টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া গ্রামে বেগুন চাষ করে আশানুরুপ সফলতা পেয়েছেন কৃষক মোহাম্মদ ইসমাঈল প্রকাশ সোনা মিয়া। তিনি একজন সফল সবজী চাষী হিসেবে এলাকায় পরিচিতিও কুড়িয়েছেন।
তিনি মুলত একজন কৃষক। প্রতি বছর ধান, মরিচ, ডেঢ়শ, শিম, গুলআলু, করলাসহ বিভিন্ন জাতের তরকারির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছেন তিনি। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারি কৃষি অফিসারের সহযোগীতায় এসব সবজি ক্ষেত করে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছেন।
জানাগেছে, উপজেলার দমদমিয়া গ্রামের মৃত সোলেমানের পুত্র কৃষক মোহাম্মদ ইসমাঈল প্রকাশ সোনা মিয়া টেকনাফ উপজেলার উপ সহকারী কৃষি অফিসার সনজিতের পরামর্শে দক্ষিন হ্নীলা মৌজায় ১ একর জমিতে গত অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ‘মেটাল সিট গ্রীণবল’ নামক জাতের গোল বেগুনের চাষ করেন। বেগুন চাষে তাঁর উৎপাদন ব্যায় হয়েছে সর্ব সাকুল্যে ৬০ হাজার টাকা। পরিচর্যার জন্য রেখেছে মাসিক ৭ হাজার টাকায় একজন কর্মী। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বেগুন গাছে বেগুন ধরা শুরু করেছে এবং জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারির ৩য় সপ্তাহ পর্যন্ত ৪ বার বেগুন উত্তোলন করেছেন। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩০ মন করে বেগুন উঠাচ্ছেন কৃষক মোহাম্মদ ইসমাইল প্রকাশ সোনামিয়া। বর্তমানে প্রতি মন বেগুন ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি এযাবত প্রায় ২০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন এবং আরো ২ লক্ষাধিক টাকার বেগুন বিক্রি করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। কিন্তু বর্তমানে বাজারে বেগুনের ন্যায্য মুল্য পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন কৃষক ইসমাইল ওরফে সোনা মিয়া।
শুধু বেগুনের ক্ষেত করে তিনি বসে থাকেননি। পাশাপাশি আরও ১ একর জমিতে দেশীয় মরিচ, লাউ, টমেটো, আলু, শিম ও করলার ক্ষেতও করেছেন। সেখানেও পেয়েছে সফলতা। স্থানীয়দের সবজি বা কাঁচা তরকারির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করে সংসার খরচ চালাতে সক্ষম হচ্ছেন।
অপরদিকে গত বর্ষা মৌসুমে প্রায় ২ একর জমিতে ধান চাষেও সফলতা পেয়েছেন কৃষক ইসমাঈল ওরফে সোনা মিয়া। তিনি ওই ২ একর জমি থেকে বাড়ীর জন্য এক বছরের ধান মজুদ করে রেখেছেন এবং বিক্রিও করেছেন। তাকে আর দূমোটো খাদ্যের জন্য চিন্তা করতে হয়না।
উপজেলা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা পরামর্শক্রমে চলতি শুষ্ক মৌসুমে ‘এ-রাইস তেজগুল্ড’ জাতের ধানের বীজ ক্রয় করে ফের ৪০ শতক জমিতে ধানের চারা রোপন করেছেন। ধানের বীজগুলো উখিয়া ভূট্টো এজেন্টের বায়ার লিমিটেডের বলে ওই কৃষক জানান। বর্তমানে ওই জমিতে সবুজে ভরপুর। তিনি এই ৪০ শতক জমি থেকে প্রায় ৭৫ মন ধান পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে বেগুন, টমেটো, শিম, লাউসহ বিভিন্ন জাতের ক্ষেত খামার করে বিক্রির টাকা দিয়ে কৃষক ইসমাঈল প্রকাশ সোনামিয়া তার সংসারের ব্যয়ভার বহন করেও অতি সহজে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তার এক ছেলে চট্টগ্রামের একটি কলেজে লেখাপড়া করছেন। আরও ৩ ছেলে মেয়ে হ্নীলা আলফালাহ একাডেমীতে লেখা পড়া করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা উপসহকারী কৃষি অফিসার সনজিত কুমার দাস জানান, বেগুন একটি লাভজনক ফসল। সঠিক জাত ও উপযুক্ত পরিচর্চা এবং কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ চাওয়ার কারণে কৃষক মোহাম্মদ ইসমাঈল ওরফে সোনামিয়া বেগুন চাষে সফলতা পেয়েছেন। এভাবে তার মত আরও কৃষক সবজি চাষে এগিয়ে আসলে উপজেলাবাসীর চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।