গত ১৭ মার্চ কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে ‘হাইব্রীড’ আওয়ামীলীগ উল্লেখ করে এমপি বদিকে ছাত্রলীগের যেকোন অনুষ্ঠান থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সাধারণ সম্পাদকের সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এমপি বদিকে লাল কার্ড দেখিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়।
এরপর পরই ফেইসবুকে এমপি আবদুর রহমান বদিকে তুলোধুনো করে চলেছেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইসতিয়াক আহমেদ জয় এর ফেইসবুক ওয়ালে রুবাইসুর রহমান লিখেছেন-ছাত্রলীগ যাকে লাল কার্ড দেখায় তার কপালে শনির দশা আছে, সো বি কেয়ারফুল!
ফয়সাল আবদুল্লাহ লিখেছেন-ইয়াবা বদি আউট!
সাইুফুল্লাহ তুহিন লিখেছেন-সংগঠন বিমূখ হলে ও নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেই সে যত বড় হেঁড়ামওয়ালা এমপি বা মন্ত্রী হোক না কেন, সোজা লন্ডনের জাহাজে তুলে দেওয়া হবে।#শেখ হাসিনার ঘ্যাচাং বাহিনী
বিএসএল আজাদ লিখেছেন- হায়ার করা প্লেয়ারের চুক্তির মেয়াদ শেষ বুজি।
আবু ইউসুফ জয় লিখেছেন-ইয়াবা বদি টাইম শেষ।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল রাশেদের ফেইসবুক ওয়ালে মায়া ভাই নামের একজন লিখেছেন-ইয়াবা বদি আউট! জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি তার কমেন্টে এমপি বদিকে অশ্লীল গালিগালাজ করলেন। হুমায়ুন ইসলাম লিখেছেন-ইয়াবার রাজা। আয়ূব কুদি কক্স নামের একজন লিখেছেন- রাইট ১০০ভাগ। যদিও বাংলা রাজনীতি পচন্দ করিনা তারপরও বলব। টেকনাফের বদি একজন কুলাঙ্গার নেতা। যারজন্য পুরো লীগ, পুরো জেলা, পুরো দেশ সহ পুরো জাতি কলঙ্কিত।
শাহ ওমর কমেন্ট করেছেন-এমপি বদির মত দল ও সংগঠন বিচ্ছিন্ন সাংসদকে লাল কার্ড দেখানোর সাহসি উচ্চারণের জন্য মাননীয় জেনারেল আপনাকে ধন্যবাদ।
হাবিব আদনান কমেন্ট করেছেন-বদি সাহেব! বাঘের গর্জন শুনে যাও?
এদিকে গতকাল কক্সবাজার নিউজ এর একটি রিপোর্টে জেলা ছাত্রলীগের সাথে এমপি বদির দ্বন্দ্বের ভয়ঙ্কর তথ্য(!) পাওয়া গেছে বলে দাবী করা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগ ভবিষ্যতে এমপি বদিকে পুরো কক্সবাজার থেকে অবাঞ্ছিত করার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে সিবিএন এর প্রতিবেদক জানান।
উক্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় বলেছেন এমপি বদি আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে কোন রকম যোগাযোগ রক্ষা করেন না। দলীয় কর্মীরা অন্য দুই সাংসদকে কাছে পেলেও এমপি বদি থাকেন দূরে দূরে। আসন্ন স্থানীয় নির্বাচনে এমপি বদির বিতর্কিত ও রহস্যজনক ভূমিকা রয়েছে। টেকনাফের সাবরাং’য়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা করলেও এমপি বদির রহস্যজনক ভূমিকায় সেখানকার মানুষ আজ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। সাবরাং’য়ে এমপি বদি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইসমাঈল মেম্বারের পক্ষে গোপনে কাজ করছেন।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নে সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আলমের বিপক্ষে গিয়ে এমপি বদি শাহজাহানের পক্ষে কাজ করছেন। টেকনাফের হোয়াইক্যং এ সাবেক ছাত্রনেতা ফরিদুল আলম জুয়েলের বিপক্ষে গিয়ে এমপি বদি বিএনপি-জামাত সমর্থিত প্রার্থী ইয়াবা ও মানবপাচারে সংশ্লিষ্ট নুর আহম্মদ আনোয়ারীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
এছাড়াও টেকনাফে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কোনভাবেই কাজ করছেন না এমপি বদি এমনটা অভিযোগ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির।
তিনি আরও বলেন- যদি স্থানীয় নির্বাচনে টেকনাফে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীরা কোন কারণে হেরে যান তাহলে এমপি বদিকে পুরো কক্সবাজার থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ জানান- সরকারী দলের সাংসদ হয়েও আওয়ামীলীগের দলীয় কোন অনুষ্ঠানে বদি সাহেবের দেখা মিলে না। দলের অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে এমপি বদিকে দাওয়াত দেয়ার পরেও রহস্যজনক কারণে তিনি উপস্থিত হন না। আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে তাঁর নূন্যতম যোগাযোগ নেই উল্লেখ করে জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন- এমপি বদি হাইব্রীড আওয়ামীলীগ হিসেবে স্বীকৃত। দল ও নেতাকর্মীদের সাথে যেই সাংসদের সম্পর্ক নেই ছাত্রলীগের কোন অনুষ্ঠানে সেই সাংসদের উপস্থিত হওয়ার অধিকারও নেই।
তবে আওয়ামীলীগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র বলছে, জেলা ছাত্রলীগের সাথে এমপি আবদুর রহমান বদির এই আকস্মিক এক তরফা দ্বন্দ্ব সাময়িক। শীঘ্রই জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে সাংসদ আবদুর রহমান বদির সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এবং দু’পক্ষ হাসি মুখে ফটোসেশন করবে বলে সূত্র দাবী করেছে।