দু’জনে ইচ্ছেমত কাউন্সিলর তালিকা কাটছাড় করছেন যা এখতিয়ার বহির্ভূত। তাই কেন্দ্রিয় কমিটির বিগত বৈঠকে সভানেত্রী যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঠিক সে ভাবেই হস্তক্ষেপ না করলে দলের সাংগঠনিক অবস্থা আরো নাজুক হয়ে পড়বে।
এদিকে আস্থাহীনতায় ভুগছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারা। ২৮ জানুয়ারী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় একজন আরেকজনকে কিছুতেই বিশ্বাস করছেন না। যার ফলে দফায় দফায় বৈঠক মুলতবি করলেও কোন সুরাহা হচ্ছে না। এক নেতা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে আরেক নেতা পরিস্থিতি জটিল করে তুলছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হয় তার কোন বাস্তবায়ন হয় না। সভার বাইরে আসলে সিদ্ধান্তের ঠিক বিপরীতটাই নেতারা প্রচার করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এর তারিখ ঘোষিত হওয়ায় এ প্রবণতা আরো বেড়েছে। প্রকাশ্যে তেমন দ্বন্দ দেখা না গেলেও গোপনে এক নেতা আরেক নেতার বিরুদ্ধে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দল পরিচালনা করলে কক্সবাজারে দলের সাংগঠনিক অবস্থা অনেক শক্তিশালী হত।
পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম জানিয়েছেন, গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যারা দলে জটিলতা সৃষ্টি করতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে ইচ্ছে করেই তা করছেন। দলের সভাপতির পদ শূন্য হলে কে দায়িত্ব পালন করবেন তা কারো অজানা নয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপিকে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন যথা সময়ে হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডঃ এ কে আহমদ হোসেন জানিয়েছেন, এখনো উপজেলার সব কমিটি ও কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদিত হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগের সভায় কাউন্সিলর তালিকা কাটছাড় হচ্ছে। ২৮ জানুয়ারী সম্মেলন করার পরিকল্পনা আছে, অন্যথায় সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন হবে।